*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Saturday, March 13, 2010
পিতা ও পুত্র
সোয়া এগারটা বাজে। নঈম সাহেব এখনও রাতের খাবার খাননি। ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে ভাবলেন, কল্লোল আজ কী দেরীই না করছে। ছেলেটা যে কোথায় কোথায় থাকে, কী খায়, কে জানে! ও বড় লক্ষী ছেলে।
অবশ্য এতে ওঁর নিজের অবদানও কম না। কিছু সূক্ষ্ণ চাল দেন। এই যে এখনও খাননি, একসঙ্গে খাবেন বলে অপেক্ষা করছেন। ও বিপন্ন বোধ করবে। ওর বিব্রত মুখ দেখতে ভালো লাগে। কল্লোলের মা সম্ভবত ঘুমিয়ে কাদা। মহিলা জীবনটা ভাজা ভাজা করে ফেলল। কিভাবে স্বামীকে অপদস্ত করা যাবে-নিচু দেখানো যাবে, এ ভাবনা ছাড়া এর মাথায় অন্য কিছুই খেলা করে না! অল্প কথায়, অসাধারণ রাঁধুনি এবং দুর্দান্ত ঝগড়া বিশারদ।
ওদিন কল্লোল খেতে বসে থু-থু করে বলেছিল: ডালে কী বিশ্রী গন্ধ, মুখে দেয়া যাচ্ছে না! ওয়াক!
ফাতেমা বেগম কঠিন ভঙ্গিতে বললেন: তোর বাবাকে নতুন একটা চশমা এনে দে।
মা কী বলছ-বলছি ডালে গন্ধ, তুমি বলছ চশমার কথা!
বেচারা, তোর বাবা এই চশমায় ভাল দেখতে পায় না। দশ বছরের পচা ডাল আগ্রহ করে কিনে নিয়ে এসেছে।
নাঈম সাহেব হা হা করে হেসে বলেছিলেন: চশমা ঠিকই আছে। ওই তো তোমার ভুরুর নিচে তিলটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।
চুপ, আবার আহাম্মকের মতো ফ্যা-ফ্যা করে হাসে। পচা ডাল কিনেছ পয়সা বাঁচাতে, তুমি তো আবার ডাল খাও না। আসলে আমরা মরে যাই তাই চাও, ভেবেছ, আমি বুঝি না কিছু, না!
কল্লোলের মা, দয়া করে এখন আরাম করে খেতে দাও, কাল ডাল ফেরত দিয়ে আসব।
ফিরাফিরি পরের কথা, তুমি এ কান্ডটা কেন করলে?
কল্লোল লজ্জায় মরে যাচ্ছিল, মা ওর জন্যে হূলস্থুল কান্ড করছেন। তাছাড়া বাবা ডাল খান না কথাটা ঠিক না, খান, কম খান। মিনমিন করে বলল: বাদ দাও তো, মা।
বাদ দেব কেন, এই না বললি মুখে দেয়া যাচ্ছে না!
ভুল বলেছি, খেতে অসুবিধা হচ্ছে না।
বললেই হল, ওই ভাত সরিয়ে অন্য ভাত নে।
আঃ মা, লাগবে না।
উহুঁ, ওই ভাত সরিয়ে ফেল!
কল্লোল অল্পক্ষণ পলক না ফেলে মা’র দিকে তাকিয়ে পুরো ডালের বাটি নিজের পাতে ঢেলে দিল। প্লেট উঠিয়ে সুড়ুৎ সুড়ুৎ করে নির্বিকার ভঙ্গিতে খেতে লাগল। ফাতেমা বেগম হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলেন। নঈম সাহেব চোখ বড় বড় করে কল্লোলকে দেখার চেষ্টা করছিলেন। কল্লোলকে কেমন অস্পষ্ট-ঝাপসা দেখাচ্ছিল। ছেলেটা এমন পাগলু হয়ে কেন?
