"ডেভিড গুডাল, লন্ডনে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। উদ্ভিদ ও পরিবেশ
বিজ্ঞানী। বয়স ১০৪। তিনি চুড়ান্তভাবে অসুস্থ ছিলেন না, মানসিক মেজাজ ছিল
খুব ভাল, কোন ধরনের নিদারুণ যন্ত্রণাও ছিল না। কিন্তু ডেভিড মনে করেন,
ওঁর সাম্প্রতিক জীবন উপভোগ্য না বরং কিছু ক্ষেত্রে এটি এক ধরণের 'প্রবীণ
নির্যাতন'। তিনি আর জীবনকে চালিয়ে নিয়ে লম্বা করতে রাজী ছিলেন না।
বার্ধক্যের কারণে জীবন আর বেঁচে থাকার যোগ্য নয়, বেঁচে থাকাটা ক্লান্তিকর, তাই ওনি আর
বেঁচে থাকতে চান না। চিকিৎসকের সহায়তায় স্বেচ্ছা মৃত্যুবরণ করাটা চিকিৎসায় একটি অনৈতিক আচরণ বলে
অস্ট্রেলিয়ার নীতিবিদরা মনে করেন এবং এটা ্খওনে নিষিদ্ধ।
ডেভিড সিদ্ধান্ত
নিলেন, আরামের মৃত্যু ক্রয় করতে তিনি সুইজারল্যান্ড যাবেন কারণ সেখানে স্বইচ্ছায়
মরণ বৈধ। গুডাল সর্বদা অনুভব করতেন, এই সংসারে বেঁচে থাকার কোন
অর্থ নাই, যদি না কারও সমাজে কোন প্রকারের অবদান না থাকে। যদিও তিনি বিজ্ঞান ও জ্ঞান
সম্পর্কে যত্নবান ছিলেন। সৎ, সরল, নম্র ও মানুষের প্রতি যত্নশীল ডেভিড নিজেকে
কোনভাবেই কারও চেয়ে ভাল হিসাবে উপস্থাপন করতেন না এবং বৈষয়িক বিষয়েও অনাগ্রহী
ছিলেন।
১০ মে, ২০১৮ ডেভিড সুইজারল্যান্ডে তার চুড়ান্ত ইচ্ছা পূরণ করেছেন
চিকিৎসকের সহায়তায় আত্নহত্যার মধ্য দিয়ে। মৃত্যুর আগের দিন এক্সিট
ইন্টারন্যাশনাল একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। গুডাল খোশ মেজাজে
সাংবাদিকদেরকে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবং ফ্রিডরিচ শিলারের কবিতা ‘আনন্দ গাথা’-এর
উপর ভিত্তি করে জার্মান ভাষায় লুডভিগ ভ্যান বিথোভেনের নবম সিম্ফনির
চতুর্থ আন্দোলনের প্রথম কয়েকটি লাইন গেয়েছিলেন। অধ্যাপক ডেভিড গুডাল
বিথোভেনের নবম সিম্ফনির চুড়ান্ত আন্দোলন শোনার মাঝেই তাঁর জীবনের অবসান করেছিলেন।
কক্সবাজার ইনানী সমুদ্র সৈকতে এই মূহর্তে ঢেউ আছড়িয়ে
পড়ছে, শিকাগো শহরে এক যুবক গুলিবিদ্ধ, স্টকহোমে মারিয়ার যমজ সন্তান হয়েছে।
ফুজি পর্বতমালার নীচে টগবগ করা গলিত লাভা উপরে ওঠার পথ খুঁজে পাচ্ছে না, এইমাত্র পাঁচটা সিংহী একটা সিংহ উঁচু লম্বা একটা জিরাফটাকে মাটিতে শোয়ালো, ভারতে একাশি
বছরের বুড়ো বিয়ে করলো। কালকে সাইবেরিয়ায় আনবিক ধ্বংসের তেজ পরীক্ষা হবে,
উত্তর মেরুতে একটা সাদা ভাল্লুক বহুদিন একাকী হেঁটে চলছে, অনেকদিন পর আমিনা
খাতুনের সঙ্গমে তৃপ্তি হলো।
কী অনুচিত, কিসে বিশ্বাস, কোনটা সত্য-কোনটা মিথ্যা, চেতনা
কি দেহের অংশ, নক্ষত্রপুন্জের কি দরকার, আপনি কে-আমি কে, আলো দৌড়ায়, পানি গড়ায়,
আগুন সব জ্বালিয়ে দেয়, ব্রক্ষাণ্ডের নির্মাতা কে। মৃত্যু কি সবকিছু স্তব্দ
করে দেয়? হা হা হা-জগৎ আর অস্তিত্ব একটা কৌতুক!"
No comments:
Post a Comment