আহসান কবীরকে নির্মমভাবে চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে।
আহসান কবীরকে নিয়ে প্রথম আলো নিউজ করেছে। না করলে কি হতো এটা আমার বোধগম্য না। খবরটার শিরোনাম হচ্ছে এমনঃ সন্ত্রাসী হামলায় চ্যানেল সিএসবির সাংবাদিক হাবিব আহত
খবরের ডিটেইলসে আছেঃ …আহসান হাবিব পায়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন
…তারা হাবিবের সঙ্গে থাকা আরেকজন সাংবাদিকের খোঁজ করে
হাবিব ছিনতাইকারী ভেবে মানিব্যাগ, ঘড়ি, মোবাইল…
ঘটনাটা ঘটেছে ২২ জানুয়ারী। প্রথম আলো খবরটা ছাপিয়েছে ২৪ জানুয়ারী। আনুমানিক রাত ১১টার ঘটনা- মিস হতেই পারে। কিন্ত খবরটা ছাপানো হয়েছে, ভেতরের পাতায় হেলাফেলা ভঙ্গিতে। এবং এই পত্রিকা আহসান কবীরের নাম লিখেছে, আহসান হাবিব। বেশ!
কাল আমার ধারণা ছিল, এটা ছাপার ভুল। ভুল হওয়া দোষের, কিন্ত বিচিত্র কিছু না।
আজ প্রথম আলো পত্রিকা আমি তন্নতন্ন করে খুঁজেছি- মানুষটা যে কবীর, হাবিব না এর কোথাও কোন সংশোধনী নাই। নাকি আছে, আতশি কাচ দিয়ে না দেখার কারণে আমার চোখ এড়িয়ে গেছে?
এই ভুলটা এই পত্রিকার কারো চোখে পড়েনি? ব্যাপারটা আমার কাছে মনে হচ্ছে, অস্বাভাবিক- চরম অস্বাভাবিক!যে পত্রিকায় আহসান কবীর দীর্ঘ দিন চাকরি করেছেন- লেখালেখি করেছেন! পুরনো এখানের অনেকের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন, ভাগাভাগি করে চা, সিগারেট খেয়েছেন। বাহ, তারা নিশ্চিত না তিনি কবীর, না হাবিব!
এই পত্রিকার পুরনোরা তাঁকে চেনেন না? বা এই ধন্দে থাকবেন, তাঁর নাম কি কবীর না হাবিব- আজব? ভুল হয়ে থাকলে সংশোধন হবে না কেন- এর কোন যথার্থ কারণ তো আমি দেখছি না? আসলে এটা কি ক্ষমাহীন ভুল, না অন্য কিছু?
আহসান কবীরের কি কি দোষ আছে এটা অন্যরা ভাল বলতে পারবেন কিন্তু তাঁর একটা অসাধারণ গুণ হলো, তিনি তার মন্দ লাগার কথা অবলীলায় বলতে পারতেন। বিবেকে বাঁধে বা তোষামোদির কোন কাজ করার ব্যাপারে তাঁর ছিল তীব্র অনীহা। আমার জানামতে, এই পত্রিকার কেউ কেউ তাঁকে পছন্দ করতেন না। কেউ কাউকে অপছন্দ করতেই পারেন, পৃথিবীর তাবৎ মানুষকে ভাল লাগতে হবে, এমন মাথার দিব্যি কে দিয়েছে? কিন্ত তাই বলে এমন দানবীয় অপছন্দ?
আমি কায়মনে চাই, অন্য কিছু না হোক- হলে, আমি ঠান্ডা মাথায় ভাবছি আর শিউরে উঠছি। আর তাই যদি হয়ে থাকে- আমি নিজেই নিজের মুখে থুথু দেই। লাভ কী- থুথুর মতো ইতিহাসও ফিরে আসে বারবার। ইতিহাসের কুশিক্ষা কি আমাদের রক্তে খেলা করে বেড়ায়- এ থেকে কি আমাদের মুক্তি নাই?
যে ঘৃণার বীজ আজ আমি বয়ে বেড়াচ্ছি- এটা কি তখন ধুয়ে যাবে, যখন আমাকেও অবিকল এমনই করে চাপাতি দিয়ে চরম নির্মমতায় পশুর মতো কোপানো হবে।
আমি কি সেই দিনটার অপেক্ষায় আছি?
