Search

Monday, October 11, 2010

বেচারা এতিমদের উপায় কী!

খুন-খারাবি করাটা এখন মনে হয় খুব বড়ো ধরনের কোন অন্যায় না যদি না কেউ অভিযোগ করেন! অভিযোগ করলে কিন্তু খবর হয়ে যাবে, ফাঁসিতে লটকে মরে আর বাঁচার উপায় থাকবে না; তখন হু হু করে কেঁদেও লাভ হবে না।
কেবল লক্ষ রাখতে হবে অভিযোগ করার জন্য যেন কেউ না থাকে। কি বললেন? পরিবার-পরিজন সবাইকে খুন করে ফেলা। আরে নাহ, এটা কোন ভাল পরামর্শ হলো না। একজনের পরিবারের লোকজন দেশময় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকেন এখন ওই পরিবার সব সদস্যকে খুন করার অভিপ্রায়ে একজন রক্তমাখা নাংগা তরবারি হাতে নিয়ে, পায়ে চাকা লাগিয়ে দেশময় ঘুরে বেড়াচ্ছে, দেখতে ভাল দেখায় না, বুঝলেন!

তারচেয়ে ভাল হয়, এতিম কাউকে পেলে। ব্যাটা অক্কা পেলে বাদী হবে কে, কেই-বা অভিযোগ করবে? আর অভিযোগ না পেলে পুলিশের কী দায় পড়েছে নড়াচড়া করার! আইন ভাঙ্গবে বুঝি?
...

ছবি ঋণ: কালের কন্ঠ
এই ছবিটা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নাই।

এ নিয়ে আগেও আমি লিখেছিলাম, এই সব ফটো-সাংবাদিকদেরকে পুলিশে চাকরি দেয়া হোক এবং পুলিশকে কবিতা লিখতে [১] লাগিয়ে দেয়া যেতে পারে।

ছবি ঋণ: প্রথম আলো
ক-দিন পূর্বে নাটোরে প্রকাশ্যে রাস্তায় পিটিয়ে একজন উপজেলা চেয়ারম্যানকে মেরে ফেলা হলো, পুলিশ নাকি হত্যাকারীকে খুঁজে পাচ্ছে না। অথচ পত্রিকার ছবি, ভিডিও ফুটেজ সবই ছিল। কিন্তু ওই যে বললাম, সব কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়, অভিযোগ করতে হয় তবেই না পুলিশ গিয়ে ধরবে। এই বিষয়ে ওসি মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেছেন, "...বাদী মামলা করতে দেরি করায় আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছেন...।" (১১ অক্টোবর, ২০১০)
হত্যার অভিযোগে অভিযুক্তরা বুদ্ধিতে অতিশয় পাকা নইলে ঠিক এরা থানায় এসে বলত, 'মুঝে পাকড়ো-মুঝে পাকড়ো। পুলিশও হুড়মুড় করে উঠে বলত, নড়েছো কি মরেছো, কপালে একবারে আলু ফুটিয়ে দোব'।

কাজের কথায় আসি, আমার মতে, বাদীর বিরুদ্ধে মামলা করা উচিৎ অভিযোগ করতে কেন তিনি দেরি করলেন? কেন তাঁর কারণে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেয়ার সুযোগ পেল? কেন বাদীর কারণে পুলিশ বেচারারা আসামি ধরতে পারলেন না। কেন বাদী লোকজনকে এই নিয়ে হরতাল করে গোটা নাটোর অচল করে দেয়ার সুযোগ দিলেন? এবং বাদীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা উচিৎ ক্ষতিপূরণের। নাটোর অচল হওয়ার কারণে যত টাকা ক্ষতি হয়েছে তার পাই পাই হিসাব বাদীকে দেতে হবে।

অবশ্য দুষ্টরা বলে থাকেন, যার যার জামা তার তার কাছে- দলবাজি না করলে আমাদের চলেই না [২]। কে খায় বাকী, কার জামা খাকি এই সব কোন বিষয় না। দলবাজিই আসল, উপরের নির্দেশই মুখ্য!
'সারদায় কি এই সব শেখায়?' [৩] এই লেখায় আমি লিখেছিলাম, "সমাজপতিরা বিচারের নামে বাবাকে দিয়ে ছেলের চোখ উঠাতে বাধ্য করে। ঈশ্বর, কোন সভ্য দেশে এমনটা সম্ভব? এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিউদ্দিন প্রথম আলোর কাছে বলেন, 'ঘটনাটা শুনেছি। আমার কাছে ছেলের বাবা এসেছিলেন। আমি তাঁকে বলেছি আগে চিকিৎসা করান। তারপর অভিযোগ দিয়েন'
ভাল-ভাল! এই অফিসারের মনে দেখি অ-নে-ক মায়া! চোখের চিকিৎসা যখন শেষ হবে তখন পর্যন্ত দোষীরা বসে বসে ছা ফুটাবে।"

'তালেবানদের কী দোষ?' [৪] লেখায় লেখাটা হয়েছিল, দাউদকান্দিতে এক মেয়েকে দোররা মারা হয়েছে এটা নিয়ে। "দাউদকান্দি থানার ওসি সাহেব বলেছেন (ইনাদের নাকি এখন প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দেয়া হবে), 'বিষয়টি পুলিশের জানা ছিল না। কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে'। (আব্দুর রহমার ঢালী, প্রথম আলো, ২৪.০৫.০৯)

তো, সব জায়গায় একটা কথাই ঘুরেফিরে আসছে, অপরাধ করাটা সমস্যা না, সমস্যা হচ্ছে অভিযোগ করা নিয়ে। অভিযোগ না করলে কোন সমস্যা নাই। এমন কি খুন করে ফিরে এসে ব্লগিংও করা যাবে, রসিয়ে রসিয়ে খুনের বর্ণনা...।

সহায়ক লিংক:
১. পুলিশ লিখবে কবিতা: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_09.html 
২. হরেক রকম জামা আছে: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_09.html 
৩. সারদায় কি শেখায়: http://www.ali-mahmed.com/2010/09/blog-post_24.html 
৪. তালেবানদের কি দোষ?: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_24.html

No comments: