Search

Wednesday, July 17, 2024

আমার লেখালেখি সব মিশেছে গিয়ে নর্দমায়!

(এই লেখাটা অসমাপ্ত। )

একবার লিখেছিলাম সম্ভবত জাফর ইকবালকে নিয়ে লেখা আমার জন্য শব্দের অপচয়! তারপরও শুরু করিলাম তারই নামে। কারণটা বলি। আমাদের দেশে খুব বড় একটা সমস্যা হচ্ছে এটা, আমাদের দেশে এমন মানুষের বড় অভাব যাদের দেখিয়ে আমরা আমাদের সন্তানদের বলতে পারি, ব্যাটা, ওই মানুষটার মত হবি। এই ভদ্রলোক আবার শিশু-কিশোরদের মাথা এলোমেলো-ঘাঁটাঘাঁটি করার সুযোগ নিয়ে এসেছিলেন। উপরওয়ালার দান- কিছু করার নেই! 

জাফর ইকবাল নামের এই 'চেতনার পোটলাটা' আবার বাহুত বাড়া দেশপ্রেমিক। এঁর মত দেশপ্রেমিক এই দেশে দূরের কথা এই গ্রহে আর কেক্কু নাই!
কিন্তু এই লোককে কেন কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে না আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এন্তার মিথ্যাচার করার জন্য? জেনারেল এ এল এম ফজলুর রহমান স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন জাফর ইকবাল একটা মিথ্যাবাদি, চরম মিথ্যাবাদি []। এই লেখায় তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন:

"আমরা মুক্তযোদ্ধারা একদিন সবাই  মরে যাবো। তখন ড. জাফর ইকবালের এই লেখার প্রতিবাদ করার কেউ থাকবে না। সেই সময় অনেকেই তার কথাকে বিশ্বাস করবে। আমি একজন জীবিত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে জানি, ১৯৭১ সালে ঢাকা শহর দখলের কোনো যুদ্ধ হয়নি। দুই নম্বর সেক্টরের ক্রাক প্লাটুনের মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকা শহরে অপারেশন করত। তা ছিল একেবারেই চোরাগোপ্তা এ্যাকশন।

এই যে তিনি বলছেন কানের কাছে গোলাগুলির শব্দ, শেলিং-এর অসহ্য শব্দ যার হাত থেকে বাঁচতে তিনি কম্বল মুড়ি দিয়ে ট্রেঞ্চে আশ্রয় নিতেন এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ঢাকা শহর দখলের এমন কোনও যুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হয় নাই।"

জাফর ইকবালের মত একটা ধামড়া একটা মানুষ যুদ্ধের সময় যুদ্ধে না-গিয়ে কেবল গর্তেই লুকিয়েই থাকেননি, এন্তার মিথ্যাচার করেছেন। এই প্রজন্মকে মিথ্যায় ভাসিয়েছেন- এই প্রজন্মকে অনবরত মগজ ধোলাই করেছেন []। এখন আবার এই মানুষটা আসেন বাচ্চাদের শেখাতে! এদিকে মোস্ট ওবিডিয়েন্ট স্যারের ছাত্রদের আবেগ দেখে আমার এক চোখে জল অন্য চোখে পানি চলে এলো:

অন্য-এক ছাত্রের আবেগ দেখে কান্না কী আর থামে আমার। আহারে, তার বক্তব্য, 'এই একটি মানুষ কখনো বদলে যান নি'। এই একটি মানুষ মানে জাফর ইকবাল, ওনলি ওয়ান পিস- বাকী সব মেটামরফসিস!
 

আরেক দল আছে জ্ঞানপাপি। এরা ভয়ংকর! কারণ এরা বিপুল জ্ঞানের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও জরুরি আলোচনার সময় ব্রেনটা চট করে পেছনে চলে যায়। নমুনা:

তিনি বিরাট এক কাহিনী ফেঁদে পরিশেষে বলছেন:

"...বুঝলাম এই ছেলে প্রশিক্ষিত বাচ্চা শিবির। এরাই নেতৃত্বে। হাঁটা দিলাম।, আরও দু চারজন লোকের সাথে।"
কী আজব! তার ভাষায় নাইনে পড়ে একটা বাচ্চা ছেলে তার মোবাইল নিয়েছে বলে তিনি এটা বললেই সমীচীন ছিল: বেয়াদব একটা ছেলে। তা না-বলে তিনি বাচ্চাটাকে শিবির বানিয়ে দিয়েছেন, তাও প্রশিক্ষিত শিবির! ভাবা যায়, এটা একটা সুস্থ মানুষের কথা!

তিনি তখনকার কথা বলছেন যখন একটা দেশে বাচ্চা-বাচ্চা ছেলেরা বিক্ষোভ করছে নিরাপদ সড়কের জন্য []। একটা দেশ তার বাচ্চাদের নিরাপদ সড়ক দিতে পারছে না তার উপর মেরে রক্তাক্ত করছে, লজ্জায় দেশটার তো সাগরে ডুবে মরা উচিত! 

চুতিয়ারা যখন বাচ্চাদের হাত ছেড়ে দেয় তখন কেউ-না-কেউ তাদের পাশে সিনা টান করে দাঁড়ায়! বিদেশী এই মানুষটার নাম ড. ডেভিড ডোল্যাল্ড, রেজিস্ট্রার, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।

আমাদের শিক্ষকদের মধ্যেও গুটিকয়েক থাকেন আমাদের সন্তানদের পাশে। আহমাদ মোস্তফা কামাল নামের এই শিক্ষক ছিলেন ছাত্রদের পাশে। এটাই তো হওয়ার কথা।

পারিবারিক প্রসঙ্গ শেয়ার করতে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। তবুও খানিকটা প্রাসঙ্গিক বিধায় বলি। বাবা হিসাবে আমি খুবই নীচু শ্রেণীর মানুষ। আমি থাকি মফস্বলে। পূর্বে আমার ছেলে শাহীন কলেছে পড়েছে। কোন দিন আমার যাওয়া হয়নি! তারপর একটা বিশ্ববিদ্যলয়ে পড়ছে আড়াই বছর হবে। প্যারেন্টস ডে-তে বা কোন অনুষ্ঠানেই যাওয়া হয়নি! সেরা ছাত্রের পুরষ্কার পেল, যাওয়া হয়নি! এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় অনুষ্ঠানে ম্যাজিক দেখায়, যাওয়া হয়নি! 

ক-দিন আগে এক কাজে গিয়েছিলাম ওদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমার ছেলে খুব আগ্রহ করে ওদের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। ব্রি. জেনারেল আনোয়ারুল ইসলাম নামের সদাশয় মানুষটাকে আমি বলেছিলাম, আপনাদের প্রতিষ্ঠানের সবই আপ-টু-দ্য-মার্ক কেবল একটা বিষয় ব্যতীত। ফুডকোর্টে যেখানে শিক্ষক-অভিভাবকরাও যান সেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অল্প-কিছু ছেলে-মেয়েদের আচরণ ভারী দৃষ্টিকটু- অশালীন! পরে অনেকের এটা শুনে সে কী হা হা হাসি! প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি এসব ডালভাত। বটে রে, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি বলে কী মূল্যবোধ, নৈতিকতা অন্য গ্রহে হাঁটা দেয়!

তো, রেজিস্ট্রার ভদ্রলোককে যেটা বলেছিলাম, আমরা বাবারা যখন মাঠে-আপিসে থাকি তখন আপনারাই তো বাবার রোলটা প্লে করেন। আসলেই তো- এঁরা তো কেবল শিক্ষক নন, বাবা-মাও!

লিংক:

১. জাফর ইকবালের ট্রেঞ্চ: https://www.ali-mahmed.com/2020/05/blog-post.html

২. জাফর ইকবাল এক অসুরের নাম: https://www.ali-mahmed.com/2020/06/blog-post_27.html

৩. নিরাপদ সড়ক: https://www.ali-mahmed.com/2018/08/blog-post.html

Friday, July 12, 2024

এক কাপ চায়ে দু-কাপ চিনি!

সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ধামড়া-ধামড়া বুদ্ধিমান মানুষদেরকে স্রেফ হাফ-প্যান্টপরা খোকা বানিয়ে দিচ্ছে। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি কোন খোকা না-আবার 'ইয়েখানা' থেকে পকেটে করে খানিকটা ইয়ে নিয়ে এসে আমাদেরকে বলে বসে: দেখবা, এক খাবলা নিয়া আসলাম।

এদিকে আবার কালে-কালে কিছু খোকা নিজেদেরকে স্টার আদলে একেকটা তালগাছ মনে করছে। এই গ্রহের এমন কোন জ্ঞান নাই যা এদের হাঁটু তলে নাই!

কে বোঝাবে এদেরকে যে সোশ্যাল মিডিয়া একটা বাজারের মত। বাজারের নিজস্ব কিছু ভাষা আছে। বাজারে দাঁড়িয়ে সব বলা যায় না, করা যায় না। 'ধুম মাচা দে', গানটা গাইতে কোন দোষ নাই কিন্তু কোনও অফিসের টেবিলের উপর দাঁড়িয়ে গানটা গাইলে ধরে নিতে হবে মস্তিষ্কের ভেতরের জিনিসপত্র নীচের দিকে নেমে এসেছে। আহা, গ্রে-মেটার আর ইয়েলো মেটার জড়াজড়ি হয়ে থাকাটা ভাল দেখায় না।

এদের এমন নমুনার সংখ্যা লক্ষ-লক্ষ! নমুনা হিসাবে একটা উদাহরণ দেই:

'এই নিন', বলে তিনি আমাদের হাতে যে লেখাটা ধরিয়ে দিয়েছেন ওখানে আবার ঘটা করে বলেছেন: 

'আমি ইংল্যান্ডে পড়েছি, সুইডেনে পড়েছি। অক্সফোর্ড, হার্ভার্ডে পড়েছি...'।

বেশ-বেশ! এটা আমরা আপনার লেখায় অনেকবার পড়ে ফেলেছি। কারণ সুযোগ পেলেই এটা ঘটা করে জানিয়ে দেন। এতে অবশ্য সমস্যা নেই। আমাদের জেনে ভাল লাগে, লাগতেই থাকে...!

