Tuesday, June 8, 2010

আপাদমস্তক একজন মন্দ মানুষ!

আনিসুল হক নামের এই মানুষটাকে নিয়ে আর লিখব না বলে ঠিক করেছিলাম। কারণ আমার উপর চাপ পড়ছে। চুতিয়া শব্দটা লেখার প্রতি আমার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে, এটা লিখতে পারছি না বলে চাপটা আরও তীব্র হচ্ছে। এটা লিখতে পারলে আরাম পেতাম।

লেখালেখি নিয়ে এই মানুষটার চুরি-চামারি নিয়ে আলোচনা করা বৃথা। যারা প্রথম আলোর আদিপর্ব ভোরের কাগজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাঁরা জানেন এ নতুন কিছু না। সম্প্রতি তিনি নিজেকে প্রথম সাক্ষাৎকারী [১]... ইত্যাদি বলতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। ধারণা করা হয়েছিল মানুষটা খানিকটা লজ্জিত হবেন, ভুল স্বীকার করবেন। এ দুরাশা [২]!

আজকে প্রথম আলো নামের তাঁর পত্রিকায়(!) 'ভারী পর্বতের হালকা দিকগুলো' [৩] নামের লেখায় লিখেছেন,
"ফেসবুকে স্ট্যাটাসে চমৎকার একটা লেখা বেরিয়েছিল। আমি একটু সম্পাদনা-পরিমার্জনা করে সেটা এখানে উদ্ধৃত করছি।
'বৎস, তুমি কি বিশ্বাস করো, মুসা এভারেস্টে উঠিয়াছে?', 'গুরু, মুসা কি একা উঠিয়াছে?'..."

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ফেসবুকে স্ট্যাটাসে চমৎকার একটা লেখা বেরিয়েছিল... বেরিয়েছিল মানে কি, কোত্থেকে বেরিয়েছিল? ফেসবুক একটা পাইপ নাকি, এক অংশ দিয়ে অসংখ্য শব্দ প্রবেশ করালে অন্য অংশ দিয়ে আস্ত একটা লেখা বের হয়! এই স্ট্যাটাস নামের জিনিসটা কে লেখে? এটা কি ঠাঠারি বাজারের রাস্তায় পাওয়া যায়!

নাকি এটা আমায় বিশ্বাস করতে হবে আনিসুল হক ফেসবুক নামের জিনিসটা বোঝেন না? অবশ্য এমন কোন কথা নেই এই গ্রহের তাবৎ মানুষ ফেসবুক কি এটা বুঝে বসে আছেন। না বুঝে থাকলে এই নিয়ে আমার কোন কথা ছিল না।
আনিসুল হক ফেসবুক জিনিসটা ভালই বোঝেন, কেমন করে এটার ব্যবহার করতে হয় এই সম্বন্ধেও সম্যক জ্ঞান তাঁর আছে। তিনি কেবল ফ্রেন্ডই যোগ করেন না, বিয়োগও করেন। মুকুল নামের একজন লেখককে তিনি তাঁর বন্ধুর লিস্ট থেকে ছাঁটাইও করেছিলেন। বেচারা মুকুল, আনিসুল হকের মতো একজন বন্ধু হারালেন, আনিসুল হককে নিয়ে রাসেল পারভেজের একটা সমালোচনা শেয়ার করতে গিয়ে। মুকুল বেচারা 'ইয়াতিম' হয়ে গেলেন!

আনিসুল হক ওই স্ট্যাটাসের সবটা তাঁর লেখায় শেয়ার করতে পারলেন কেবল পারলেন না আরিফ জেবতিক নামটা পড়তে। নাকি এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে তিনি ইংরাজিতে নামটা বানান করে পড়তে পারেননি। আহা, সোজা তো। এ আর আই এফ, A-r-i-f  J-e-b-t-i-k.
নাকি আপনার ধারণা, ওয়েব সাইটের সমস্ত লেখালেখিই গণিমতের মাল? এটা কি আপনাদের পৈত্রিক তালুক, নাকি আপনাদের যুদ্ধ জয়ের নজরানা, গণিমতের মাল?
আপনারা প্রিন্ট মিডিয়ার লোকজনরা কি ধরেই নিয়েছেন, দয়া করে এখানকার একটা লেখা ছাপিয়ে আমাদের উদ্ধার করবেন, আবার লেখকের নাম!

আর 'আমি একটু সম্পাদনা-পরিমার্জনা করে সেটা এখানে উদ্ধৃত করছি...' , আপনাকে কে অনুমতি দিল এটা সম্পাদনা-পরিমার্জনা করার? আপনি কি সব জায়গায়ই এই মাতব্বরিটা করে থাকেন? পত্রিকায় এটা করে করে অভ্যাসটা খারাপ হয়ে গেছে, না?  হাত চুলকায়?
আপনি কী রবীন্দ্রনাথের লেখাও সম্পাদনা করে থাকেন নাকি? আপনিই কি সেই লোক যে রবীন্দ্র সঙ্গীতও রচনা করে থাকে?
আরিফ জেবতিকের এই স্ট্যাটাসটা, ওই লেখাটা অনেকেই পছন্দ করেছিলেন, আমি নিজেও। এখানে কোথায় অশ্লীল, অমার্জিত, অভব্য শব্দ আছে? এটা পরিমার্জনা করার অনুমতি কে দিল আপনাকে? এটা কে লিখেছে এটা যখন আপনি জানে না তাহলে আপনি তো আরিফ জেবতিক নামের মানুষটার সম্বন্ধেই জানেনই না, তাহলে?