কলিং বেলের শব্দে চমকে উঠলেন। যাক, শেষ পর্যন্ত ফিরল! কল্লোল মাথা নিচু করে ঢুকে অস্ফুটে বলল,‘সরি বাবা, একটু দেরি হয়ে গেল।’
নঈম সাহেব নিঃশব্দে দরজা লাগালেন।
‘সরি বাবা।’
নঈম সাহেব চেষ্টাকৃত যথাসম্ভব গম্ভীর হয়ে বললেন, ‘এক কথা দু’বার বলছিস কেন! কই, তোকে বকা দিয়েছি।’
‘বকাবকি করো না বলেই তো আরও খারাপ লাগে।’
‘আয় খেয়েনি।’
‘এসব কী বাবা, তুমি এখনও খাওনি!’
নঈম সাহেব খাবার টেবিলে বসে কল্লোলের প্লেটে ভাত বেড়ে অল্প ভাত নিজেও নিলেন। খাবার সব কেমন ঠান্ডা মেরে গেছে।
‘বাবা, এটা কিন্তু মোটেও ঠিক হচ্ছে না। এ বয়সে না খেয়ে বসে থাকো শুধু শুধু।’
‘এটা তুই এখন বুঝবি না, ছেলে-মেয়ের বাবা হলে তখন বুঝবি।’
কল্লোল বেসিনে সশব্দে নাক ঝাড়ল। নঈম সাহেব তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। বলবেন না ভেবেও বললেন,‘এই-এই ছোকরা।’
‘কী, অ, এই ব্যপার নাক ঝাড়া!’
‘দেখ-দেখ কান্ড ছেলের, কী অবহেলা করে বলছে, অ-এই ব্যপার। মার্জিত আচরণ বলে একটা ব্যাপার আছে, না কি?’
‘হুঁহ, মার্জিত আচরণ আমাদের মতো হাভাতের! এসব দিয়ে কী করব!’
‘কীসব কথা, ভালো আচরণ কী কেবলমাত্র খুব পয়সাঅলাদেরই থাকবে! শোন, মজার একটা কথা বলি। এক লোক ট্রেনে মহা আনন্দে পান চিবুচ্ছে। যেখানে সেখানে পানের পিক ফেলে নোংরা করছে। এক ভদ্রলোক অনেকক্ষণ ধরে ব্যাপারটা লক্ষ করছিলেন। শেষ পর্যন্ত কড়া করে ধমক দিলেন। লোকটা নির্বিকার ভঙ্গিতে বলল: গরীব মানুষ মাফ করে দেন। কী বুঝলি?’
‘গরীব হওয়া বড় লজ্জা, বড় কষ্ট, বাবা। এর চেয়ে জঘন্য কিছু এ পৃথিবীতে হতে পারে না।’
‘খুবই সত্য কথা কিন্তু তাই বলে তাইরে-নাইরে করে দিন কাটালে তো হবে না। আয়, খেতে আয়।’
কল্লোল চেয়ার টেনে বসল। ভাতে তরকারী মাখতে মাখতে বলল, ‘মৌ, মা, এরা কী সব ঘুমিয়ে গেছে?’
‘হুঁ, মৌ জেগে থাকতে চেয়েছিল। ন’টা থেকেই আমার কানের কাছে ঘেনঘেন করছিল, তুই এলে এক সঙ্গে খাবে বলে। তোর মা চড় দিয়ে ওর গালে আঙ্গুলের দাগ বসিয়ে দিল। তোর মা যে কী জিনিস, খারাপ ছাড়া ভালো কিছুই নেই।’
নঈম সাহেব চেষ্টা করেও গভীর শ্বাস আটকাতে পারলেন না। কল্লোল মুখ তুলে তাকাতেই বাবার সঙ্গে চোখাচোখি হয়ে গেল। কেউই চাচ্ছিল না তাকাতাকির পর্বটা অন্তত এ মুহূর্তে হোক, তবুও হল। বাবার চোখ পানিতে ছাপাছাপি অবস্থা। কল্লোলের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, কী করুণই না দেখাচ্ছে বাবাকে!