তো, ড. আমিনুল ইসলাম নামের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক, এই ভদ্রলোক এস্তোনিয়ানের কোন-এক ইউনিভার্সিটিতে পড়ান। এটা আমাদের জন্য অবশ্যই গর্বের। সত্যি-সত্যি, শপথ আমার লেখালেখির।

এই মানুষটাকে নিয়ে লিখছি ভয়ে-ভয়ে কারণ একে তো ওঁর আছে বিরাট ফ্যান-ফলোয়ার বাহিনী তার উপর আরেক কাহিনী! ভদ্রলোকের হাতের মুঠোয় দেশের সমস্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন। আপাতত আমাদের দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কোন কাজ নাই! এদের একটাই কাজ ল্যাপটপ-ট্যাব-সেল ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকা আর আমিনুল স্যারের লেখার অপেক্ষা করা ।

আমিনুল ইসলাম স্যার 'মাসুক নানা'-কুয়াশা-কিরিটির কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর-পরই এফবি ওরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা প্রসব করা মাত্রই আইনের লোকজনেরা দুষ্টদেরকে পাকড়াও করে ফেলেন। যার চালু নাম গ্রেফতার! নমুনা:

'এই নিন',
বলে তিনি আরেকটা ভেরি-ভেরি গোপন তথ্য সফটওয়ারের 'নরোমতারের' ঢেলে 'ছৌছাল মিডিয়ায়' জানাচ্ছেন। তিনি জানাবার আগ-পর্যন্ত কিন্তু এই গ্রহের কেউ কিসসু জানে না! সাংবাদিকরা তখন কুহুতুর পর্বতে ব্লাডার খালি করতে গিয়েছিল। ফিরে এসে দেখে স্যার আমিনুল কাজ সেরে ফেলেছেন! সাংবাদিক বেচারারা কেঁদে-কেঁদে অন্তর্বাস ভিজিয়ে ফেলল, দুঃখে! তো, এখানে আমিনুল স্যার জানাচ্ছেন:
সকালে আমি পোস্ট দেয়ার পর বিসিএস প্রশ্ন ফাঁসের আলোচিত ড্রাইভার এবং তার ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ... 
অ আল্লা, কী সর্বনাশ-কী সর্বনাশ! স্যার পোস্ট দিলেই লোকজন গ্রেফতার হয়ে যায়! আমিনুল স্যারের ক্ষমতা দেখে ভয়ে আমার এক চোখে অনল অন্য চোখে জল চলে আসল।
 
ইয়ে, সোশ্যাল মিডিয়া লোকজনকে কেমন নির্বোধ বানায় এর আরেকটা উদাহরণ:
স্যার বলছেন, 'আমাদের এই ছবিটা বেশ ভাইরাল হয়েছে। তাই ভাবলাম আবার দেই...'! ভাল, এই
রকম পারিবারিক ছবি বেশি-বেশি করে দেন। 'বেশ ভাইরাল' থেকে ফুল ভাইরাল হওয়ার পর আবারও দেবেন চরম ভাইরাল হওয়ার জন্য। কাজটা করে যাবেন, প্লিজ, বারংবার...!
 
 
এখানে স্যার উষ্মা প্রকাশ করছেন, 'সে কবে তো লেখক হলো? তার কি কোন লেখা প্রকাশিত হয়েছে? ...এতে আমাদের মত লেখকদের অপমান করা হয়'। 
স্যার, আপনাদের মত লেখক? কারা এরা? যাদের হাতে ছ-টা আঙ্গুল থাকে! 
 
নাকি আপনার মত লেখক কাম গায়ক যারা! যখন-তখন একটা গিটার বা ইউকুলেলে নিয়ে 'হান্ড্রেড মাইলস' গেয়ে আরেক ডক্টর মাহফুজুর রহমানকে ছাড়িয়ে যান!
থ্যাংক ইউ, স্যার। আপনার মত লোকজনের জন্য বাংলা ভাষায় চালু বাক্যগুলো হলো, 'বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বিচি', সূর্যের চেয়ে বালির উত্তাপ বেশি বা 'অল্প জলে সফরী ফরফরায়তে'।  ওহো, গ্রামে আবার চালু আছে, 'দারোগার নাইয়ের মাঝির শালা', গাধার পিঠে হাতি ...।
আমি আমারটা বলি, এক কাপ চায়ে...! 
 
ঋণ: স্ক্রিণশটগুলো নেওয়া হয়েছে ড. আমিনুল ইসলামের ফেসবুক পেজ থেকে। স্যারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।

Wednesday, July 3, 2024

বিহঙ্গ হয়েছে অন্ধ, বন্ধ করেছে পাখা

লেখক: Najmul Albab Opu
"চল্লিশ পেরুলে বয়েস পরস্পরের আলাপের বিষয় হয় ওষুধের তালিকা। কোন কবি বলেছিলেন এই কথা? কোন কবিতায় আছে এই কথা? নাকি কোন গদ্যে?
কথাটা মিথ্যে নয়। নির্দিষ্ট বয়েস পেরুলে পরে বন্ধুদের আলাপেও ঢুকে পড়ে সাম্প্রতিক স্বাস্থ্যবার্তা। আমরা সিনেমা নিয়া কথা বলি। তত্ত্ব বা তথ্য থাকে না সেখানে। নিজেদের মধ্যে কার হৃদয়ে ছুরি চিকিৎসা হলো তার গল্প করতে করতে মান্নাদা বলে, সিনেমাটা খারাপ না। দেখতে পারিস।
আমরা তরল সিনেমার তালিকা করতে থাকি। কঠিন বাস্তবতার গল্পগুলো এড়িয়ে যাবার পদ্ধতি নিয়ে আলাপ করি। এ এক প্রাত্যহিক গল্প বলা। সিনেমার দৃশ্যান্তরে ধারাবাহিকতা নিয়ে আলাপ হয়। গল্পের সময়কাল নিয়ে চিন্তা না করা পরিচালককে আমরা গাধা নাম দেই। মান্নাদা বলে, তুই যেমন ভাবছিস, তেমন না আসলে। অন্ধ একটা মানুষ এই সমাজে যেমন অবিচারের শিকার হয়, তেমন না, বরং প্রতিশোধ নিতে পারার এক সুপারম্যানিয় ঘটনা। সিনেমাটা সিনেমাই। অন্যকিছু না।
 
