আজ খুব ভোরে ঘুমটা ভাঙ্গল। বড়ো অস্থির অস্থির লাগছিল।
কখনও কখনও মানুষ নিজেকে সহ্য করতে পারে না- তাকাতে পারে না নিজের চোখের দিকে।
আমার আস্ত একটা বই বের হলো অথচ আমি ১ বছর যাদের সঙ্গে কাটিয়েছি, তাদের একটা লেখা ছাপা হবে না! নিজেকে বড়ো অপরাধী মনে হচ্ছিল। মায়া বড়ো বাজে জিনিস, কাঠের টেবিলে বসে দীর্ঘ সময কাজ করলে সেই টেবিলটার প্রতি মায়া পড়ে যায়। ১০০জন ব্লগারের পছন্দসই লেখার একটা বই বের করতে পারলে আমার চেয়ে সুখি কেউ হতো না।
অন্যরা চেষ্টা করেছিলেন, ব্লগারদের নিয়ে বই বের করা হয়েছিল কিন্তু ভঙ্গিটা আমার পছন্দ হয়নি। কাহিনীর ভেতর গল্প চলে এসেছিল, নাকি রাজনীতির ভেতর পলিটিক্স ঢুকে পড়েছিল সে এক গবেষণার বিষয়। আমার মনে আছে ওই সাইটেই ওইসব নিয়ে আমি একটা কঠিন পোস্ট দিয়েছিলাম।
যাই হোক, আমি নিশ্চিত, আমার বইয়ের প্রকাশককে বলে লাভ হবে না। বেচারার দোষ দেই কিভাবে? আমার মতো অখ্যাত লেখকের কয়টাই বা বই বিক্রি হয়? প্রকাশকের বিমর্ষ মুখ দেখে দেখে আমি ক্লান্ত। জোর করে একটা দাবী করব সেই শক্তি আমার কই!
আমি যা কখনও করিনি, আজ করলাম, লজ্জার মাথা খেয়ে। কাতর হয়ে তাঁকে বললাম, ১টা বই বের করে দিতে পারেন?
তিনি বললেন, আপনার কি মাথা খারাপ! আপনি জানেন আজ কতো তারিখ?
আমি বললাম, জানি। ১৯ ফেব্রুয়ারি।
মেলার আছে আর ক-দিন? এটা ২৮ শে মাস। কীসব পাগলামীর কথা বলেন...!
তিনি সাফ সাফ বলে দিলেন, আপনার বই হলে আমি ভেবে দেখতে পারি, কিন্ত এটা সম্ভব না।
আমি নাছোড়বান্দা, আপনি একটু ভেবে দেখেন।
তিনি গররাজী হলেন, এই শর্তে, ১০০জন ব্লগারের লেখা নিয়ে বই বের হলে প্রত্যেকে কি ৫টা করে বই কিনবে?
আমি থমকে গেলাম, এটা কি করে বলি!
তিনি বললেন, তাইলে আপনি কি ক্ষতির দায়িত্ব নেবেন?
এই মুহূর্তে এই বিপুল দায়িত্ব নেয়ার অবস্থা আমার নাই। শালার মস্তিষ্ক কি সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। আমি দুম করে বললাম, নেব।
তিনি বললেন, আপনার ম্যাটার কি রেডি আছে?
আমি আবারও থমকালাম, না। কিন্ত এরা লিংক দিলে ওয়ার্ডে কপি করে কোয়ের্কে কম্পোজ, পেজ মেকআপ করে দেব। রাতদিন কাজ করলে ২ দিনে আমি এটা করতে পারব।
তিনি বললেন, উহুঁ, ব্যাপারটা এত সোজা না। একেকজন একেক ভাষারীতি ব্যবহার করেছেন, অজস্র বানান ভুল থাকবে। আপনাকে এডিট করার প্রয়োজ হবে। ভেবে দেখেন।
আমি অটল, আমি পারবো।
তিনি হাল ছেড়ে দেয়ার ভঙ্গিতে বললেন, বেশ, এখন বাজে দুপুর ১টা। আপনার হাতে ২ ঘন্টা সময় আছে। আপনাকে প্রচ্ছদের নামটা আমাকে কনফার্ম করতে হবে। কারণ, ৩ টার সময় আমি আমার বাকি বইয়ের প্রচ্ছদ ছাপাতে পাঠাবো। পরে শুধু আপনার এই বইয়ের প্রচ্ছদ আলাদাভাবে পাঠানো সম্ভব না। আপনি কি বইয়ের প্রচ্ছদের নাম ঠিক করেছেন?
একটা নাম আমার মাথায় ছিল: ভার্চুয়াল দেশমা। সঙ্গতিপূর্ণ একটা স্কেচও করা আছে। কিন্ত এই নাম সবাই চাইবে কিনা এটাও তো জানি না। ব্লগে এখনও কিছুই শেয়ার করা হয়নি। প্রকাশকের সঙ্গে কথা না বলে শেয়ার করি কি করে?
প্রকাশক এবার বললেন, আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, আপনি ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখেন। আমার ধারণা, আপনি খুব বড়ো ধরনের সমস্যায় পড়তে যাচ্ছেন। দেদারসে গালি খাবেন, এতে আমার সন্দেহ নাই। অনেকেই আপনার এই উদ্যোগকে ভাল ভাবে নেবে না। ভাল হয়, আপনি আপনার সুহৃদদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। আর আমার পরামর্শ, আপনার মাথা এখন গরম, ভাত খেয়ে লম্বা একটা ঘুম দেন। মাথা থেকে এটা ঝেড়ে ফেলেন।
তারপরও আমি বলি, নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে লেখা ছাপালে কেন সমস্যা হবে!
ব্লগের ক-জনের সঙ্গে কথা বললাম। আজ আর তাদের নাম বলে বিব্রত করি না কিন্তু হায়রে মিটিং, হায়রে দলবাজি! মিটিং কল দিতে হবে, ওমুককে ডাকা যাবে তমুককে ডাকা যাবে না, এইসব!
অনেকে কঠিন নিষেধও করলেন। তুমি এই সময়ে সব কিছু মিলিয়ে ম্যানেজ করতে পারবে না। খামাখা একটা নাটক হবে ইত্যাদি, ইত্যাদি। তখন কেউ খানিকটা সাহস দিল না, পাশে এসে দাঁড়ালো না।
আমি, একজন হেরে যাওয়া মানুষের মতো বহু দিন পর দুপুরে ঘুম দিলাম। কিন্ত একজন দুর্বল মানুষের দুর্বল মস্তিষ্ক এই হেরে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছে না। আমার আবেগটা একটা স্বপ্ন হয়েই রইল...। তবুও ক্ষীণ আশা, কেউ-না-কেউ এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করে দেখাবে।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Friday, June 29, 2007
একজন দুর্বল মানুষের দুর্বল মস্তিষ্ক!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment