Search

Friday, May 27, 2016

সুফি সাধক(!) এরশাদ কহিলেন ...!

সুফি সাধকের শিষ্যের কথা পরে বলছি আগে সুফি সাধকের কথা বলে নেই। জনাব, হো মো এরশাদ নামের এই মানুষটা এমন যে সুফি(!) তা আমরা ভাল করে জানতে পারি ক্ষমতা হারানোর পর। লাল-নীলের ছড়াছড়ি! লাল-নীল, লাল পানি-নীল ছবি।

ওনার বাসভবন থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ৬০ বোতল স্কচ হুইস্কি (দৈনিক আজকের কাগজ ০২.০৭.১৯৯১)। এক বোতল এক লিটার করে হলে চালু ভাষায় ১ মন মদ। এই মদ দিয়ে তিনি গোসল করতেন নাকি কুলি করতেন সেই তর্কে আর গেলাম না।

হাবিজাবি আরও অনেক কিছুর সঙ্গে আরও উদ্ধার হয়েছিল ২০০টি ব্লু-ফিল্ম (কাগজ ১৮.০৭.১৯৯১) যার অধিকাংশ আবার খুবই রেয়ার। এগুলোকে এডাল্ট মুভি বলতে পারলে আরাম পেতাম কিন্তু রেয়ার? আমার পাঠকের তালিকায় শিশু নেই বিধায় ‘রেয়ার ব্লু-ফিল্মের’ ব্যাখ্যায় আর গেলাম না।
এমন কোনও নোংরা দিক নেই যাতে এই মানুষটার হাতের ছোঁয়া নেই। অর্থ, নারী, পিতা হওয়ার কেলেঙ্কারী, এমনকি কবিতার নামে সাহিত্যও। [১] 

তৎকালে গঠিত কমিটি এরশাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ চিহ্নিত করে ৫৩৪টি মামলা করার সুপারিশ করেছিল। এরশাদ আদালতের রায়ে জেলও খেটেছেন। তো, এরশাদ নামের এই সুফি মানুষটার শিষ্য সেলিম ওসমান স্কুলের শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস [২] করাবার পর শিষ্যকে এরশাদ বলছেন, ’…সেলিম তো আল্লার ওলি হয়ে গেছো...’। [৩] 

কেবল এরশাদই না ইসলামের হেফাজতকারী হেফাজতে ইসলামের বাবুনগরীও সেলিম ওসমানের প্রশংসায় ষষ্ঠমুখ! সেলিম ওসমানকে নিয়ে গাওয়া হয়েছে ইসলামী সঙ্গিতও।
 
যেখানে বলা হচ্ছে, সেলিম ওসমান হযরত ওমরের উত্তরসূরি...!

তো, সব দেখে আমাদের আর দ্বিমত থাকার সুযোগ নেই যে সেলিম ওসমান আকাশ থেকে নেমে এসেছেন আমাদেরকে উদ্ধার করার জন্য। এমন একজন মানুষের মুখের ভাষা আমাদের চেয়ে অনেকখানি আলাদা হবে এতে অবাক হওয়া কিছু নেই।
এই ভিডিওটির সূত্র: www.bdnews24.com

১. মুবারকবাদ-নিন্দাবাদ: http://www.ali-mahmed.com/2009/03/blog-post_09.html
২. তোমার শবযাত্রায়: http://www.ali-mahmed.com/2016/05/blog-post_18.html 
৩. হেফাজতের পর এবার...: http://tinyurl.com/zsd7epq

Saturday, May 21, 2016

আবদুন নুর তুষার, 'গোলমালেষু'...

আবদুন নুর তুষার নামের মানুষটার মধ্যে কোথায় যেন একটা অমায়িক গোলমাল আছে। বিজয় এবং অভ্রের সমস্যার সময় আমরা যখন জব্বার ভাইয়ার লোভের লকলকে জিব দেখে আঁতকে উঠে তীব্র প্রতিবাদ করি তখন তুষার সাহেব কোনও এক বিচিত্র কারণে আজব এক যুক্তি দেন, ‘"…যদি সফটওয়্যার দিয়ে বাংলা লিখতে গেলে সেই সফটওয়্যারটি ফ্রি হতেই হবে, এটি আমরা বলি, তাহলে কলম দিয়ে বাংলা লিখতে গেলে, সকল কলম ফ্রি করে দেয়া উচিত৷..."[১]
এরপর এই মানুষটাকে আমার স্রেফ একটা ভাঙ্গাচোরা রোবট মনে হয়। যার কাছে ভাষা, দেশ এই সব আবেগের স্থান নেই।