কম টাকায় তৈরি হওয়া সিনেমার তালিকা করি আমরা। ভালো সিনেমার জন্য টাকা কোন বিষয় না। কম টাকা দিয়ে বিস্তর ভালো সিনেমা তৈরি হয়েছে। অন্ধ হলেই বিহঙ্গ পাখা বন্ধ করে না, সিনেমাটা সেই সূত্রেই হয়তো তৈরি। কিন্তু হিন্দিওয়ালারা রবীন্দ্রনাথ কেনো পড়বে? হয়তো কোন কোরিয়ান সিনেমার নকল! বোম্বে শুধু হলিউড থেকেই নকল করে না, আরো আরো দেশ থেকেও চুরি করে। ফারুকীকে নিয়ে কথা উঠলেই আমরা হাসাহাসি করি। কিন্তু সেতো দেশের বড় পরিচালক। আমরা কী? আমরা কেউ না। আমরা রাজা উজির মারা আম পাব্লিক, যাদের সাথে রাজার দুরে থাক উজিরেরও কখনো দেখা হয়না। অথচ আমরা রাজা উজির মারি সর্বদা। মানুষ হিসেবে আমরা ক্ষুদ্র। আমাদের আনন্দ জমা হয় টিভির পর্দায়, মোবাইলের স্ক্রিনে। সিনেমার বাড়ি এখন ওটিপি প্লাটফর্মে।
আমাদের বয়েস চল্লিশ পেরিয়েছে। আমাদের শরীরে বাসা বেঁধেছে চর্বিযুক্ত শর্করা! নাকী শর্করা যুক্ত চর্বি? কোনকালেই আমি বিজ্ঞানের সন্তান নই, আমি জানিনা শরীরের কলকব্জা। ক্লাস নাইনে সাইদুর রহমান স্যার বলেন, সাইন্স নেরে নজমুল।
আমি বলি, না স্যার, মাথায় কুলাইত নায়।
 
আমি পরিবেশ পরিচিতি সমাজে মন দিয়েছিলাম। আমাদের সিনেমাও সর্বদাই সামাজিক। সামাজিক এ্যাকশন... এই সমাজ এ্যাকশন ভালোবাসে। অথচ আক্রান্ত হৃদয় নজমুল আলবাবরা সেসবে নিজের ভূমিকায় ঠিকঠাক অভিনয় করতে পারেনা। না পারার বেদনায় অক্ষম আক্রোশে কাঁপতে থাকে। রক্তের চাপ উর্ধ্বমুখী হয়। হাতে বাঁধা ছোট কাঁচে ভালোবাসার চিহ্ন ভেসে উঠে, মিলিয়ে যায়, বিপ শব্দ হয়। আমাদের আঁকাআকির ক্লাসে একজন দু'জন ছিলো শুধু ভালো আঁকতে পারতো। বাকিরা লবডঙ্কা। অথচ সবাই আমরা পানপাতা আঁকতে পারতাম।
 
আমরা ইঁচড়েপাকা ছিলাম। আমরা লাল রঙ দিয়ে লাভ সাইন আঁকতাম। আমাদের পছন্দের সিনেমা ছিলো চাঁদনি। শাবনাজ নাঈমের। আমরা তরল ছিলাম। তারপর আমাদের গোঁফ গজালো। আমরা ক্রমেই ভাব নিতে শিখলাম। আমরা মোটা-মোটা বই আর ভারিক্কি সিনেমা দেখতে শুরু করলাম। আমাদের কেউ-কেউ চশমার মালিক হলাম। অথচ এখন সেইসব সিনেমা থেকে আমরা পালিয়ে বেড়াই।
 
আমরা আবার তরল হয়ে 'পুষ্পা' দেখি... 'ঝুঁকেগা নেহি, সালা'! কিন্তু আমরা ঠিকই ঝুঁকে গেছি প্রত্যেকে। আমাদের মেরুদণ্ড ক্রমেই ভঙ্গুর হয়ে উঠেছে। সিনেমার বিবরণ পড়ি। মেরুদণ্ডে শিরশির হতে পারে এমন কোন উপাদান আছে কীনা সেটা দেখি। অকেজো হতে চলা হৃদয়ে ঠিক কোন প্রতিক্রিয়া হবে তার হিসাব নিই। আরো নিশ্চিত হতে দেখি ট্রেলার। নড়াইলের বিবরণ পড়ে বুঝি এই দৃশ্যকল্প আমার জন্য নয়। তারপরও ট্রেলার দেখা হয়ে যায়। নিঃশ্বাস ভারী হয়। পরিবেশ অপরিচিত সমাজ আমাকে থাপড়া দেয়। দিতেই থাকে। আমার গলায় ঝুলতে থাকে জুতোর মালা। আমার মাথায় কেউ ঢেলে দেয় ময়লার ভাগাড়...আমাদের বিহঙ্গ অন্ধ, বন্ধ করেছে পাখা। আমরা উড়তে পারিনা।
নায়ক অন্ধ হলেও লড়াই করতে পারে, কারণ সেটা সিনেমা। পরিবেশ অপরিচিত পঁচা গলা সমাজ বিজ্ঞানে দুর্বলেরা কিছুই পারেনা। আমাদের জীবন বাঁধা পড়েছে নিয়মে। আমরা দেখি তরল সিনেমা।"
_____________
জুন ২৪, ২০২২
লেখক: Najmul Albab Opu

Saturday, June 1, 2024

দেবরাজ ইন্দ্র, সতী অহল্যা এবং একজন মাতুব্বর!