‘বাবা, প্লিজ মন খারাপ করো না, শেষে আমি কিন্তু কেঁদে ফেলব।’
নঈম সাহেব বিচিত্র উপায়ে নিমিষেই মুখ হাসি-হাসি করে ফেললেন। এখন কেউ দেখলে ভাববে এতোক্ষণ খুব হাসির কথা হচ্ছিল। যেন হাসির দমকে ওঁর চোখ খানিকটা ভিজে গেছে। বাবার নিয়ন্ত্রণ দেখে কল্লোল মুগ্ধ হল।
‘হ্যাঁ রে, কল্লোল, তোর পড়াশোনা, ইউনিভার্র্সিটির কথা বল।’
‘কি বলব, বলো। ভার্সিটি বছরে তিনশো পয়ষট্রি দিনে তিনশো দিন বন্ধ থাকে। চোখের সামনে মেধাবী ছেলেগুলো লাশ হয়ে যায়। কেউ কেউ কী নিষ্ঠুর ভঙ্গিতেই না বলে, আজ কটা কলাগাছ পড়ল? ওয়াল্লা, একটাও পড়ে নাই! ধুর, ছেলেগুলো সব একেকটা ভেবাগঙ্গারাম। পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে ফার্নিচারের মতো। রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী নিহত ছাত্রের পরিবার-পরিজনকে ধরে কাঁদার মতো একটা ভাব করেন। ওই ছবি পরদিন দেশের প্রায় সমসত পত্রিকায় বিশাল আকারে ছাপা হয়। থু, এসবের কোনো মানে হয়, বাবা।’
নঈম সাহেব কাতর গলায় বললেন, ‘তোকে নিয়ে বড়ো ভয় রে, কল্লোল।’
কল্লোল হেলাফেলা ভাবে হাসল, ‘ফুঃ, গুলি লেগে লাশ হয়ে যাই কী না এ জন্যে?’
‘এভাবে বলিস না। আমি আর কয় দিন, বল। আমার পর মৌ, তোর মাকে তুইই তো দেখবি।’
‘বাবা, মার জন্যে তোমার এতো ভাবনা!’
‘বলিস কী পাগল, ত্রিশ বছর এক সঙ্গে ঘর করলাম! এ দীর্ঘ সময় কাঠের সঙ্গে থাকলেও তো মায়া পড়ে যায়, ও তো একটা মানুষ।’
কল্লোল এঁটো থালা একপাশে সরিয়ে বলল, ‘বাবা, হাত ধুয়েনি?’
‘না।’
‘তুমি খাও না ধীরেসুস্থে। এমনিতেও তোমার ভালো করে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। আমি হাত ধুয়েনি?’
‘অনুমতি দিলাম না। আচ্ছা যা, ধুয়ে নে। আর শোন, বেসিনে গিয়ে গলা খাঁকারি দিবি না খবরদার, টান মেরে কান ছিঁড়ে ফেলব।’
বাবার খাওয়া হয়ে গেলে কল্লোল এঁটো বাসন রান্না ঘরে জড়ো করে একে একে সব ধুয়ে ফেলল। বাবা সিগারেট ধরিয়ে আয়েশ করে একমুখ ধোঁয়া ছেড়ে বললেন, ‘আহ, চা হলে মন্দ হত না।’
কল্লোল লাজুক ভঙ্গিতে বলল, ‘বাবা, আমি বানাব?’
‘তুই বানাবি কী রে, চা করতে পারিস?’
‘চেষ্টা করে দেখতে পারি, তুমি খেতে পারবে কী না বুঝতে পারছি না।’
বাবা কী শিশুর মতোই না হাত পা ছুঁড়ছেন! এ মুহূর্তে দেখে মনে হচ্ছে ওঁর চেয়ে সুখী কেউ আর এ পৃথিবীতে নেই। অতি তুচ্ছ ব্যাপারগুলো এ মানুষটাকে কী প্রভাবিতই না করে!
