পুলিশের প্রথম বক্তব্য ছিল এমন, মেজর (অবঃ) সিনহা নাকি অস্ত্র বের করেছিলেন যে কারণে পুলিশকে গুলি চালাতে হয়েছিল। সিনহা নামের যে মানুষটা ৫ সেকেন্ডে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ৮টা গুলি করতে পারেন, তিনি কেবল একজন এসএসএফই ছিলেন না, একজন কমান্ডো, একজন শার্প শুটার!
যাই হোক, পুলিশের এই সব কেরামতির সঙ্গে আমরা পরিচিত। পরে ইয়াবা, মদ উদ্ধার হবে এতে অবাক হওয়াটাই বোকামী। কেবল একটাই আফসোস, এই করোনাকালে [২] পুলিশের যে অসাধারণ ত্যাগ এটা ভেসে গেল বানের জলে।
সিনহার পরিবারের এই সব কল্পকাহিনী মানার কোনই কারণ ছিল না:
পুলিশ যাদের সাক্ষি করেছে তারা এই বিষয়ে ওয়াকিবহালই না:
তারপর পাওয়া গেল প্রদীপ, লিয়াকতের এসপি মহোদয়ের কাছে করা ফোনালাপ। একটা বিষয় একটু মনে রাখতে হবে কারণ পরে এই নিয়ে খানিকটা আলোচনার অবকাশ আছে।
তারপর পাওয়া গেল প্রদীপ, লিয়াকতের এসপি মহোদয়ের কাছে করা ফোনালাপ। একটা বিষয় একটু মনে রাখতে হবে কারণ পরে এই নিয়ে খানিকটা আলোচনার অবকাশ আছে।
যে বিষয়টা! ওসি প্রদীপ এসপিকে বলছে এমন: গাড়ি থেকে (সিনহা) পিস্তল দিয়া গুলি করছে। আমিও (প্রদীপ) বলছি তাড়াতাড়ি গুলি কর (লিয়াকতকে।)
এই ফোনালাপ একটু মনোযোগ দিয়ে শুনলে, প্রদীপের কথা ব্যাখ্যা করলে যেটা মনে-মনে উঠে আসবে। সিনহা পিস্তল দিয়ে গুলি করেছেন লিয়াকতকে। তখন লিয়াকত সিনহাকে বলেছে, রাখো, আমি বসের সঙ্গে একটু কথা বলে নেই; তার কাছ থেকে শুনেনি, তোমাকে গুলি করব কি করব না। 'ঠায়রো'-অপেক্ষা করো-হোল্ড অন-লাইনে থাকো।এরপর লিয়াকত ফোন করেছে ওসি প্রদীপকে, বস, আমাকে তো একজন গুলি করেছে কি করা যায়? ওসি প্রদীপ ফোনে তখন বলেছে, আরে, তোমার কী মাথায় দুষ। ওই লোক তোমাকে গুলি করেছে! তুমি মরলে তো আর বাঁচবে না। শ্যূট হিম-গুলি করো। এরপর লিয়াকত গুলি চালিয়েছে। এবং সিনহা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। বড়ই সহজ-সরল একটা রেখা!
প্রদীপের সঙ্গে ফোনে অন্য একজনের কথোপকথন। তখন ওসি প্রদীপের কথা শুনে মনে হচ্ছে তিনি সুস্থ ছিলেন না:
সিনহাকে গুলি করা হলো ৪টা কিন্তু গায়ে গুলি পাওয়া গেল ৬টা। এটা কীভাবে সম্ভব? প্রত্যক্ষদর্শী তার বর্ণনায় যেটা বলছেন পরে গুলি করেছেন ওসি প্রদীপ। কেবল গুলি করেই ক্ষান্ত হননি সিনহার পড়ে-থাকা দেহে লাথিও মেরেছেন। এখানে খানিকটা বোঝার বিষয় আছে। যখন কেউ কাউকে মেরে ফেলে সে এক হিসাব কিন্তু যখন কেউ মৃতদেহের চোখ উপড়ে ফেলে তখন বুঝতে হবে এখানে কোন-এক আক্রোশ কাজ করছে! ওই চোখ এমন কিছু দেখেছে যা হত্যাকারীর একেবারেই ব্যক্তিগত কোন-সস্পর্শকাতর বিষয় জড়িত।
তেমনি এটা যদি সত্য হয়ে থাকে, প্রদীপের গুলি করাটা এক বিষয় কিন্তু সিনহার দেহে লাথি মারাটা আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ!
