লেখক: Shawkat Ali
"যন্ত্র আমাদের অনেক কাজ আজকাল সহজ করে দিচ্ছে। এখন আর কষ্ট করে দিন তারিখ মনে রাখা লাগে না। ফেসবুক আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে আজ তোমার জন্মদিন, দিনটা তুমি অন্যরকম ভাবে পালন কর। আর কিছু না পার তো মাথাই কামিয়ে ফেল। অথবা উপদেশ বিতরণ করছে আজ তোমার বউ এর ম্যারেজ ডে, ঝামেলা বাঁধার আগেই তাকে উইশ কর। তারপরও
আমার ধারণা যন্ত্র আমাদের আবেগ অনুভূতির জায়গাগুলি এখনও পুরোপুরি দখল করে নিতে পারেনি।
"যন্ত্র আমাদের অনেক কাজ আজকাল সহজ করে দিচ্ছে। এখন আর কষ্ট করে দিন তারিখ মনে রাখা লাগে না। ফেসবুক আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে আজ তোমার জন্মদিন, দিনটা তুমি অন্যরকম ভাবে পালন কর। আর কিছু না পার তো মাথাই কামিয়ে ফেল। অথবা উপদেশ বিতরণ করছে আজ তোমার বউ এর ম্যারেজ ডে, ঝামেলা বাঁধার আগেই তাকে উইশ কর। তারপরও
আমার ধারণা যন্ত্র আমাদের আবেগ অনুভূতির জায়গাগুলি এখনও পুরোপুরি দখল করে নিতে পারেনি।
কারণ কিছু নাছোড়বান্দা প্রিয় মানুষ আছে যারা আমার জন্ম তারিখ ঠিকই মনে রাখে এবং আমাকে মনে করিয়ে দিয়ে লজ্জায় ফেলে দেয়। এরা নিশি-শ্বাপদের মত জেগে বসে থাকে রাত ১২ টায় আমাকে উইশ করার জন্য। এ এক বজ্র কঠিন ভালোবাসা। অনেক উঁচু থেকে লাফিয়ে পড়লে যেমন বুকের মাঝ খানে এক ধরণের ফাঁকা অনুভূতি হয় অনেকটা সেরকম।
এ বিশাল মহাবিশ্বে তুচ্ছ এক মানুষের জন্ম মৃত্যুতে কিবা যায় আসে।
২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় বিল বাইসন এর 'দি বডি’ বইটি। এ বইটিতে তিনি দেখিয়েছেন মানব দেহ কতটা রহস্যময়। কি সীমাহীন রহস্য লুকিয়ে আছে ঐটুকু দেহের মাঝে।
সৃষ্টিকর্তা কি বিপুল ক্ষমতা দিয়ে একটি মানব শিশুকে পৃথিবীতে পাঠান এ সম্পর্কে আমাদের নিজেদেরই হয়ত কোন ধারণা নাই।
১. প্রতিদিন আমরা নিঃশ্বাস নেই ২০,০০০ বার, প্রয়োজন হয় সাড়ে বারো হাজার লিটার বাতাসের।
২. প্রতিবার শ্বাস নেবার সময় আমরা ২৫ সেক্সটিলিয়ন (২৫ এর পর একুশটি শূন্য) অক্সিজেন কণা গ্রহণ করি।
৩. প্রতিদিন আমরা প্রায় ২০০০ কোটি দূষণযোগ্য ধুলো ও অনান্য অণুকণা গ্রহণ করি। ফুসফুস এগুলিকে পরিস্কার করে কিছু পাকস্থলিতে পাঠিয়ে দেয়। পাকস্থলির হাইড্রোক্লোরিক এসিড এগুলিকে গলিয়ে ফেলে।
৪. চোখ ২ লাখ থেকে ৭৫ লাখ রং চিনতে পারে।
৫. আমাদের ণাক ১ ট্রিলিয়ন (এক- এর পর বারটি শূন্য) গন্ধ শনাক্ত করতে পারে। পৃথিবীতে এত রকমের গন্ধ রয়েছে এটাও এক বিস্ময়।
৬. ব্যক্তির স্বাভাবিক আয়ু্ষ্কালে হৃদযন্ত্র স্পন্দিত হয় ৩৫০ কোটি বার। হৃৎপিন্ডের ওজন এক পাউন্ডেরও কম। সে রোজ শোধন করে ৬২৪০ লিটার রক্ত।
৭. বহু রোগ আছে যা শুধু একবারই হয়। যেমন মামস।
কারণ দেহের মধ্যকার টি-সেল ধারণ করে স্মৃতি, যা ৬০ থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকে। এর ফলে রোগটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি তৈরী হয়।
৮. মস্তিষ্কের ৭৫ শতাংশ পানি। বাকিটা মেদ ও প্রোটিন। ৩০ সেকেন্ড গভীর নীরবতার মধ্যে থাকা মস্তিষ্ক যে পরিমাণ তথ্য সুবিন্যস্ত করে, হাবল স্পেস টেলিস্কোপ তা করতে পারবে ৩০ বছরে।
৯. বিশ্বে যত ডিজিটাল তথ্য আছে তার পুরোটাই একটি মস্তিষ্ক ধারণ করার ক্ষমতা রাখে। একজন মানুষ তার মস্তিষ্কের মাত্র ১০ ভাগ ব্যবহার করে বাকি ৯০ ভাগই অব্যবহৃত থেকে যায়।
১০. চোখ প্রতি সেকেন্ডে মস্তিষ্কে ১০,০০০ কোটি বার সংকেত পাঠায়।
১১. মানুষের স্নায়ু ২৭০ মাইল গতিতে ভ্রমণ করে।