‘আরে ছোকরা বলে কী! কর, চা কর।’
চা নামের যে জিনিসটা শেষ পর্যন্ত দাঁড়াল, এর নমুনা দেখে কল্লোল একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। আনেকটা পাতলা সিরাপের মতো। রং টা অবশ্য ঠিক ধরতে পারছে না। এমন রং আগে কখনও দেখেছে? কই, মনে পড়ছে না তো। বাবার সামনে চা’র কাপটা রেখে ভাবছিল চট করে সরিয়ে ফেলব কী না। বাবা সেই সময়টুকু দিলেন না। লম্বা চুমুক দিয়ে বললেন, ‘আহ, অসাধারণ।’
কল্লোল নিজের কাপে ভয়ে ভয়ে চুমুক দিল। নিমিষেই মুখে প্রচুর ভাংচুর হল, কপালে ভাঁজ পড়ল, মুখ কুঁচকে গেল, ‘অসাধারণ! চা না, বাবা, তোমার অভিনয়। এ দেশে পড়ে আছ কী মনে করে- হলিউড চলে যাও, ওরা তোমায় লুফে নেবে।’
নঈম সাহেব হা হা করে হাসলেন, ‘তুই কী কম অভিনেতা। ওদিন ওই নষ্ট ডাল খেয়ে তোর পেট নেমে গেল। সবার চোখ বাঁচিয়ে টয়লেটে ছুটাছুটি করছিস। একবার আমার সামনে পড়ে গেলি। হড়বড় করে বললি: কী কান্ড দেখো, বাবা, তোমার ডায়বেটিস আমাকে ধরে ফেলেছে। একটু পর পর যেতে হচ্ছে।
কল্লোল খসখস করে গাল চুলকাতে চুলকাতে বলল, ‘যা-ও বাবা।’
বাবা চোখ সরু করে ওর ক’দিনের না-কামানো দাড়ি লক্ষ করছেন দেখে কল্লোল তাড়াহুড়া করে বলল, ‘বাবা, আমি তোমাকে হাজার দশেক টাকা দিতে পারি।’
‘এত টাকা কোথায় পেলি?’
‘যেখান থেকেই পাই, ছিনতাই করি নি।’
‘তা না, কিন্তু এত টাকা!’
‘আঃ বাবা, সব জানা চাই। জামির কাছ থেকে, হল তো?’
‘ছি, তুই চেয়েছিলি?’
‘উহুঁ, কোথেকে আমার একাউন্ট নাম্বার জোগাড় করে জমা দিয়েছে। আগে জানতাম না। আজ জানলাম।’
‘বলিস কী!’
‘হুঁ, তাই। পরে সময় করে ওকে ফেরত দেব।’
নঈম সাহেব বিড়বিড় করতে লাগলেন ‘আশ্চর্য, কী আশ্চর্য!’
কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, ‘তবু কল্লোল, বন্ধুর কাছ থেকে টাকা নেয়া ঠিক না। তুই টাকা ফিরিয়ে দে।’
কল্লোল একটু উষ্ণ হয়ে বলল, ‘তোমরা বুড়োরা আসলে জীবনটাকে বড় জটিল করে ফেলো। এবং তোমাদের মতো আমাদেরকেও ভাবতে বাধ্য করো। দুঃসময়ে বন্ধু পাশে এসে না দাঁড়ালে, বন্ধু আর রাজনৈতিক নেতার মধ্যে পার্থক্য কী?’ এবার ধীর গলায় বলল, ‘তাছাড়া বাবা, এ টাকা এক্ষুনি ফেরত দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। এটা করলেই ও যে কী অনর্থ করবে ভাবতেও গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। কাল তোমাকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে দেব।’
‘টাকা দিয়ে আমি কী করবো, তুই রেখে দে।’
‘না বাবা। তোমার ভালো কোনো জামা-কাপড় নেই, হররোজ একই কাপড় পরে দোকানে যাও। মা’রও ভালো কোনো শাড়ি নেই। মৌকেও কিছু কিনে দিয়ো।’
নঈম সাহেব মন খারাপ করা নিঃশ্বাস ফেললেন। মগবাজারে কনফেকশনারীর দোকান ভালোই চলছিল। হুট করে কী যে হল, বাজারে প্রচুর ধার-দেনা হয়ে গেল। একের পর এক শখের জিনিস গুলো বিক্রি করলেন। চোখের জলে ভাসতে ভাসতে কালার টিভি, ভিডিও বাঁধাছাঁদা করছিলেন। চশমার কাঁচ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল। অসম্ভব লজ্জাও হচ্ছিল। এসব তুচ্ছ জিনিসের এত মায়া!