না। আমি এমন দানবীয় ঘৃণা বুকে লালন করার চেয়ে মরে যাওয়া বেছে নেব। আহসান কবীরের একটা উপন্যাসের আছেঃ ভালবাসা মরে যায় মুগ্ধতা মরে না…
কে জানে, আহসান কবীরের মতো লেখক হলে হয়তো বা আমিও একটা উপন্যাস লিখতাম, মানবতা মরে যায় পশুত্ব মরে না…
* আমি একটা ওয়েব সাইটে অনেকটা সময় ধরে লেখালেখি করেছি। এই পোস্টটিতে সবচেয়ে কম সাড়া পেয়েছিলাম। গরম মাথায় আমার প্রিয় এক মানুষকে মেইল করেছিলাম:
…,
দুঃখিত, আমি বড়ো হতাশ হলাম। এ জন্য না যে আপনি আমার পোস্টে মন্তব্য করেননি বলে- সব কিছু মিলিয়ে আমি স্তম্ভিত! আহসান কবীরকে প্রথম আলো থেকে বের করার যে বর্ণনা দিলেন এর সবটাই আমি জানি। এসব তো পত্রিকায় এসেছে। আলপিনের ওই লেখার জন্য জবাবদিহী করার কথা, চাকরী যাওয়ার কথা সুমন্ত আসলামের, আনিসুল হকের। এটা কোন সুযোগ আসলে আমি নিজেই বলতাম। কিন্ত আমার ওই পোস্ট নিয়ে কেউ আমায় চ্যালেঞ্জ করেনি। আমি অপেক্ষায় ছিলাম। কারণ ভাসাভাসা উপাত্ত নিয়ে লিখিনি। আপনার এই জানা তথ্যোর বাইরে বাড়তি আরও কিছূ আমার জানা আছে।
আহসান কবীরের সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তাকে কোপানোর মাত্র ২/৩ দিন আগে আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, কথা হয়েছিল- শাহবাগে। ওই দিন তিনি ভয়াবহ রকম অসুস্ত ছিলেন, মরতে মরতে বেঁচে মাত্র হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। ঠিক মতো দাঁড়াবার ক্ষমতা তার ছিল না। তার বইয়ের প্রুফ দেখার জন্য এসেছিলেন। এর পরেই এই ঘটনা।
আমি জীবনের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছিলাম। শাহবাগে আমাদের সঙ্গে আরেকজন মানুষ ছিলেন তিনি আহসান কবীরের সঙ্গে চাকরি করেছেন, ভাগাভাগি করে চা সিগারেট খেয়েছেন। অথচ এই মানুষটা কবীরকে নিয়ে দু লাইন লেখা দূরের কথা ১টা কমেন্টসও করেননি!
আমি হতভম্ব। আমার এই পোস্টে মাত্র ১টা মন্তব্য! অথচ হিট প্রায় ৩৫০! হা ঈশ্বর- আমাকে এই ভাগাড়ে লেখালেখি করে দেশ উদ্ধার করতে হবে? ছি- ধিক্কার দেই নিজেকে!এটা আমার পরাজয় না- এটা মানবতার পরাজয়। মানবের বিরুদ্ধে দানবের যুদ্ধের ফল মাত্র…। আফসোস, এসব দেখার আগে আমার ভ্রণাবস্তায় মরে যাওয়াই ভাল ছিল।
কে সেলুনে চুল কাটলো, কে ভোঁতা দা দিয়ে নোখ কাটলো এইসব পোস্ট নিয়ে কী উচ্ছ্বাস! এরি হায় হায়! এই টাইপের পোস্ট তো আমি দিতে পারবো না- যে দিন দেব, সেই দিন আমার মতো একজন অখ্যাত লেখকের মৃত্যু হবে। আমি মরতে চাই না। যাও সরু একটা দড়ির উপর আমি এখানে ঝুলে ছিলাম- ওই দড়িটাও আজ ছিঁড়ে গেল। আহ, মুক্তি পেলাম আমি নিজের কাছ থেকে! এই জায়গাটা আসলে আমার জন্য না!
সরি টু সে, আপনি আমায় হতাশ করলেন, পালিয়ে বেড়ানো কোন কাজের কাজ না- একজন মানুষ পালিয়ে কোথায় যাবে? নিজের কাছ থেকে কি আদৌ পালানো যায়?
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.