আরজ আলী মাতুব্বরের এই বইটি অনেক আগে পড়েছিলাম। ওখানে দেবরাজ ইন্দ্রকে নিয়ে একটা প্রসঙ্গ আছে। এটা এখানেই আমি প্রথম জানতে পাই! কোন-এক কারণে যখন বইটা আবারও পড়ছি তখন একটা ছোট্ট খটকা লেগেছে তিনি যে এটার উল্লেখ করলেন এর সূত্র কি? অন্য প্রসঙ্গে দিলেও তিনি এটায় কোন প্রকার রেফারেন্স দেননি! দেয়াটা অবশ্য প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ওই সময় সীমাহীন সীমাবদ্ধতার মধ্যে এই লেখক মানুষটা যা করে দেখিয়েছেন তা প্রায় অসাধ্য এক কাজ! কাউকে আহত করার জন্য না কেবল তিনি একের-পর-এক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। পারলে আপনি উত্তর দিন, সমস্যা তো নেই।

কিন্তু আরজ আলীর সেই সময় এখন আর নাই। এখনকার এই প্রজন্মের অনেকে প্রচুর পড়াশোনা করেন। ব্লগস্ফিয়ারে বা অনলাইনে ভুলভাল বলে পার পাওয়ার কোন সুযোগ নাই। এখানে লিখে আমি ভয়ে কাঠ হয়ে থাকি এইরে, কেউ-একজন ক্যাঁক করে ধরে ফেলল! অবশ্য কেউ ভুল ধরিয়ে দিলে লজ্জিত হই এবং কৃতজ্ঞও হই। তো, রেফারেন্স আমার খুব প্রয়োজন বিধায় তালাশের শুরু...।

আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্র-১, পৃ:১৫৬ প্রকাশক: পাঠক সমাবেশ

এমনিতে আরজ আলী মানুষটাকে আমি যতটা পড়েছি বা জেনেছি আমার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছে তিনি স্বঘোষিত নাস্তিক ছিলেন এ সত্য কিন্তু ধর্মবিদ্বেষী ছিলেন না। আমাদের অনেকের কাছেই এটা পরিষ্কার না যে নাস্তিকতা আর ধর্মবিদ্বেষ এই দুইটা বিষয় এক না। আমি অনেককেই দেখেছি এরা বিশেষ কোন একটা ধর্মকে টার্গেট করেন এবং অনবরত সেই ধর্মের বিশ্বাসীকে অহেতুক খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করেন। কাজটা অনেকটা ইচ্ছাকৃত এবং এতে তার ব্যক্তিগত স্বার্থ জড়িত।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, এ অন্যায়। আপনি যেমন একজনের মাকে নিয়ে কুৎসিত কথা বলতে পারেন না তেমনি মনগড়া কথা বলে কারও ধর্মবিশ্বাসকে আহত করতে পারেন না! আরজ আলী মাতুব্বরকে আমি যতটুকু পড়েছি বানোয়াট কোন প্রসঙ্গের অবতারণা করতে দেখিনি! বা বিশেষ কোন ধর্মকে খাটো করার চেষ্টাও ছিল না। কিন্তু ওই যে বললাম সূত্রটা জরুরি।

আমার এক উপন্যাসে কাহিনীর প্রয়োজনে মহাপাতকের উল্লেখ ছিল। কী কী করলে একজন মহাপাতক হয়? এক, ব্রহ্মহত্যা। দুই ব্রহ্মস্বাপহরণ। তিন, সুরাপান। চার, গুরুপত্মীহরণ। পাঁচ, মহাপাতকী সংসর্গ। উপন্যাসের ওই চরিত্রের কাছে 'গুরুপত্মীহরণ' গুরুতর মনে হয়েছিল।

আলোচ্য বিষয়ে ইন্দ্র গুরুপত্মী অহল্যার সতীত্ব নষ্ট করেন এবং গুরু ঋষি গৌতমের শাপগ্রস্ত হন। হিন্দু ধর্মে অহল্যাকে খুবই সম্মানের চোখে দেখা হয় কারণ পঞ্চকন্যার (পাঁচ আদর্শ সতী) অহল্যাকে প্রথমা মনে করা হয়। হিন্দু ধর্মমতে, এই 'পঞ্চকন্যার' নাম আবৃত্তি করলে পাপস্খালন ঘটে।

যাই হোক,  রামায়নে দেবরাজ ইন্দ্রের এই প্রসঙ্গ পাওয়া গেল অন্য প্রকারে। অবশেষে সোমদেব ভট্ট রচিত 'কথাসরিৎসাগর'-এ এর রেফারেন্স মিলল। এই কথাসরিৎসাগর অনুবাদ করেছিলেন শ্রীহিরেন্দ্রলাল বিশ্বাস। অনুবাদটির প্রথম সংস্করণ ছাপা হয়েছিল ১৯৫৭ সালে এবং প্রকাশিত হয়েছিল অ্যাকাডেমিক পাবলিশার্স ৫এ ভবানী দত্ত লেন, কলিকাতা ৭ থেকে।

কথাসরিৎসাগর, প্রথম খন্ড। পৃ: ১৪৮

এখানে উল্লেখ আছে, ঋষি গৌতম অহল্যাকেও শাপ দিয়েছিলেন সেটা ভিন্ন প্রসংগ কিন্তু ইন্দ্রকে যেটা বলেছিলেন:

"...সঙ্গে সঙ্গে গৌতম ইন্দ্রদেবকেও এই শাপ দিলেন, তুই যে স্ত্রী অঙ্গ অভিলাষ করিয়াছিলি তোর সমস্ত দেহ তাহার আকৃতিতে পূর্ণ হইবে... ইন্দ্রের দেহ তৎক্ষণাৎ হীন চিহ্নে আবৃত হইল কারণ দুশ্চরিত্রের অবমাননাকর অবস্থা কেন না হইবে (১৩৩-১৪৭)..."।

Wednesday, May 15, 2024

অমানুষ এবং এক বস্তা...!