মানুষটার মধ্যে ভারী গোলমাল মনে হয়েছিল বহু বছর পূর্বে তখনই যখন ‘শুভেচ্ছা’ নামের নিজের অনুষ্ঠানে পথশিশুর কথা বলে ভেউভেউ করে কান্না করছিলেন। দৃশ্যটা রগরগে নাটককেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। আহা, কেউ কী আবেগপ্রবণ হবে না? হবে, হবে না কেন! কিন্তু অনুষ্ঠানটা লাইভ ছিল না যে কেউ ফোনে বলল, আপনাকে … করতে চাই আর নিরুপায় দর্শক হাঁ করে শুনল।

প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে যখন খুন করা হলো তখন বুদ্ধিজীবী তুষার ফেনিয়ে-ফাপিয়ে বলা শুরু করলেন দীপন কেমন-কেমন করে ধর্মীয় অনুশাসন পালন করতেন। বাহ, যেন ধর্মীয় অনুশাসন পালন না-করলে একজন মানুষকে খুন করলে বিশেষ সমস্যা নেই!

যাই হোক, উনি ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন শিক্ষককে কুৎসিত অপমান করার পর যারা নিজের কানধরা ছবি দিচ্ছেন তাদের তীব্র সমালোচনা করে। কেন রে বাপু, সমস্যা কী! প্রতিবাদের ভাষা একেকজনের কাছে একেক রকম। নির্মেলেন্দু গুণের মত কেউ তাকে পুরস্কার না-দিলে লাজহীন মানুষের মত হইচই করেন [২] আবার কেউ বা প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে না-খেয়ে অনশন করেন। অবশ্য তুষার স্যার না-খেয়ে অনশনের ধার ধারবেন না কারণ এটা তার গা-গতরে সইবে না।
জনাব তুষার তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, "…একজনকে নগ্ন করা হলো,তার প্রতিবাদে সবাই যদি নগ্ন হয়,তাহলে নগ্নতার যে লজ্জা বা মানসিক যন্ত্রনা সেটা কমে যায়।…"
ওহো, আপনি তো দেখি ‘বাত কা বাতাঙ্গার’ বানিয়ে ফেলছেন। কথা হচ্ছিল উপরের অংশ নিয়ে আপনি সরাসরি নীচের অংশে চলে গেলেন- একেবারে ডাইরেক্ট অ্যাকশন। আর আপনি যে এই অংশটুকু লিখেছেন, "…শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষা বিষয়ে গোটা দেশ বিশেষ করে নেট ব্যবহারকারী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রত্যেকের কানধরা ছবি পোষ্ট করা হচ্ছে…।"
শোনো কথা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রত্যেকে- কেউ কি বাদ নেই? অন্তত আমি যে নেই এটা বলতে পারি। তো,আক্ষরিক অর্থে এই কথাটা গ্রহণ করলে মশিয়ে তুষারকে বুরবাক বলাটাই সমীচীন।

তুষার মহোদয় লিখেছেন, "…ছিনতাই নিয়ে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে কৌতুক করা হয়। (আমি কখনো শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে এটা করি নাই। শুধু তাই না, বুয়া , দারোয়ান, রিকশাওয়ালাদের নিয়েও কোন কৌতুক করি নাই)…।"
এই নিয়ে আপনার পোঁ ধরা কেন, বাপু? ছিনতাই নিয়ে কৌতুক থাকলে কৌতুক করতে ‘অসুবিদা’ কোথায়, স্যার! আমার এক পরিচিত মানুষ রিকশা করে যাচ্ছিলেন। বাচ্চা কোলে। বাচ্চা কাপড় নষ্ট করে দিয়েছে। নতুন কাপড় ফেলতে বড়ো মায়া তাই একটা পোঁটলায় ঢুকিয়ে ফেললেন। ছিনতাইকারী পোঁটলা নিয়ে উধাও। এই নিয়ে রসিকতা করলে কারও রস শুকিয়ে যাওয়ার তো কথা না।
আর আপনি যে বললেন, আমি কখনও শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে বুয়া, দারোয়ান, রিকশাওয়ালাদের নিয়েও কৌতুক করি নাই- জ্বী, আপনি বড়ো ‘ভালু লুক’! আপনার দয়ার শরীর- ইয়ে, কৌতুকের কথা বলছেন, আহা, শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে আপনার ভেউভেউ করে কান্নার চেয়ে বড়ো কৌতুক আর কী হতে পারে!

