Search

Saturday, June 25, 2011

রক্তাক্ত রেহনুমা, পঙ্গু মানবাধিকার

আজকের অতিথি লেখক আরাফাতুল ইসলাম। তিনি লিখেছেন:

"রেহনুমা আহমেদ এর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের উপায় ই-মেল। আপা মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন খবর, কর্মসূচি ই-মেলে জানান। সৌভাগ্যক্রমে সেই ই-মেইল তালিকায় আমার ঠিকানাটাও আছে। তাই, আপার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ আমার।

যথারীতি সেই ই-মেইলেই জানতে পারি
, ১০ জুন ঢাকার জাতীয় জাদুঘরের সামনে লিমনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের জন্য ব়্যালির আয়োজন করছেন তাঁরা। ব়্যাবের গুলিতে বাম পা হারিয়েছে লিমন। মাত্র ১৬ বছর বয়সি এই তরুণ এখনো জানে না তার ‘অপরাধ’ কী! জানে না সমাজের সচেতন মানুষেরা, গণমাধ্যমও। সেই লিমনকে সমর্থন জানানো তাই নাগরিক কর্তব্যই মনে করি। ঢাকায় থাকলে আমিও আপার ব়্যালিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতাম।

রেহনুমা আপার সঙ্গে সরাসরি দেখা করার সুযোগ হয়েছিল সেই ২০০৭ সালে। চমৎকার ব্যক্তিত্ব তাঁর। খুব সুন্দর গুছিয়ে কথা বলতে পারেন। মনে আছে, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের অপব্যবহার বিষয়ে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। নৃবিজ্ঞানী হিসেবে চমৎকার বলেছিলেন আপা। একইসঙ্গে আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর বাংলায় লিখেও পাঠিয়েছিলেন।
মনে পড়ে, ২০০৯ সালে দৃকের প্রতিষ্ঠাতা, আলোকচিত্রী শহীদুল আলমকে আটক করেছিল ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। ‘'ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক’' এর হয়ে একটি কাজে সীমান্ত এলাকায় ছিলেন তিনি। তখন কোন কারণ ছাড়াই বিএসএফ আটক করে শহীদুল আলমকে। সেসময় এই বিষয়ে বেশ সক্রিয় ছিল দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম। আমরাও একাধিকবার যোগাযোগ করি রেহনুমা আপার সঙ্গে। তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়৷ আপার ই-মেল সহযোগিতা তখনও বেশ কাজে লেগেছিল।


ছবি ঋণ: বাংলাদেশ প্রতিদিন
দিনকয়েক আগে হঠাৎ এক বার্তাসংস্থার ছবিতে দেখি রেহনুমা আপাকে। মাথার ডান পাশ দিয়ে রক্ত পড়ছে।

তাঁর৷ ছবিটা আমাকে তীব্র হতাশায় ডুবিয়েছিল আমাকে। স্বাধীনতার চল্লিশ বছরের মাথায় বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিকের এরকম একটি আহত ছবি প্রত্যাশা করিনি!
তিনি কোন রাজনীতিবিদ নন। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে স্বাধীনভাবে নিজের মতামত প্রকাশের চেষ্টা করেছিলেন মাত্র। ইস্যু কনোকো ফিলিপসের সঙ্গে সরকারের বিতর্কিত চুক্তি। আপা মনে করেন, দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ভুলভাবে তুলে দেওয়া হচ্ছে বিদেশিদের হাতে, এজন্যই প্রতিবাদ। এমন প্রতিবাদীর উপর যখন কোন দেশের নিরাপত্তা বাহিনী নির্বিচারে হামলা চালায়, তখন মেনে নিতে হয়, সেই দেশে আসলে ‘গণতন্ত্রের প্রকৃত চর্চা’ নেই। সভ্য দেশের কোন গণতান্ত্রিক সরকার এভাবে মানুষের কণ্ঠস্বরকে চেপে ধরতে পারে না।

রেহনুমা আহমেদ কিন্তু দমে যাননি। এই তো সেদিন (১৭.০৬.১১) জাতীয় জাদুঘরের সামনে ছিলেন আপা। লিমনের পক্ষে তৃতীয় ব়্যালিতে। এভাবেই মানবাধিকার, নাগরিক অধিকারের জন্য লড়ে চলেছেন রেহনুমা আহমেদ। তাঁর এই সাহসিকতাকে আকুণ্ঠ সমর্থন জানাই।"

তথ্য সহায়তা:
Rahnuma Ahmed Injured:  http://www.shahidulnews.com/2011/06/rahnuma-ahmed-injured/ 
 
ব়্যাবের বর্বরতার জীবন্ত ‘মনোগ্রাম’ লিমন: http://arafatulislam.com/2011/06/08/%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%A8/ 
 
শহীদুল আলমকে ছেড়ে দিয়েছে বিএসএফ: http://www.dw-world.de/dw/article/0,,4335881,00.html 
 
*ছবি ঋণ, বাংলাদেশ প্রতিদিন: http://www.bd-pratidin.com/

3 comments:

Anonymous said...

shit! fuck my ass!!

Samsir said...

Baler ekta desh,,,,,

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

আপনার অনুভূতিটা আমি খানিক আঁচ করতে পারি। এমন একটা ছবি দেখে যে-কেউ ক্ষুব্ধ হবেন, আমি নিজেও।

তবুও বলি, আপনার প্রতিক্রিয়া বড়ো বেশী তীব্র। পাবলিক প্লেসে এমন মন্তব্য না-করাই সমীচীন। @Anonymous

বেচারা দেশকে গালি দিয়ে লাভ নাই- দেশ আসলে কেউ না, কিছু না।
কেবল টলটলে পানি। সমস্যা হচ্ছে পানি রাখার পাত্রে। আমাদের নষ্ট রাজনীতিবিদদের @Samsir