লেখক: ওয়ালিদ ইসলাম, Oalid Islam (লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত)
ওয়ালিদ ইসলাম
"
আমি যেহেতু খুব আশাবাদী একজন মানুষ তাই নিজেকে কখনো ভিক্টিম ভাবি না বা ভিক্টিম সাজতে নিতান্তই অপছন্দ করি। কিন্তু গত ১০ জানুয়ারি আমার লৈঙ্গিক পরিচয় প্রকাশ করার পর থেকে যে বিষয়গুলোর মুখোমুখি হয়েছি তার সামান্য চিত্র একটু তুলে ধরি: 
১. অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি যে, ছেলেদের সাথে এতো ঢলাঢলি কিসের যা আমার বা আমাকে নিয়ে করা বিভিন্ন জনের পোস্টের মন্তব্যে গেলেই বুঝতে পারবেন। আমারও প্রশ্ন জাগে আমি ঢলাঢলি করার জন্য মেয়ে বা তৃতীয় লিঙ্গের কাউকে কোথায় পাবো!
২. বিবিসির করা সংবাদের মন্তব্যে দেশে গেলে গণপিটুনি দিয়ে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে সরাসরি। তবুও দেশে গিয়েছি, দেশে ফিরবো এ আশাও রাখি।
৩. অনেক অপরিচিত হাটুর বয়সী জুনিয়র নির্ভয়ে তুমি/তুই সম্বোধন করে বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করেছে এবং ফ্রড করার সহজ উপায় খুঁজেছে। এতোটা ব্যক্তিত্ত্বহীনঁএকজন মানুষকে কেন ভাবতে হবে?
৪. অনেক বন্ধু বা সম্মানিত সিনিয়র ফেসবুকে 'ক্লাসিফাইড ভিডিও' পাঠিয়েছেন যার কারণ আজও আমার বোধগম্য হয় না! এই বিকৃত রুচির মানুষেরা হয়তো ভেবেছেন পর্ণ দেখা আমার নেশা। আর তাদের পাঠানো পর্ণ দেখলেই হয়তো তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বো।
৫. কেউ কেউ তার ইজ্জত-আব্রু উপেক্ষা করে তার যক্ষের ধনের ছবি পাঠাতে শুরু করেছে। বাবা, এতে কী ধরনের আনন্দ পাওয়া যায় আমি বুঝি না!
৬. অনেক স্নেহাশিস জুনিয়র আমার পেছনে-পেছনে এমন কিছু নোংরা মন্তব্য করে যা প্রায়ই আমার কান পর্যন্ত পৌছে যায়। যাই হোক, আমার সম্ভবত এতেই কৃতজ্ঞ থাকা উচিত এরা আমার সামনে তো আর করে না।
৭. ২০২০ সালে টাঙ্গাইলের রাস্তায় একটা অ্যাক্সিডেন্ট করি এবং ছোটভাই সুমন সেখানেই মারা যায়। আমরা বেঁচে থাকা তিন জন সেই ব্যথা বয়ে বেড়াচ্ছি। দেশে থাকলে সময় করে সুমনের কবরের পাশে গিয়ে বসে থাকতাম আর চিন্তা করতাম কবে আমিও ওর পাশে গিয়ে শায়িত হবো। কিন্তু এখন কাউকে না-জানিয়ে খুব ভোরে লুকিয়ে-লুকিয়ে ওর কবরের ওখানে যেতে হয়।
৮. আমার কাছের বন্ধু/জুনিয়র ছেলেগুলো যাদের সাথে সবসময়ই ওঠাবসা তাদেরকে নিয়ে তাদের বন্ধু-বান্ধবীদের হাসি-ঠাট্টার অন্ত নেই। যার একমাত্র কারণ হলাম আমি আর আমার সাথে তাদের সম্পর্ক।
৯. একটা সমাজসেবামূলক কাজে কয়েকজন জুনিয়রকে যুক্ত করা হলো। সেখানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব একজন ম্যাডাম তৃতীয় লিঙ্গের একজনকে যুক্ত করলেন। তাতে একজন জুনিয়র ম্যাডামকে উত্তর দিলেন যে, তৃতীয় লিঙ্গের ওই মানুষটাকে সাথে নিয়ে সে তার ক্যাম্পাসে গড়ে ওঠা ইমেজটার বারোটা বাজাতে চান না। চিন্তা করি, তার গড়ে তোলা ইমেজের ফুটেজ আমি কতোখানি নষ্ট করেছি।
১১. পজিটিভ/নেগেটিভ যাই হোক, অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জীবনধারার উপর থিসিস করতে চান এবং আমি কিভাবে সহায়তা করতে পারিেএই বিষয়ে!
১২. বলতে ঘৃণা লাগে একটা ট্রেনিং অর্গানাইজেশনে পুরোদস্তুর একটা ক্লাস নেয়া হয়েছিলো আমার উপরে। ট্রেনিংরত অবস্থায় বিভিন্ন মেইল পার্টিসিপ্যান্টের উপর নাকি আমার কুদৃষ্টি ছিলো এটা তারা আগেই লক্ষ্য করেছিলেন। অথচ, সেখানকার প্রতিটা পার্টিসিপ্যান্ট মেইল/ফিমেইল প্রত্যেকের সাথেই আমার স্নেহ/সম্মান ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক ছিলো যা এখনো টিকে আছে।
১৩. সবচেয়ে অবাক করা বিষয় যেটি 'হিজড়া' আমাদের সমাজে একটি গালি। কিন্তু, আমার জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করতে গিয়ে দেখলাম অন্যান্য সব দেশের ন্যাশনাল আইডি সিস্টেমে যেরকম উল্লেখ থাকে 'মেইল/ফিমেইল/আদার' আমাদের সিস্টেমে সেটা নেই। আমাদের সিস্টেমে উল্লেখ 'মেইল/ফিমেইল/হিজড়া' যা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু বা শ্রুতিকটু। তাই আমার জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করলেও পাসপোর্ট পরিবর্তন করতে সাহস পাচ্ছি না। কারণ, আমার ই-পাসপোর্টে তো এই গালিটারই উল্লেখ থাকবে!