তুষার মহাশয় আরও লিখেছেন, "…বোন ধর্ষিত হলে কি আমরা সবাই ধর্ষিত হয়ে ছবি পোস্ট করব?..." আপনি আসলে হরেদরে সব সমান দেখেন বলেই বোধহয় ন্যায়-অন্যায় গুলিয়ে ফেলেন। তাই কী অতি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান থেকেও ‘চেহারাবেচার’ টাকা অবলীলায় নেন?
ওহো, এতো মুশকিল হলো দেখি! কেউ লিখল, ‘পিতা, তোমার শবযাত্রায়…[৩]। ব্যস, ডাগদর সাহেব, শিক্ষক শ্যামল কান্তির গা টিপেটুপে ডেভিডসনের বই ঘাঁটাঘাঁটি করে বিমল আনন্দে মাথা দুলিয়ে বলবেন, ‘ইউরিয়া’, মানুষটা এখনও জীবিত। বটে, কত বুদ্ধি ঘটে!
বা হেলাল হাফিজ যখন লেখেন, "…এক জীবনে কতটা আর নষ্ট হবে/ এক মানবী কতটা আর কষ্ট দেবে…।" তখন পন্ডিতবর তুষার ক্ষেপে যাবেন। ক-ক্ক-ক্কী, এক জীবন মানে? আমাদের আবার কয়টা জীবন, হে? আমরা কী হিন্দু যে আমাদের অনেক জীবন? হাফিজ ব্যাটা…। ব্যস, এরপর হয়তো তুষার স্যারের চেলা-চামুন্ডা বাহিনী এই নিয়ে গ্রহ মাতাবেন। হেলাল হাফিজকে ধর্মীয় ট্যাগ লাগিয়ে দিলে আটকাচ্ছে কে।

অন্যত্র মহাত্মন তুষার লিখেছেন, "…জর্জ বুশকে যদি জুতা মারা যায়,তাহলে অপমানকারীকে জুতা দেখানো যাবে না কেন? তার কানধরা কুশপুত্তলিকা বানানো যাবে না কেন? তার কুশপুত্তলিকায় চড় মারা যাবে না কেন?...নিজের নাক কেটে অপমানে সমান নয় বরং অপমানকারীর নাক বরাবর মুষ্টি প্রয়োগ করেন।"
এই মানুষগুলো যে কোন ভুবনে বাস করেন! যেন অন্য গ্রহ থেকে ভূর্জপত্র গাত্রে ভূর্লোকে তসরিফ গ্রহন করেন। এই দেশের বুদ্ধিজীবী টাইপের মানুষগুলোর বিকট এই এক সমস্য। এরা চোখে কালোর চশমা লাগিয়ে অন্ধ সেজে থাকেন। তখন অমায়িক ভঙ্গিতে সাদাকে কালো-কালোকে সাদা বলতে পারেন। ‘নাক বরাবর মুষ্টিঘাত’, এই সব শব্দশেল পড়তে ভালই লাগে। যে সংসদ সদস্য এই কর্মকান্ড করেছেন তার সম্বন্ধে আগুনমানুষ তুষারের কী কোনও প্রকারের ধারণা আছে?

এই সংসদ সদস্য সম্বন্ধে খানিকটা ধারণা পাওয়া যাবে এক সাংবাদিকের সঙ্গে ফোনালাপের অডিও ট্র্যাকটা শুনলে, আহ, মধু-মধু! আর এই সংসদ সদস্য কোন পরিবারের এটা কি তার জানা আছে? ইতিপূর্বে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এই পরিবার সম্বন্ধে কি বলেছেন এটা কি বিস্মৃত হয়েছেন, হের তুষার? "...রাজনৈতিকভাবে ‘হেয়’ করতে ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে দাবি করে সে বিষয়ে জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।..."
এরপর আমাদের মত সাধারণ মানুষের দাঁড়াবার আর জায়গা থাকে না। 'সজাগ' থাকতে থাকতে আমাদের মধ্যে তীব্র হতাশা কাজ করে বুকের গহীন থেকে অক্ষমতার হাহাকার বেরিয়ে আসে। তখন আমরা নিজের কান ধরব, নাকি ...!


