“...১৭ ও ১৮ জুলাই ২০১০-এ
নিউ ইয়র্কে আমেরিকা-বাংলাদেশ-কানাডা কনভেনশন (সংক্ষেপে এবিসি কনভেনশন)... ‘প্রথমেই আমি এবিসি কনভেনশনের আয়োজকদের
ধন্যবাদ জানাতে চাই এই রকম একটি বিরাট আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের এক নেড়িকুকুরকে নিমন্ত্রণ করার জন্য। থ্যাংক ইউ। ঘেউ ঘেউ।...’।“
bdnews24.com
(
http://tinyurl.com/lecqb6a)
এই মানুষটিই (!) হচ্ছেন,
শফিক রেহমান।
তিনি নিজেকে ‘নেড়ি কুত্তা’ বলে দাবী
করলেও আমি বিশ্বাস করিনি কারণ কেউ নিজেকে পাগল বললেই চোখ বন্ধ করে তাকে পাগল ধরে নিতে হবে
এমন ঘোর দিব্যি তো কেউ দেয়নি আমায়। কেন মানুষটা এমন পাগল বলে দাবী করছেন এর অন্য একটা
ক্ষীণ সম্ভাবনা তো থেকেই যায়।
বিশ্বের বিখ্যাত-আলোচিত-ক্ল্যাসিক,
মুভি, গান, বই, লেখা সম্বন্ধে যারা খোঁজ রাখেন তাদের
অন্যতম শফিক রেহমান। যার রস বোধ তীব্র, প্রখর, অতুলনীয়...।
এ দেশে যে অল্প ক-জন আছেন, লেখক বানাবার
মেশিন- তাঁদের মধ্যে অন্যতম, শফিক রেহমান! এমন একটা মানুষ নিজেকে ‘নেড়ি
কুত্তা’
বলে দাবী করলেই মেনে নেয়াটা কতটা যৌক্তিক হয় এ প্রশ্নটা থেকেই
যায়?
অবশ্য এও
সত্য, এই মানুষটাই যখন যাযাদিন সাপ্তাহিকে
ভিনসেন্ট পিউরিফিকেশনের নামে তিনি অতি কুৎসিত রসিকতা করতেন [১] তখন মানুষটার রুচি
বোধ নিয়ে ঘোর সন্দেহ দেখা দিত। রসিকতা যখন একটা সীমা ছাড়িয়ে যায় তখন সেটা হয়ে উঠে
নিতান্তই অরুচিকর!
এখানে অবশ্য তার জোকার মার্কা পোশাকের
আলোচনায় গেলাম না কারণ কখনও তিনি যদি দু-পায়ে দু-রঙের মোজা
পরেন তাহলে আটকাচ্ছে কে! বা কিছু পোশাকে তাকে যে বুড়া শকুনের মতো দেখায় সেটাও
এখানে বলাটা জরুরি না।
যাই হোক, দৈনিক নয়া দিগন্তে (১ নভেম্বর
২০১৩) শফিক রেহমান ‘১০ ওভারে হাসিনা-খালেদার টেলিম্যাচের
ধারাবিবরণী’ নামে দু-পৃষ্ঠাব্যাপি দীর্ঘ এক লেখা
লিখেছেন।
হাসিনা-খালেদার টেলিফোন সংলাপ নিয়ে
টান-টান উত্তেজনায় ছিল সমগ্র দেশ। তবে পত্রিকায় তাঁদের যে আলাপচারিতা পড়লাম এই
বিষয়ে আমার নিজস্ব মত হচ্ছে, কার পাল্লা ভারী-হালকা সেই প্রসঙ্গে আমি যাব না। আমার
কাছে যেটা মনে হয়েছে, এই
দুজন বছরের-পর-বছর ধরে এই দেশটার অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন বিধায় তাঁদের
উপস্থাপনা, কথার ধাঁচ, সহিষ্ণুতা, প্রজ্ঞার উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই চোখে পড়েনি বরং
অর্থহীন-খেলো বিষয় নিয়ে অধিকাংশ মূল্যবান সময়ের অপচয় হয়েছে। যেসব নিয়ে লেখাটা আমার
কাছে কেবল শব্দের অপচয়!
কিন্তু শফিক রেহমান লিখেছেন, দু-হাতে,
দু-পৃষ্ঠায়! এই নিয়ে আমার গাত্রদাহ হওয়ার কারণ ছিল না কিন্তু যে হরতাল নিয়ে বারবার
এখানে প্রসঙ্গ এসেছে সেটা নিয়ে তিনি টুঁশব্দও করেননি! আহ, হরতাল! বিএনপি যখন
ক্ষমতায় ছিল তখন আওয়ামীলীগ শত-শত হরতাল দিয়েছে কিন্তু
বিএনপি এক সেকেন্ড আগেও ক্ষমতা ছাড়েনি। এবার বিএনপিও যখন হরতালের-পর-হরতাল দিয়েছে
আওয়ামীলীগও ক্ষমতা থেকে সরে আসেনি! তাহলে এই হরতাল, এই অসংখ্য প্রাণহানি, এই বিপুল
অর্থের অপচয় কী ফল বয়ে আনল?
এই শফিক রেহমানই আমাকে চিঠি লিখে
জানিয়েছিলেন, ‘...যাযাদি
(ওরফে শফিক রেহমান) সবসময়ই হরতালের বিরুদ্ধে ছিল
এবং আছে...’ [২]।
অথচ এখানে এসে গণেশ উল্টে গেল! তখন শফিক
রেহমানের কাছে হরতাল হয়ে গেল করতাল! খাদ্য গ্রহণ এবং বর্জন একাকার হয়ে যায়...।
এবার তার লেখার মূল প্রসঙ্গ, ওই লেখায়
তিনি কেবল একজনেরই দোষ খুঁজে পেয়েছেন- পাশাপাশি অন্যজনের
কোনো দোষই খুঁজে পাননি! এবং শফিক রেহমানের কেবল একজনেরই এই যে দোষ
খুঁজে পাওয়া এবং অন্যজনকে মহান বানাবার অতি হাস্যকর ভঙ্গি এতোটাই স্থুল যে এ নিয়ে
আলোচনা করাটাও পন্ডশ্রম। দলের প্রতি ‘দলবাজিরও’একটা
সীমা থাকে- মানুষটা সেটাও অবলীলায় ছাড়িয়ে গেছেন।
এই মানুষটার গ্রে মেটার
ক্রমশ ইয়েলো মেটারে পরিণত হয়- ইয়েলো মেটারে মাখামাখি
হয়ে পড়ে থাকা শফিক রেহমানের মত অসম্ভব প্রতিভাবান মানুষটাকে দেখে আমার মন সত্যি
সত্যি বিষাদে ভরে উঠে।
বিষাদের সঙ্গে এও বলি, তার অদৃশ্য লেজ
দৃশ্যমান হয়- তার নিজের সম্বন্ধে তার জোরালো দাবী নিয়ে যে সন্দেহটা আমার
মনে ছিল সেই সন্দেহের অবশান ঘটাবার জন্য একটা ধন্যবাদ অবশ্য
শফিক রেহমান (https://www.facebook.com/ShafikRehmanPresents) পাওনা
হন...।
শফিক
রেহমান নিজেকে নেড়িকুকুর হিসাবে দাবী না-করে ‘ধূর্ত কাক’ হিসাবে দাবী
করলেই সমীচীন হতো কারণ এই বুদ্ধবাণীর সঙ্গে অনেকাংশেই এই বুদ্ধিজীবীর মিল আছে। কেউ-কেউ
বিক্রি হন ক্ষিধার জ্বালায় কিন্তু রেহমানদের মত মানুষ বিক্রি হন কুৎসিত কালো লকলকে
জিবের কারণে- অতি লোভের ক্ষিধা, কেবল চোখের ক্ষিধা...।
*সেকালের
পন্ডিত এবং একালের বুদ্ধিজীবী, মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এরাই শাসনের চোখ, কান! কিন্তু
এরা যখন অনাবশ্যক লেজ নাড়াতে শুরু করেন তখন সেই শাসক হন অন্ধ এবং বধির। ফল যা
হওয়ার তাই হয়।
আর
সেই মানুষটা শফিক রেহমান নাকি গাফফার চৌধুরী তাতে কী আসে যায়...।
“সুজীবং অহিরিকেন কাকসূরেন ধংসিনা,
পকখন্দিনা
পগবভেন সঙকিলিটঠেন জীবিতং।“
(ধম্মপদ,
মলবগগো: ১০, ২৪৪)
বাংলাটা
হচ্ছে, যে খাদ্যসংগ্রহে নির্লজ্জ কাকের ন্যায় ধূর্ত, পরের অনিষ্টকারী, দুঃসাহসী,
প্রগলভ এবং কলঙ্কিত জীবন-যাপন করে; তার পক্ষে জীবিকা নির্বাহ অতি সহজ।
সহায়ক সূত্র:
No comments:
Post a Comment
আপনার যে কোন মত জানাতে পারেন নিঃসঙ্কোচে, আপনি প্রাসঙ্গিক মনে করলে।