কল্লোল ওঁকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলেছিল: ভালোই হল, বাবা, পরের বার আমরা লেটেষ্টটা দেখে কিনব।
মৌ ঠোঁট উল্টে তার ভাইকে কটাক্ষ করে বলেছিল: ভাইয়া রাত-দিন ছবি দেখে বলে আমি পড়তে পারতাম না। এখন কী মজা-আরাম করে পড়ব। আমি বড়ো ডিস্টার্ব হইতাম।
নঈম সাহেবের বড় বোন কার কাছে যেন খবর পেয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটে এসেছিলেন। এই অসম্ভব মমতাময়ী ছোটখাটো মহিলাটি ওঁর হাত চেপে ধরেছিলেন। আর্দ্র গলায় বলেছিলেন: তোর শখের জিনিস বিক্রি করতে হবে না। আমি তো এখনও মারা যাই নাই। কত টাকা দরকার আমাকে বল, আমি দেব।
নঈম সাহেব আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন কেঁদে না ফেলতে। গাল-টাল ভাসিয়ে বলেছিলেন: তা হয় না, আপা।
কেন হয় না, আমি কী তোর কেউ না।
প্লিজ, তুমি অনুরোধ করো না। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। অন্যকিছু শুনব না।
বড় আপা আহত চোখে তাকিয়ে ছিলেন। ওঁর অজানা নেই- ছোট ভাইটা পাগলা ধরনের, খুব একরোখা। একবার না বললে হ্যাঁ করানো যাবে না। অস্ফুটস্বরে শুধু বলেছিলেন: তোর আসলে কার উপর রাগ আমি জানি।
নঈম সাহেব ব্যাপারটা এড়াতে চাইছিলেন বলেই উত্তর দিলেন না।
চমক ভাঙ্গল কল্লোলের কথায়, ‘বাবা একটা বাজে, ঘুমুবে না?’
‘আচ্ছা কল্লোল, জামি তোর কী রকম বন্ধু?’
‘হঠাৎ এ কথা!’
‘এমনি জানতে চাচ্ছিলাম।’
‘অল্প কথায় বোঝানো অসম্ভব, বাবা। আমি ওকে ভালো বুঝতে পারি না। অনেকের সঙ্গে ওর আচরণ দেখে ইচ্ছে করবে খুন করে ফেলতে অথচ আমি যদি বলি: জামি, চোখ বুজে এখান থেকে লাফিয়ে পড়, ও লাফিয়ে পড়বে। আমি ঠিক তোমাকে বোঝাতে পারলাম না।’
‘হুম-ম, এই তাহলে কাহিনী!’
‘তুমি শোবে না?’
‘এই সিগারেটটা শেষ করে যাচ্ছি।’
‘বাবা, আজকাল খুব সিগারেট খাচ্ছ।’
‘সিগারেট তোরও খুব কম লাগে না, আই বেট। যা, ঘুমুতে যা। আর শোন, নো নাক ডাকাডাকি...।’
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
2 comments:
ভাই, এইটা পুরা পড়তে চাই...লেম্নে পড়ুম...কুইক বলেন।।
আমি দুঃখিত।
এটা আমার একটা উপন্যাস "তিতলি তুমিও"-এর খানিক অংশ। গোটা উপন্যাস আপনাকে কেমন করে পড়ার ব্যবস্থা করে দেই বুঝতে পারছি না? @Pavel
Post a Comment