কোন দেশে যে তুষারের মত লোকজনরা বসবাস করেন! যে দেশের ঘটনা রগরগে মুভিকেও হার মানায়। ফরিদপুরের যুবলীগ নেতা আসলামের ফাঁসির আয়োজনের সমস্ত কাজ সমাপ্ত। মাত্র একদিন পূর্বে সাজা মওকুফ করা হয় রাষ্ট্রপতির দয়ায়। প্রথমবার নাকচ হলেও দ্বিতীয়বার তা মঞ্জুর করা হয়! আমরা হতভম্ব বাকহীন হতেও ভুলে যাই। মিয়া, গ্যলারিতে পপকর্ন নিয়ে খেলা দেখে চ্যাটাং চ্যাটাং বাতচিত করা খুবই সোজা। যান না, নারায়নগঞ্জে গিয়ে দুম করে একটা ঘুষি মেরে আসুন না। আমরাও হাত খুলে লিখব, ওই আসে অগ্নিপুরুষ।
ওহে অগ্নিপুরুষ, তোমারই অপেক্ষায়…। 

সূত্র:
৩. পিতা, তোমার শবযাত্রায়: http://www.ali-mahmed.com/2016/05/blog-post_18.html

Wednesday, May 18, 2016

পিতা, তোমার শবযাত্রায়…!

বলা হয়ে থাকে পিতার কাঁধে সন্তানের শবের চেয়ে ভারী আর কিছু নাই। কিন্তু সন্তানের কাঁধে পিতার শব পলকা বুঝি! যে বাপটা নিজের পায়ে সন্তানের পা রেখে হাঁটা শিখিয়েছিলেন অথচ সেই সন্তানটাই বাপের শব কাঁধে নিয়ে হাঁটা ভুলে যায়। পা যে চলে না! বুক ভেঙ্গে আসা কান্না চেপে পা টেনে-টেনে বাপের শব টেনে নিয়ে যাওয়া। শেষমেষ কী আর কান্না থামে, শ্লা। বাথরুমের ট্যাপ ছেড়ে দিয়ে হাউমাউ করে কাঁদা। নোংরা জলের সঙ্গে মিশে যায় সন্তানের চোখের জল।

এমনিতে আমরা বাবার খুব একটা নাগাল পাই কোথায়? তাঁর অঢেল সময়ই বা কই? বাবারা যখন চলে যান কাজে তখন আমরা ইশকুলে। আহা, তাই বলে বাবাদের কাজ থেমে থাকবে নাকি? হাতে ধরে-ধরে শেখান শিক্ষক নামের যে মানুষটা কখন যে এই মানুষটা বাবার জায়গা দখল করে ফেলেন; দূর-দূর, আগেভাগে তা টের পাওয়ার যো আছে বুঝি!
যে শিক্ষককে বালকবেলায় দৈত্যাকার মনে হত ‘সাবালকবেলায়’ তিনিই আমার কাঁধ ছাড়াতে পারেন না। তাতে কী, এখনও তাঁর পাশে দাঁড়ালে অহেতুক ভয়ে বুক কাঁপে! মরণ, বুক কাঁপার কিছু নেই- মানুষটার মায়াভরা গলা, 'তুমার কিতা হ্ইছে, মুখ এমন শুকনা ক্যান'? চশমার কাঁচ ঝাপসা হয়, হুদাহুদি- অহেতুক।

আমাকে খুনি বানাবার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে আমার সামনে পিতাসম এই মানুষটাকে চরম অপমান করা, নগ্ন করে ফেলা। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি। পরম করুণাময়, আমাকে যেন চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখতে না-হয় যে আমার পিতাসম শিক্ষককে কেউ চরম অপদস্ত করছে- তারচেয়ে মৃত্যু যে ঢের শ্রেয়।

আজ এই ভিডিওটা দেখে আমার কেবল মনে হচ্ছে এই যে শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানো হচ্ছে- এরপর ওই মানুষটা একটা মৃতমানুষ! কাগজে-কলমে হয়তো তিনি বেঁচে থাকবেন কিন্তু বাস্তবে একটা গলিত শব! তাঁর শত-হাজার ছাত্র,তাঁর পরিবারের প্রিয়মানুষগুলো গলিত শবটার দিকে তাকাবে কেমন করে, গলা বেয়ে খাবার নামে বুঝি? শবের দিকে তাকিয়ে গপগপ করে ভাত খাওয়া তো কোনও কাজের কাজ না…।

