১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করার অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর আমিরসহ শীর্ষস্থানীয় চার নেতাকে আগামী ২ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এটা অভূতপূর্ব কিন্তু আমার কাছে স্বাভাবিক একটা ঘটনা। কারণ একজন অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে, হবেই। এটা সত্য, এটা আমাদের ব্যর্থতা, আমরা আইনকে তার গতিতে চলতে দেইনি। আইনকে তার গতিতে চলতে না দেয়ার অর্থ হচ্ছে, অসংখ্য অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়ার সুযোগ করে দেয়া। বিষবৃক্ষের চারাটাকে মহীরুহ হওয়ার জন্য সযতনে লালন করা। এর পরিণাম যখন আমরা টের পাই তখন অনেক দেরি হয়ে যায়!
আমি পূর্বের লেখায় লিখেছিলাম, কে কখন অপরাধ করেছে এটা আমার কাছে জরুরি না, জরুরি হচ্ছে, এদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। এতে ৩৯ বছর গেল, না ৩৯০ বছর; তাতে কী আসে যায়! সত্যটা তো আর মিথ্যা হয়ে যায় না।
অন্ধ, বৃদ্ধ গ্যালালিওকে চার্চ জোর করে ফ্লোরেন্স থেকে রোমে নিয়ে যায়, হাঁটু ভেঙে জোড় হাতে সবার সামনে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছিল যে, তিনি যা বলেছেন ভুল, বাইবেল ঠিক- পৃথিবী স্থির। সেটা ১৬৩৩ সালের কথা। এর পূর্বে ব্রুনোকে পুড়িয়ে মারা হয়।
১৯৯২ সালে গ্যালিলিওর মৃত্যুর ৩৫০ বছর পর এবং ব্রুনো মৃত্যুর ৩৯২ বছর পর চার্চ জনসমক্ষে স্বীকার করে গ্যালিলিও এবং ব্রুনোর প্রতি অন্যায় করা হয়েছিল।
এতে গ্যালিলিও, ব্রুনোর কী লাভ এই তর্ক করা বাতুলতা মাত্র!
এখন ১৯৭১ সালে করা অন্যায়ের বিচার প্রসঙ্গে যথারীতি মার্কিন দূতাবাস তার লম্বা নাক গলিয়ে দিয়েছে। এদের নাক এতো লম্বা, এটা যে কোন জায়গায় অনায়াসে এঁটে যায়। মার্কিন দূতাবাসের পোষ্য যুক্তরাজ্যও তার প্রভুর সঙ্গে সুর মিলিয়েছে।
এরা বলছে মানবতার কথা! কোন মানবতা? এদের মানবতার সংজ্ঞা কি? এই গ্রহে এমন কোন স্থান নাই যেখানে মানবতা লঙ্ঘন হওয়ার পেছনে কোন-না-কোন প্রকারে যুক্তরাষ্ট্রের হাত নাই। এই একটা নমুনাই কি যথেষ্ঠ না [১]?
সেমিনার করে এরা আমাদেরকে শেখাবে মানবতা কাকে বলে? এদের সঙ্গে সুর মেলাবে আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী-লেখক। একজন গুণদাদার শিরদাঁড়া নরোম হয়ে যায় কারণ তাঁকে মার্কিন মুল্লুক সনদ দেবে অনেক বড়ো কবি হওয়ার [২]।
এ আরেক বিচিত্র, এই গ্রহের সাহিত্য বলতে বোঝায় মার্কিন সাহিত্য, সিনেমা বলতে হলিউড মুভি। সাহিত্যে অবশ্য যুক্তরাজ্য খানিকটা ছায়া ফেলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, এই হর্স-মাউথরা, এরা সর্বদা ঘোড়ার মত হ্রেষা রব তুলেই যায়। ওহে ইয়াংকি, আমাদের দূতাবাস কি তোমাদের কখনও বলেছে, 'তোমরা মানুষ হও, সভ্য হও'।
আর যুক্তরাজ্য? তোমরা তো কেবল 'অমানুষই না, লুটেরাও। নইলে কী চমৎকার করে না তোমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে লুট করে নিয়ে যাওয়া কোহিনূর সম্বন্ধে এমনটা বলেন [৩]! তোমাদের কি আমাদের দূতাবাস বলেছে, 'লুটেরা হওয়া ভাল না, ভাল হয়ে যাও'।
এরা নিজেরা অ্যাপাচি হেলিক্পটার থেকে পাখির মত গুলি করে নিরীহ মানুষ মারবে [৪]। ওদের বিচার? ওই খুনিদের কেশ স্পর্শ করা দূরের কথা গোপন কেশও স্পর্শ করবে না; আবার আমাদের দেশে এসে মানবতার কথা বলে বলে চোখের জলে আন্ডার গার্মেন্টস ভিজিয়ে ফেলবে।
আমাদের দুর্ভাগ্য, এই সব লম্বা অসভ্য নাকওয়ালাদের আমরাই সুযোগ করে দেই। নিজেদের ঝগড়ায় বালক-বালিকার মত গাল ফুলিয়ে এদের কাছে বিচার দেই। মৌলভিদের কাছ থেকে দোয়া না-নিয়ে যেমন আমরা কোন কাজে হাত দেই না তেমনি এদের ব্লেসিং ব্যতীত আমাদের চলেই না।
এই হর্স-মাউথরা ঘোড়ার মত চিঁ হিঁ হিঁ করবে না তো কে করবে?
সহায়ক লিংক:
১. সভ্যতা: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_493.html
২. গুণ দাদা: http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_7854.html
৩. কোহিনূর হিরা: http://tinyurl.com/2vndkkt
৪. অ্যাপাচি হেলিকপ্টার: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_15.html
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Monday, August 2, 2010
হর্স-মাউথ এবং কুমিরের চোখে জল
বিভাগ
১৯৭১: প্রসব বেদনা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
2 comments:
ফেসবুকে আবার গ্রুপও খোলা হয়েছে দ্রুত এদের মুক্তি দেয়ার উদ্দেশে জনমত সংগ্রহের জন্যে; আমার কাছে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ এসেছিল। :)
কোনটা মুখ আর কোনটা মুখোশ চেনার এও এক পন্থা।
আমার দুর্ভাগ্য, আমাকে কেউ আমন্ত্রণ (!) পাঠায়নি :( @সুব্রত
Post a Comment