আরও অনেক কিছুই ঘটে বা ঘটেছে যা উল্লেখ করতে রুচিতে বাধছে। আমি অত্যন্ত তুচ্ছ মানুষ। আমার সৌভাগ্য, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত আছি। এই আমাকে যদি এতো কিছুর সম্মুখীন হতে হয় তাহলে আপনি বা আপনারা একটু চিন্তা করে বলুন তো আপনারা তৃতীয় লিঙ্গের কমিউনিটিকে কোথায় পতিত করেছেন? এরপর যখন তারা বাচ্চা নাচিয়ে/রাস্তার মোড়ে মোড়ে টাকা তুলে জীবিকার পথ খুঁজবে আপনারাই চেঁচামেচি-হইচই করেন যে তারা উৎপাত করে, চাঁদাবাজী করে।

জন্মই যেন আমাদের আজন্ম পাপ, ধর্মই যেনো না-জায়েজ হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে এই কমিউনিটির মানুষগুলোকে।"

-লেখক: ওয়ালিদ ইসলাম, First Secretary at Bangladesh Embassy Tehran (https://www.facebook.com/oalid.islam)

...

আমার এই ওয়েবসাইট- ব্লগস্পট, ওয়েবসাইট এটা একটু জাঁক করে বলা! ২০০৭ সাল থেকে শুরু করা এটা আসলে এখন একটা প্রগৈতিহাসিক জিনিস! এফবি-টেফবির যুগে এই জিনিস এখন অচল। ব্লগস্ফিয়ারে এখন কার কাছে এত 'ফিযুল' সময় যে কোন নির্দিষ্ট একটা ওয়েবসাইটে গিয়ে ঢুঁ মারবে! পূর্বে 'ব্লগ-চলের' কারণে হয়তো এখানে কেমন-কেমন করে যেন ১৮ লাখের মত পড়ুয়াদের পড়া হয়ে গেছে!‍ এখন অবশ্য আমার এখানে খুব কমই লেখা হয়, কারণ...সে এক ইতিহাস। অল্প করে বলি, মাছের নাকি পচন শুরু হয় মাথা থেকে আর একজন লেখকের, লিখতে না পেরে! তো, আপাতত আমি এখন নিজেকে 'মৃতমানুষ' বলেই মনে করি!

যাই হোক, মূল প্রসঙ্গে আসি। কারও লেখা খুব ভাল লাগলে বা দরকারি মনে হলে আমি খুবই বিনয়ের সঙ্গে অনুমতি প্রার্থনা করি। লেখাটা এখানে পাবলিশ করার অনুমতির জন্য।  কখনও-কখনও আমার ভঙ্গিটা হয় অনেকটা ভিক্ষুকের মত। কেন আমার এই 'লালচি' আচরণ? এই সাইটের ভিউ বাড়াবার জন্য? আরে না, এখন পাঠক কোথায় যে ভিউ বাড়বে। লেখা চাইলে কেউ-কেউ সহৃদয়তার সঙ্গে অনুমতি দেন। অনেকে আবার দড়াম করে নাকের উপর দরোজা লাগিয়ে দেন। মানে না করে দেন। ভঙ্গিটা কর্কশ হলেও এতে আমার আহত হওয়ার কিছু নাই, ভিক্ষুক যে আমি। তো, ভাঙ্গা নাক খানিকটা সোজা হলে আমি আবারও কারও কাছে...! কেন রে বাবা, ভাঙ্গা নাক বা নেড়া আবারও বেলতলায়? কেন যায়!

আমার কাছে কেবলই মনে হয় আমরা তো আর 'পাইপমানুষ' না যে একজন মানুষের মুখে খাবার আর পেছনে ইয়ে নিয়ে একটা আস্ত পাইপ...। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমরা কী কিছুই রেখে যাব না! ধরুন, এফবি টাইপের কোন-এক সোশ্যাল মিডিয়ার 'তারতুরে' আগুন ধরে রাতারাতি সব লেখা উধাও বা আমার এই সাইটের তারগুলো সব উইপোকা খেয়ে ফেলল? হতে পারে না এমনটা, বেশ পারে। তো, আমার মতে দরকারি তথ্য-লেখা যতটা ছড়িয়ে রাখা যায়।

জনাব, ওয়ালিদ ইসলামের এই লেখাটা যখন পড়া শুরু করলাম আমার খুব কাছ থেকে ছুরি খাওয়ার অভিজ্ঞতা হলো। ক্রমশ মনে হলো গা থেকে একেক করে কাপড় খসে পড়ছে। হা ঈশ্বর, এক চিলতে কাপড়ের যে বড় প্রয়োজন!