*ভিডিও ঋণ: shorif uddin shobuj

Monday, May 16, 2016

‘আমাগো কোবি’- কবিবর, শ্রীনির্মলেন্দু গুণ।

তিনি কেবল কবিবরই না শিকারিবরও বটে। তিনি সমকামী সেটা তাঁর সমস্যা কিন্তু যখন সদর্পে বলেন, ‘আগে আমি শিকার ছিলাম পরে শিকারি হয়েছি’, তখন ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি, কারণ…? ভাগ্যিস, গুণদাদা কেবল এটা জানিয়েই ক্ষান্ত দিয়েছেন অন্য শিকারিদের মত (আহা, এমন পোজ তো আমরা বিস্তর দেখেছি বাঘ শিকার করে বাঘের উপর একটা ঠ্যাং তুলে দিয়ে শিকারি সাহেব ক্যামেরার সামনে  গোঁফ উচিয়ে দাঁড়ান) ওমন ভঙ্গিতে একটা ফটো তুলে জাতির উদ্দেশ্যে ছুড়ে দেননি!

এমনিতে বড় অভিমানী এই কবি! একবার গণভবনে দাওয়াত না পেয়ে কবি সাহেব শিশুর ন্যায় গাল ফুলিয়ে রাখলেন। আহা, কী মায়াই না হয়েছিল শ্রীপদপঙ্কজ শ্রীনির্মলেন্দু গুণকে দেখে। আহারে-আহারে…! তখন বাবুর চোখে চোখ রাখাই দায়।
আহা, কবির চোখে চোখ রাখি কেমন করে? ছি-ছি-ছি, কবিসম্রাটকে এহেন অপমান! কবিসম্রাট হওয়ার জন্য কত ত্যাগই না স্বীকার করতে হয়েছে এই মানুষটাকে। আহা, আহা- এক চোখে জল এক চোখে পানি চলে আসে। আমেরিকান কবি গ্রেগরী করসো যখন আমাদের দেশ নিয়ে আমাদের মৃত মানুষদের নিয়ে অতি কুৎসিত কথা বলেন, জঘন্য আচরণ করেন তখন কবিসম্রাট গায়ের সঙ্গে মাথাও দোলান [১]

এই তো সেদিন, স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার পূর্বে কবিবর হইচই শুরু করলেন। আমি আরো ভাবলুম কবিবরকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে আর তিনি কেন এই পুরষ্কারটাই শর্ষীনার পিরকে বা র‌্যাবকে দেওয়া হয়েছে এই নিয়ে ফেসবুক মাতাচ্ছেন। ওয়াল্লা, ঘটনা তো এটা না। এমনিতে আমাদের কবিবর কেবল ফেসবুক দাপিয়ে বেড়ান এমনই না তিনি যে ভাষা ব্যবহার করেন আদর করে তাকে বলা চলে নোংরা 'শব্দশেল’! ‘খা…পোলা’ টাইপের [২] এই সমস্ত অতি কুৎসিত শব্দ প্রয়োগের পূর্বে অপদার্থ বখা ছেলেও দ্বিতীয়বার ভাববে।

তো, ফেসবুকের বরপুত্র একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। ওখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাকে উপেক্ষা করার বা কবি হিসাবে সামান্য ভাবার সাহস যার হয়, তাকে উপেক্ষা করার শক্তি আমার ভেতরে অনেক আগে থেকেই ছিল, এখনো রয়েছে। পারলে ভুল সংশোধন করুন। অথবা পরে একসময় আমাকে এই পদকটি দেওয়া যাবে, এই ধারণা চিরতরে পরিত্যাগ করুন’
এরপরই পদকদাতাদের চোখ খুলে গেল। তাঁরা তাঁদের ভুলটা বুঝতে পারলেন এবং কবিবর ‘পদকবর’ মানে পদকপ্রাপ্ত হলেন, এমনটা বলা হচ্ছে বটে কিন্তু সত্যটা হচ্ছে কবিবর স্বাধীনতা পদক ছিনিয়ে আনলেন।
কোবি, আমাগো কোবি বলে কথা…!
সহায়ক সূত্র:
১. চালবাজ: http://www.ali-mahmed.com/2012/10/blog-post_16.html 
২. গুণবান গুণ!: http://www.ali-mahmed.com/2012/11/blog-post_28.html