এ দেহটা কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে এটাও এক বিস্ময়। এর নামই হয়ত জীবন। একটি গাছ বেঁচে থাকে হাজার বছর, অথচ একটি মানুষের আয়ু ১০০ বছরও না। স্বল্প আয়ুর এ জীবনে আমরা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ক্ষমতার শুধু অপচয়ই করে যাই। আমাদের অজান্তে হঠাৎ করে এক দিন নিঃশব্দে মৃত্যু এসে স্পর্শ করে দিয়ে যায়। পরিসমাপ্তি ঘটে এই জীবনের। তারপর কেমন করে নষ্ট হয়ে যায় এ দেহ।
এ দেহটা কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে এটাও এক বিস্ময়। এর নামই হয়ত জীবন। একটি গাছ বেঁচে থাকে হাজার বছর, অথচ একটি মানুষের আয়ু ১০০ বছরও না। স্বল্প আয়ুর এ জীবনে আমরা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ক্ষমতার শুধু অপচয়ই করে যাই। আমাদের অজান্তে হঠাৎ করে এক দিন নিঃশব্দে মৃত্যু এসে স্পর্শ করে দিয়ে যায়। পরিসমাপ্তি ঘটে এই জীবনের। তারপর কেমন করে নষ্ট হয়ে যায় এ দেহ।
...
একজন মানুষের আয়ু একখন্ড বরফের মত যা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। মানুষ তার মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তে তিন সেকেন্ড জীবন এবং মৃত্যুর মাঝামাঝি অবস্থান করে। এ সময় সে সব কিছু অনুভব করতে পারে। এই ক্ষুদ্র সময়ে আমার অনুভূতি কি হবে বলা খুব মুশকিল। হয়ত অসংখ্য প্রিয় মুখ, তাদের সাথে কাটানো প্রিয় স্মৃতিগুলি এক সাথে সামনে এসে ভিড় জমাবে।
অনেকের সঙ্গ এক সময় গুরুত্বহীন মনে হত। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পার হবার পর প্রবেশ করলাম পৃথিবী নামক পাঠশালায়। ম্যাক্সিম গোর্কির তার লেখায় গোটা পৃথিবীটাকেই একটি পাঠশালা বলে মনে করতেন। এখানে মানুষ প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু শিখে। এখানে আসার পর মনে হল পৃথিবীতে আসলে কোন কিছুই গুরুত্বহীন নয়।
ব্রাজিলিয়ান লেখক পল কোয়েলহোর মতে, নষ্ট যে ঘড়িটা অযত্নে পড়ে আছে সেটাও দৈনিক দুইবার সঠিক সময় দেয়। পুরনো ছাতাটা অযত্ন অবহেলায় ঘরের কোণে পড়ে থাকে। এক সময় আমরা এটার কথা ভুলে যাই। অথচ প্রয়োজনের সময় এটাই মাথার ছায়া হয়ে আমাদের রোদ, বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে। স্বল্প আয়ুর এ জীবনে এক সময় উপলদ্ধি করলাম মাকড়সার জালের মত আমি জড়িয়ে পড়ছি ভালোবাসা নামক অদৃশ্য এক জালে।"
একজন মানুষের আয়ু একখন্ড বরফের মত যা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। মানুষ তার মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তে তিন সেকেন্ড জীবন এবং মৃত্যুর মাঝামাঝি অবস্থান করে। এ সময় সে সব কিছু অনুভব করতে পারে। এই ক্ষুদ্র সময়ে আমার অনুভূতি কি হবে বলা খুব মুশকিল। হয়ত অসংখ্য প্রিয় মুখ, তাদের সাথে কাটানো প্রিয় স্মৃতিগুলি এক সাথে সামনে এসে ভিড় জমাবে।
অনেকের সঙ্গ এক সময় গুরুত্বহীন মনে হত। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পার হবার পর প্রবেশ করলাম পৃথিবী নামক পাঠশালায়। ম্যাক্সিম গোর্কির তার লেখায় গোটা পৃথিবীটাকেই একটি পাঠশালা বলে মনে করতেন। এখানে মানুষ প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু শিখে। এখানে আসার পর মনে হল পৃথিবীতে আসলে কোন কিছুই গুরুত্বহীন নয়।
ব্রাজিলিয়ান লেখক পল কোয়েলহোর মতে, নষ্ট যে ঘড়িটা অযত্নে পড়ে আছে সেটাও দৈনিক দুইবার সঠিক সময় দেয়। পুরনো ছাতাটা অযত্ন অবহেলায় ঘরের কোণে পড়ে থাকে। এক সময় আমরা এটার কথা ভুলে যাই। অথচ প্রয়োজনের সময় এটাই মাথার ছায়া হয়ে আমাদের রোদ, বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে। স্বল্প আয়ুর এ জীবনে এক সময় উপলদ্ধি করলাম মাকড়সার জালের মত আমি জড়িয়ে পড়ছি ভালোবাসা নামক অদৃশ্য এক জালে।"
No comments:
Post a Comment