প্রদীপ পরামর্শ করেন কেমন করে মামলা সাজানো যায়:
যেখানে এই দেশের দায়িত্বশীল কেউ স্বীকার করছেন না যে ক্রসফায়ার বলে দেশে 'কিছুমিছু' আছে।
তেমনি এটা যদি সত্য হয়ে থাকে, প্রদীপের গুলি করাটা এক বিষয় কিন্তু সিনহার দেহে লাথি মারাটা আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ!
প্রদীপ পরামর্শ করেন কেমন করে মামলা সাজানো যায়:
যেখানে এই দেশের দায়িত্বশীল কেউ স্বীকার করছেন না যে ক্রসফায়ার বলে দেশে 'কিছুমিছু' আছে।
ক্রসফায়ার হচ্ছে এনজিও-এর আবিষ্কার। আমিও বলেছিলুম এক লেখায় ক্রসফায়ার বাস্তবে থাকার কোন যো নাই [১]। তাই যেটা আমি পূর্বের কথোপকথনের সময়কার যে বিষয়টা মনে রাখার জন্য বলেছিলাম।
এমনিতে এই দেশে রেকটাম-গ্রে মেটার জড়াজড়ি হয়ে থাকা কিছু লোক আছে। এরা লাখ-লাখ ফলোয়ার নিয়ে 'ওই মুখ' দিয়ে যা খুশি বকে যায়:
কী আজব এক দেশ! সিনহার সঙ্গে যারা ছিলেন শিপ্রা, সিফাত, এদের মুক্তির জন্য রাস্তায় নেমে আসতে হয়। পুলিশ আবার এদের লাঠিপেটাও করে! এক পুলিশ অন্য পুলিশকে চড়ও মারে, প্রকাশ্যে! আর কী ভাষা, তাও প্রকাশ্যে!
যাই হোক, শিরোনামে প্রদীপকে কেন বেচারা বললাম এটার একটু ব্যাখ্যা দেই। রাষ্ট্রের সম্মানিত এই মানুষটা:
বদি ভাইয়ার সঙ্গে:
২০১৭ সালে একজন লবণ ব্যবসায়ীকে মেরে ফেলার পর এই প্রদীপের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
হাইকোর্ট এফআইআর দাখিল করার নির্দেশও দেন। কিন্তু সাবেক আইজিপির অপত্যস্নেহে প্রদীপ বেঁচে যান।
যারা মরে গেলেন তাঁরা 'একপ্রকারে' বেঁচে গেলেন (আমাদের মত নপুংসকদের মুখ দেখতে হল না বলে) কিন্তু যারা বেঁচে আছেন তাদের পরিবারের কী অবস্থা? প্রদীপের বিরুদ্ধে কেবল লেখালেখি করার অপরাধে একজন সাংবাদিকের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে একটু শোনা যাক:
একজন সাংবাদিক এবং তার পরিবারের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে এই দেশে কিলবিল করতে থাকা সাংবাদিক মহোদয়দের বিষয়টা জানা ছিল না এটা যেমন হাস্যকর তেমনি এই দেশের তাবৎ গোয়েন্দা সংস্থা বা রাজনীতিবিদদের ওসি প্রদীপের বছরের-পর-বছর ধরে খুন-খারাবি জানা ছিল না এ আরও হাস্যকর। যে ক্ষোভটা উঠে এসেছে দুঁদে সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলামের লেখায়:
রাষ্ট্র স্বীকার করছে না ক্রসফায়ার বলে কিছু আছে অথচ ওসি প্রদীপ কী অমায়িক, সত্যবাদী নমস্য একজন মানুষ তিনি নিজেই এটা স্বীকার করছেন অথচ রাষ্ট্র এই ভদ্র-সত্যবাদি মানুষটার কথা মানতেই চাইছে না। নমুনা:
হাইকোর্ট এফআইআর দাখিল করার নির্দেশও দেন। কিন্তু সাবেক আইজিপির অপত্যস্নেহে প্রদীপ বেঁচে যান।
যারা মরে গেলেন তাঁরা 'একপ্রকারে' বেঁচে গেলেন (আমাদের মত নপুংসকদের মুখ দেখতে হল না বলে) কিন্তু যারা বেঁচে আছেন তাদের পরিবারের কী অবস্থা? প্রদীপের বিরুদ্ধে কেবল লেখালেখি করার অপরাধে একজন সাংবাদিকের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে একটু শোনা যাক:
রাষ্ট্র স্বীকার করছে না ক্রসফায়ার বলে কিছু আছে অথচ ওসি প্রদীপ কী অমায়িক, সত্যবাদী নমস্য একজন মানুষ তিনি নিজেই এটা স্বীকার করছেন অথচ রাষ্ট্র এই ভদ্র-সত্যবাদি মানুষটার কথা মানতেই চাইছে না। নমুনা:
বা এটা:
সিনহার পূর্বে তিনি শত-হাজার-লক্ষ মানুষ, রাষ্ট্রের সামনে যেটা বুক ঠুকে বলে এসেছেন ঠিক ওই কাজটার জন্যই এখন তার সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে এ অন্যায়, ভারী অন্যায়! আহা বেচারা...!