এ এক বিচিত্র দেশ! কারও মধ্যে খানিকটা অসঙ্গতি বা কেউ খানিকটা অন্য রকম হলেই আমরা অবলীলায় পাগল বলি। বেদম হাসাহাসি করি। সাইকিয়াট্রিস্টকে বলি, পাগলের ডাক্তার! এমন নৃশংস আচরণ এই গ্রহের আর কোথাও পাবেন না। শিক্ষিত লোক, লেখক-কবি-শিল্পী এই দোষে দুষ্ট। আমি নিজেও!

পুতুপুতু কথা অনেক হলো এবার একটু কঠিন করে বলি। স্যার, আপনাকে বলছি, যারা ওয়ালিদ ইসলামের মত কাউকে নিয়ে ট্রল করেন, হাসাহাসি করেন। ওয়ালিদ ইসলামের মত কারও হলুদ পোশাক নিয়ে বা অন্য কারও টুথব্রাশ গোঁফ নিয়ে কথা বলেন এটা সমীচীন না তবুও... আমরা উদাসিন ভঙ্গিতে না-দেখার ভান করব। 

কিন্তু, যেটাতে আমার হাত নাই তা নিয়ে আপনি বলার কে হে? আপনি, আপনার বাবা মিলে আজ পর্যন্ত একটা কোষ বানাতে পারলেন না! নিজের জন্মের সময় আপনি বা আপনার বাবা হাত দুইটার জায়গায় তিনটা বা ঠ্যাং দুইটার জায়গায় চারটা আনতে পারলেন না? আফসোস, আপনার নিজের জন্মটাই আটকাতে পারলেন না! মিয়া, আপনি রসের সাগর, তাহলে আপনার এত রস-রসিকতা আসে কোথা থেকে!

ডিয়ার রসিক স্যার, আপনি এই গ্রহের সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষ হলেও আপনার জন্য গুন্টার গ্রাসের কথা ধার করে বলি: 'আপনি এক বস্তা গু'! আর আমার এক পাঠকের কথাও এখানে যুক্ত করতে চাই, ইয়ে ফেটে না-গেলে আপনার জন্মটা আটকানো যেত! আহা, বেচারা এই গ্রহ আপনার ভার সয় কেমন করে...!                 

Saturday, April 27, 2024

HENRIK IBSEN-এর ROSMERSHOLM!

হেনরিক ইবসেনের 'রোজমারশোম'-এ অতি অল্প চরিত্র:

1. JOHANNES ROSMER, owner of Rosmersholm, a retired minister.

2. REBECCA WEST, companion of the late Mrs. Rosmer and still living at Rosmersholm.

3. RECTOR KROLL, ROSMER's brother-in-law.

4. ULRIC BRENDEL.

5. PETER MORTENSGÅRD.

6. MRS. HELSETH, housekeeper at Rosmersholm.

কিছু বই পড়ে আমার মত তুচ্ছ পাঠক বোঝার চেষ্টা করি এটা নিয়ে এমন মাতামাতি হওয়ার কারণ কী! ইবসেনের 'রোজমারশোম' না-পড়লে বুকের ভেতর থেকে একটা হাহাকার বের হয়ে আসবে, কেন? ওই সময়ের প্রক্ষাপটে এর হয়তো বিপুল আবেদন থাকতে পারে কিন্তু যুগের-পর-যুগ ধরে এই আবেদনের জোয়াল বইতে হবে, কেন? লেখাটা ইবসেনের বলে! 

সে কথা বললে আমি তো বলব ইবসেনের 'An enemy of the people' একটা মাস্টারপিস! অসাধারণ ১০০ বইয়ের তালিকা করলে এটাকে আমি তালিকায় রাখব, ১০টা বইয়ের তালিকায়ও রাখব চোখ বন্ধ করে। আমার তো মনে হয় ইবসেন 'An enemy of the people' লিখে আর একটা শব্দ না-লিখলেও সমস্যা ছিল না। তিনি অমর হয়ে থাকতেন। কী অসাধারণ কাজ-কী অসাধারণ ভাবনা! ভাবা যায়, এই গ্রহের কোন-একটা পবিত্র স্থানের অতি পবিত্র পানীয় জল দূষিত...?

যাই হোক, 'রোজমারশোম' আমার মত বেকুব পাঠকের খুব একটা হজম হলো না। কেবল, কেবল শেষ অংশটা দমকা বাতাসের ন্যায় ছুঁয়ে গেল। রেবেকা এবং রোজমারের বিদায় বেলার (আত্মহত্যা) সংলাপ:

"... REBECCA. Only as far as the bridge.

ROSMER. And over it too. I will go with you as far as you go For now I dare do it.

REBECCA. Are you so infallibly sure that this road is the best for you?

ROSMER. It is the only one. I know that.

REBECCA. And, if you are deceiving yourself about it ? If it is all a mistake? One of the white horses of Rosmersholm?

ROSMER. Let it be so. We cannot escape them—we at the manor.

REBECCA. Then stay behind, Johannes.

ROSMER. The husband must go with his wife, as the wife with her husband.

REBECCA. Yes, but first tell me this. Are you going with me, or am I going with you?

ROSMER. We shall never solve that question.

REBECCA. And yet I fain would know.

ROSMER. We follow one another, Rebecca. I thee and thou me.

REBECCA. And thus it is well.

ROSMER. For we are now one.

REBECCA. Yes. We are now one. Come! We will go cheerfully..."

-(ROSMERSHOLM p:107, By HENRIK IBSEN TRANSLATED BY M. CARMICHAEL)