আমাদের পোড়া এই দেশে স্বপ্নবাজদের বড়ো অভাব! একজন মাকসুদুল আলম আমাদের স্বপ্ন দেখান, জান্তব স্বপ্ন।
তিনি পাটের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কার করেছেন। যুগান্তকারী এক আবিষ্কার! ইতিপূর্বে তিনি ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পেপে এবং ২০০৯ সালে মালয়েশিয়ায় রাবারের জীবনরহস্য আবিষ্কারে নেতৃত্ব দেন। এরপরই তাঁকে বাংলাদেশে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়।
যারা তাঁকে দেশে নিয়ে আসতে সহায়তা করেছেন, মিডিয়া, সরকারী কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ সবাই অসম্ভব ভালো একটা কাজ করেছেন। তাঁদের জন্য আন্তরিক সাধুবাদ। কারণ আমাদের দেশে কোন একটা গবেষণার জন্য ১০ কোটি টাকার ব্যবস্থা করে দেয়াটা চাট্টিখানি কথা না!
এই দেশের যেসব সেরা সন্তান প্রবাসে তাঁদের মেধা বিক্রি করছেন তাঁদেরকে যতো দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। বিষয়টা এতো সহজ না কারণ দেশে এঁদেরকে নিয়মানুযায়ী যে টাকা দেয়া হবে তাতে দু-একজন ব্যতীত কেউ উৎসাহী হবেন বলে আমি বিশ্বাস করি না।
প্রবাসে এঁরা যে অংকের টাকা পান তার কাছে দেশে টাকার অংক কিছুই না। দু-নম্বরি না করে অন্তত ভদ্রস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব না। আমাদের এটা বুঝতে হবে এঁদেরকে প্রচলিত ছকে ফেলা যাবে না। আবার এঁদের জন্য অন্য বেতন-কাঠামোও করা কঠিন। কিন্তু উপায় একটা তো বের করতেই হবে।
এইসব সেরা সন্তানরা এই গ্রহের যেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন সেখানে তিনি আমাদের দেশের টাকায় যে অংকের সুবিধা পান দেশে অন্তত এর চার ভাগের এক ভাগ সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব দেয়া যেতে পারে।
মোদ্দা কথা, এদেঁর জন্য আলাদা করে ভাবতে হবে।
নইলে আজীবন একজন মাকসুদুল আলমের কথাই মিডিয়া ঘটা করে লিখতে থাকবে, সংসদে আলোচনা চলতে থাকবে। সংসদে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, "শোক-দুঃখের পাশাপাশি আমাদের আনন্দেরও অনেক খবর থাকে। আজ সংসদে আমি সে ধরনের এমনই একটি আনন্দ সংসবাদ দেব। আমি মনে করি, সংসদই হলো সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা...।" (প্রথম আলো, ১৭.০৬.২০১০)
ভাল। আমিও একমত।
একজন এফসিপিএস ডাক্তারের সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল। তিনি দুঃখিত গলায় বলছিলেন, জানেন, এইডস নিয়ে কাজ করার জন্য দাতাদের দেয়া কোটি-কোটি টাকা ফেরত গেছে। কারণ আর কিছুই না। আমাদের বিজ্ঞ আমলারা ফাইল চালাচালি করতে করতে দিনের পর দিন-মাস-বছর পার করে দিয়েছেন।
সত্যি বলতে কি তাঁর কথা আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল, কেউ কি এভাবে নিজের কফিনে নিজেই পেরেক ঠুকতে পারে? কোন জাতি কি এতোটা নির্বোধ হতে পারে!
কিন্তু এখন আমার কাছে মনে হচ্ছে সম্ভব, এই দেশে সবই সম্ভব। প্রথম আলো জানাচ্ছে, জাপানের জাইকা ডিএনএ পরীক্ষাগার তৈরির জন্য ২৫ কোটি টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। কিন্তু এক বছর চলে গেছে এখনো কিছুই করা সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাতেও কাজ হয়নি। যথারীতি আমাদের বিজ্ঞ আমলারাদের
আমলাগিরির কারণে এখন টাকাটা ফেরত যাচ্ছে।
এই দেশের সামান্য সচেতন একজন মানুষও জানেন আমাদের দেশে একটা আধুনিক ডিএনএ পরীক্ষাগার কতোটা জরুরি। অপরাধিকে কাবু করার জন্য এর কোন বিকল্প নেই। কারণ দু-জন মানুষের ডিএনএ (ডিঅক্সিরিবো নিউক্লিক এসিড) কখনও এক রকম হয় না, হতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী যেমন সংসদে মাকসুদুল আলমের মত একজন স্বপ্নবাজের কথা শেয়ার করেন তেমনি তিনি কি এই সব দুঃস্বপ্নবাজ আমলাদের কথাও শেয়ার করবেন? আমরা কি জানতে পারব, এইডস নিয়ে কাজ করার জন্য, ডিএনএ পরীক্ষাগার নিয়ে কাজ করার জন্য যে টাকাগুলো ফেরত গেল; যারা এর জন্য দায়ী সেইসব দুঃস্বপ্নবাজ আমলাদের কি শাস্তি হয়েছে? কেবল মুদ্রার একপিঠ দেখালে তো হবে না আমরা মুদ্রার অন্যপিঠও দেখতে চাই।
আর কেবল একজন স্বপ্নবাজকে নিয়েই দিনের পর দিন গল্প চালিয়ে না গিয়ে এই সব স্বপ্নবাজদের [১] কথাও বলুন। কেমন করে এঁরা সরকারি সহায়তা ব্যতীত পাটকে বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন, রেখেছেন।
সহায়ক লিংক:
১. পাট, ঘুরে দাঁড়ায় স্বপ্ন: http://www.ali-mahmed.com/2010/01/blog-post.html
আমার মনে হয় ডিএনএ পরীক্ষাগার এর জন্য দেশে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা প্রয়োজন, আদালতের সুষ্ঠ বিচারে এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম .......
ReplyDeleteThanks a lot for your valuable comment. Its true in our country there are no problems to get any subject with dream in a political banner, but it is very hard to find those who make true our dreams in real one.
ReplyDeleteAli bhai, once upon a time your Akhaura also famous for jute business. Hope for a golden time for our golden fibre again...........
সহমত@ashique
ReplyDelete"...once upon a time your Akhaura also famous for jute business."
ReplyDeleteবিখ্যাত ছিল মানে...পাটের কারণেই ব্রিটিশ আমলে এখানে সাদা চামড়া গিজগিজ করত। আমি যে বাসায় থাকি এটাও ব্রিটিশদের করা :)@Dr. Rumi