সহায়ক সূত্র:
১. ক্রসফায়ার...: https://www.ali-mahmed.com/2008/07/blog-post_29.html
২. করোনাকাল: https://www.ali-mahmed.com/2020/04/blog-post_10.html
...
আপডেট:
১২.০০৮২০
ভাগ্যিস, ভারত ছিল নইলে আমরা এটা জানতেই পারতুম না এটা! ভারতের দয়ার শরীর আমাদের দেশের লোকজন হারিয়ে গেলেও ভারত খুঁজে দেয়। রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, যে-কেউ ঘুমিয়ে-ঘুমিয়ে কেমন করে যেন ভারত চলে যায়। বেচারা ভারত পরে খুঁজে-খুঁজে আমাদের কাছে পৌছে দেয়।
এ আরেক কাহন! লিয়াকত স্যার কারাগারে কিন্তু স্যারের এফবি একাউন্ট আপডেট হচ্ছে। কিছু কন্টেন্ট উধাও হয়ে গেছে।
এই যে আমাদের লিয়াকত স্যার তিনি কেবল গুলি-গুলি খেলাই খেলেন না তিনি জ্যোৎস্নাতে 'ছিনান'-ও করেন।
লিয়াকত স্যারের টাইমলাইন থেকে এটা উদ্ধার হয়েছে। এখানে লিয়াকত স্যারকে 'মহামান্য' বলে সম্বোধন করা হচ্ছে। আহারে, প্রেসিডেন্টের জন্য আর কী সম্বোধন বাকী রইল!
মেজর (অবঃ) সিনহার মা তাঁর এক সাক্ষাৎকারে বলছিলেন তিনি তাঁর সন্তানের গাড়ি চালনা নিয়ে ভয়ে-ভয়ে থাকতেন কারণ সিনহা গাড়ি ওভার স্পিডে চালাতেন। এর খানিকটা নমুনা:
*ভুল স্বীকার এবং দুঃখ প্রকাশ:
লেখার শুরুতে আমি লিখেছিলাম, 'পেটলা-এক এস, আই' এটার অর্থ ছিল পুলিশকে আমরা সচরাচর যেমনটা দেখি চাকুরিতে কিছুদিন অতিবাহিত করার পরও পেট-টেট বের হয়ে যায়, ট্রেনিংয়ে ভাটা পড়ে...। নির্ভরযোগ্য এক সূত্র থেকে জানা গেছে লিয়াকত আলী নাকি 'সোয়াত'-এ কাজ করেছে। তারও পাঁচ সেকেন্ডে ৪টা গুলি ছোঁড়ার রেকর্ড ছিল!
**Mrs Nasima Akhter, Mother of Maj(Retd) Sinha M R Khan after the burial of his son at Military Grave yard.
আপডেট:
১২.০০৮২০
ভাগ্যিস, ভারত ছিল নইলে আমরা এটা জানতেই পারতুম না এটা! ভারতের দয়ার শরীর আমাদের দেশের লোকজন হারিয়ে গেলেও ভারত খুঁজে দেয়। রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, যে-কেউ ঘুমিয়ে-ঘুমিয়ে কেমন করে যেন ভারত চলে যায়। বেচারা ভারত পরে খুঁজে-খুঁজে আমাদের কাছে পৌছে দেয়।
এ আরেক কাহন! লিয়াকত স্যার কারাগারে কিন্তু স্যারের এফবি একাউন্ট আপডেট হচ্ছে। কিছু কন্টেন্ট উধাও হয়ে গেছে।
এই যে আমাদের লিয়াকত স্যার তিনি কেবল গুলি-গুলি খেলাই খেলেন না তিনি জ্যোৎস্নাতে 'ছিনান'-ও করেন।
লিয়াকত স্যারের টাইমলাইন থেকে এটা উদ্ধার হয়েছে। এখানে লিয়াকত স্যারকে 'মহামান্য' বলে সম্বোধন করা হচ্ছে। আহারে, প্রেসিডেন্টের জন্য আর কী সম্বোধন বাকী রইল!
মেজর (অবঃ) সিনহার মা তাঁর এক সাক্ষাৎকারে বলছিলেন তিনি তাঁর সন্তানের গাড়ি চালনা নিয়ে ভয়ে-ভয়ে থাকতেন কারণ সিনহা গাড়ি ওভার স্পিডে চালাতেন। এর খানিকটা নমুনা:
লেখার শুরুতে আমি লিখেছিলাম, 'পেটলা-এক এস, আই' এটার অর্থ ছিল পুলিশকে আমরা সচরাচর যেমনটা দেখি চাকুরিতে কিছুদিন অতিবাহিত করার পরও পেট-টেট বের হয়ে যায়, ট্রেনিংয়ে ভাটা পড়ে...। নির্ভরযোগ্য এক সূত্র থেকে জানা গেছে লিয়াকত আলী নাকি 'সোয়াত'-এ কাজ করেছে। তারও পাঁচ সেকেন্ডে ৪টা গুলি ছোঁড়ার রেকর্ড ছিল!
**Mrs Nasima Akhter, Mother of Maj(Retd) Sinha M R Khan after the burial of his son at Military Grave yard.
"My son was a hero, he died a heroic death, he was not a coward, he is a national hero. My son was a great motivator, all of our relatives, his friends used to get motivated by him. He was a lovely and ever smiling boy who used to make people laugh and make people happy. He was always dedicated to make other people happy.
He had been ensuring my comfort without even asking me. He used to make sure that I am comfortable wherever his posting was. He used to help me in every household activities. He used to make everything ready and used to surprise me always. He decorated every corner of my house by his own hand
. When his father died our house was a two storied building. But when he was posted to SSF (only tenure he was posted to Dhaka out of his 16 years career) he applied for House Building loan and completed our house to a four storied building with a lot of hardship. He used to supervise the construction works even at night as most of the time he couldn't come to our house due to his very busy and tight schedule of duties in SSF.
I never restrict my son against his will or desire. I let him do whatever he wanted to do. Because he could convince me whatever he did. He never did anything without convincing me. He used to ask me to allow him whatever makes him feel good. I always let him do whichever he felt better and comfortable for him. He was a son of a Freedom Fighter. He loved his country more than himself.
My son was a strong kinda personality. He liked the sea, he wanted to pass time reading books beside the seabeach. He was fond of adventure since his childhood. He had a desire to have a world tour, that's why he retired voluntarily from Bangladesh Army. I didn't restrict him. He had a wish to go to the Himalaya, he loved hiking, wanted to go to Japan with a bicycle ride. After his retirement he was getting ready to fulfill his desire.
In the meantime Covid 19 outbreak was there. After a few days of Nation wide lockdown, he told me that as he had to go outside every now and then, it's really risky for me as I am aged. Then he told me that he will go to Rajshahi and stay there for few days as one his friends mother(teacher of Rajshahi University) established a huge library. As he used to read lot of books since his childhood. So I allowed him and told him to go there and study. He was there for about four months and getting ready and taking preparation for his next world tour.
He was fond of traveling. When he went for the UN Mission, he didn't come to BD for leave. He went to Europe, bought a car and spent his two months leave and drove thousands of miles. I felt good because he could fulfill one of his desires. I allowed him.
After his retirement he used to hang my mosquito net every night, he used to organize and separate all my medicines accordingly so that i don't get confused. Whenever he used to go out of the house, he used to carry the house keys, never disturbed me.
After coming back from Rajshahi he spent few days with me. Then again told me about the preparation of documentary film and for that he needs to stay in coxsbazar for about a month. I permitted him. As he didn't get married, I didn't even put restrictions on his liberty. His birthday was 26 July. I send a box of chocolates to his hotel address through online. He told me to go to coxsbazar to spend the Eid ul Azha with him as he needed few more days to complete the documentary. But due to illness I couldn't go.
On 31 July at around 2300 hrs I called him but no one was picking the phone. At last the police called me and gave me the shocking news of Adnan's(Nick name of Maj Sinha) death. My son is 'SHAHEED'. The blood of a hero and tears of a mother can't go in vain. May Allah Grant him Jannah."
...
এন্ড অভ দ্য ডে:
এই খুনের ঘটনা ঘটার সঙ্গে-সঙ্গে ঘটনাস্থলে আমাদের আইজি মহোদয় এবং সেনাপ্রধান মহোদয় ছুটে গিয়েছিলেন। আশা করছি এর একটা সুরাহা হবে:
No comments:
Post a Comment