নাকি বাংলা সাহিত্যের ভুবনে সাহিত্যের দন্ডটা আপনি ধরে রেখেছেন? অবশ্য আমরা জানি, আপনার লেখা বইগুলো আপনি নিজেই লিখেছেন; এই নিয়ে আমাদের কোন সংশয় নাই, যেমন নাই আপনার বইয়ের বিজ্ঞাপনও আপনি নিজেই দেন [৪] এটা নিয়ে। কিন্তু তাই বলে সাহিত্যের দন্ডটা আপনার হাতে কে তুলে দিল?

আনিসুল হক, ভব্যতা শেখেন, কেমন করে একজনের ৩টা শব্দ নিলেও (ডয়চে ভেলে লিখেছে, মাহবুব মানিক লিখেছেন, ‘‘ওয়াও!!! ফেসবুক উম্মুক্ত!!!'') [৫] তাঁর নাম শেয়ার করতে হয়।
আনিসুল হকের কাছ থেকে চুরি-চামারিটা অন্যরাও অবলীলায় শেখে। মিডিয়া-ঈশ্বরে বসে বসে তিনি যখন এই সব করেন তখন অন্যদের না শিখে উপায় কী!

আমি পূর্বেও লিখেছিলাম, একজন ভাল লেখক, ভাল রাজনীতিবিদ, ভাল ডাক্তার, ভাল ম্যানেজার মানেই ভাল মানুষ না।

সহায়ক লিংক: 
১. প্রথম বাঙালী সাক্ষাৎকার গ্রহনকারী: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_27.html 
২. ভুল স্বীকার না করা: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_29.html 
৩. প্রথম আলো: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=12&date=2010-06-08 
৪. বিজ্ঞাপন: http://www.ali-mahmed.com/2010/02/blog-post_07.html 
৫. ফেসবুক নিয়ে ডয়চে ভেলে: http://ht.ly/1UCuO     

11 comments:

  1. আপনি আনিস ভাইয়ের নকের যুগ্যও না

    ReplyDelete
  2. জব্বার কাগুর মত এখন থেইকা ফেইসবুক স্ট্যাটাসও প্যাটেন্টের আওতায় আনতে হইবো মনে হয়!

    ReplyDelete
  3. "...নকের যুগ্যও না"
    নখের যোগ্য অযোগ্য এই কুতর্কে আমি আপনার সঙ্গে যাব না।

    তাঁর মত মানুষ হওয়াটা আমার জন্য দুঃস্বপ্ন, ভাবতেই আমি আঁতকে উঠি! @Anonymous

    ReplyDelete
  4. প্যাটেন্ট-ফ্যাটেন্ট এখানে বিষয় না, একজন মানুষের নাম দিতে এতো কাপট্য-শঠতা কেন এটা আমি বুঝি না!@মুকুল

    ReplyDelete
  5. আনিসুর রহমান এখনো রেফেন্সিং সেখেননি, কারণ তার গুরুরা এই ব্যাপারে তার মতই গা ছাড়া ভাব দেখিয়েছেন বলে মনে হয়. আপনার এই লেখা পরার পরে আমি আমর ব্লগ নিয়ে আরও সতর্ক হচ্ছি , বলা যায় না কোনদিন দেখবো আমার ব্লগ অন্য কারো নামে কোনো এক চুতিয়া কাগজে বহাল তবিযতে প্রকাশিত.... এদের জন্য মুক্ত মনা লোদের ভাব প্রকাশেও সংকা তৈরী হয়....

    ReplyDelete
  6. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  7. এদের কাছে ওয়েব সাইটে লেখালেখি হচ্ছে গণিমতের মাল! এরা যখন খুশী এখান থেকে লেখা নিয়ে ছাপিয়ে দেবে। মন খুব প্রসন্ন থাকলে দয়া করে লিখে দেবে, 'ওয়েব সাইট অবলম্বনে'।
    ভাবখানা এমন, এই সব লেখালেখি এদের পৈত্রিক সম্পত্তি। আর এখানে যারা লেখালেখি করেন তারা এদের তাবেদার- পত্রিকা অফিসের চাকুরে।

    আর এরা নিজেরা একেকজন জ্ঞানের ভান্ডার, কাত করলেই জ্ঞান গড়িয়ে পড়বে...। @Faysal

    ReplyDelete
  8. D vila ke tel,,,,

    ReplyDelete
  9. "D vila ke tel,,,,"
    কী বাচ্চাদের মত কথা!
    তেল এবং তেলাপোকার মধ্যে যেমন পার্থক্য আছে তেমনি ভিলা এবং ভেলের মধ্যে। ভিলা বানানটাও ঠিক করে লেখা গেল না, না?

    বাছা, ডয়চে ভেলেকে নিয়ে কি সমস্যা?
    ডয়চে ভেলের কোন অসঙ্গতির সূত্র কি হাতে আছে, বাছা। আমাকে পাঠালে আমি ডয়চে ভেলের অসঙ্গতি নিয়েও লিখব।
    আমি আমার লেখা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, লেখা আমাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটা বুঝতে পারাটা একটু কঠিন হয়ে গেল, না বাছা? @Anonymous (এদের সংখ্যাটা আজকাল বড়ো বেড়ে যাচ্ছে!)

    ReplyDelete
  10. সুব্রতJuly 23, 2010 at 10:20 AM

    'চুতিয়া' শব্দের ওপর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারটা বোঝা গেল না। কে নিষেধ করল? ওকে, আমি আপনার হয়ে বলে দিচ্ছি: চুতিয়া...চুতিয়া...তিন চুতিয়া!

    ReplyDelete
  11. আপনি বলেন, আপনাকে আটকাচ্ছে কে :) @সুব্রত

    ReplyDelete

আপনার যে কোন মত জানাতে পারেন নিঃসঙ্কোচে, আপনি প্রাসঙ্গিক মনে করলে।