Search

Wednesday, May 18, 2016

পিতা, তোমার শবযাত্রায়…!

বলা হয়ে থাকে পিতার কাঁধে সন্তানের শবের চেয়ে ভারী আর কিছু নাই। কিন্তু সন্তানের কাঁধে পিতার শব পলকা বুঝি! যে বাপটা নিজের পায়ে সন্তানের পা রেখে হাঁটা শিখিয়েছিলেন অথচ সেই সন্তানটাই বাপের শব কাঁধে নিয়ে হাঁটা ভুলে যায়। পা যে চলে না! বুক ভেঙ্গে আসা কান্না চেপে পা টেনে-টেনে বাপের শব টেনে নিয়ে যাওয়া। শেষমেষ কী আর কান্না থামে, শ্লা। বাথরুমের ট্যাপ ছেড়ে দিয়ে হাউমাউ করে কাঁদা। নোংরা জলের সঙ্গে মিশে যায় সন্তানের চোখের জল।

এমনিতে আমরা বাবার খুব একটা নাগাল পাই কোথায়? তাঁর অঢেল সময়ই বা কই? বাবারা যখন চলে যান কাজে তখন আমরা ইশকুলে। আহা, তাই বলে বাবাদের কাজ থেমে থাকবে নাকি? হাতে ধরে-ধরে শেখান শিক্ষক নামের যে মানুষটা কখন যে এই মানুষটা বাবার জায়গা দখল করে ফেলেন; দূর-দূর, আগেভাগে তা টের পাওয়ার যো আছে বুঝি!
যে শিক্ষককে বালকবেলায় দৈত্যাকার মনে হত ‘সাবালকবেলায়’ তিনিই আমার কাঁধ ছাড়াতে পারেন না। তাতে কী, এখনও তাঁর পাশে দাঁড়ালে অহেতুক ভয়ে বুক কাঁপে! মরণ, বুক কাঁপার কিছু নেই- মানুষটার মায়াভরা গলা, 'তুমার কিতা হ্ইছে, মুখ এমন শুকনা ক্যান'? চশমার কাঁচ ঝাপসা হয়, হুদাহুদি- অহেতুক।

আমাকে খুনি বানাবার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে আমার সামনে পিতাসম এই মানুষটাকে চরম অপমান করা, নগ্ন করে ফেলা। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি। পরম করুণাময়, আমাকে যেন চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখতে না-হয় যে আমার পিতাসম শিক্ষককে কেউ চরম অপদস্ত করছে- তারচেয়ে মৃত্যু যে ঢের শ্রেয়।

আজ এই ভিডিওটা দেখে আমার কেবল মনে হচ্ছে এই যে শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানো হচ্ছে- এরপর ওই মানুষটা একটা মৃতমানুষ! কাগজে-কলমে হয়তো তিনি বেঁচে থাকবেন কিন্তু বাস্তবে একটা গলিত শব! তাঁর শত-হাজার ছাত্র,তাঁর পরিবারের প্রিয়মানুষগুলো গলিত শবটার দিকে তাকাবে কেমন করে, গলা বেয়ে খাবার নামে বুঝি? শবের দিকে তাকিয়ে গপগপ করে ভাত খাওয়া তো কোনও কাজের কাজ না…।

*ভিডিও ঋণ: shorif uddin shobuj

No comments: