লোপার চোখে ত্রাস, তুমি নাকি সৈয়দ সাহেবকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছ?
ক্ক-কাকে?
সৈয়দ সাহেবকে।
ওইটা ফকিরন্নীর পোলা। সৈয়দ বংশের কলংক।
ফকিরন্নীর পোলা না আমিরের পোলা এটা তো আমি জানতে চাইনি। জুতা দিয়ে পিটিয়েছ কেন?
রাব্বি হাঁই তুলল, পাগল! জুতা দিয়ে পেটাব কেন! আমি কেবল বললাম ওইটা একটা ফকিন্নির পোলা। আচ্ছা, তুমি এই হাস্যকর খবর কোত্থেকে পেলে?
লোপা বিরক্তি নিয়ে বলল, সেটা আলোচনার বিষয় না, তুমি এটা করেছ কিনা জানতে চেয়েছি?
পাগল!
পাগল না ছাগল এই বিষয় নিয়ে তোমার সাথে এই আলোচনায় যেতে যাচ্ছি না।
পাগল না হলে কেউ এমন আজগুবি প্রশ্ন করে!
কথা ঘুরাবে না।
রাব্বি অবাক হতেও ভুলে যাচ্ছে সৈয়দ বাসের নামের এই মানুষটার মাথায় ষাড়ের বিষ্ঠা ছাড়া কি আর কিছুই নাই! জনে জনে কেমন করে এটা বলে বেড়াচ্ছে, এ্যা-এ্যা, আমাকে না, আমাকে না জুতা দিয়ে মেরেছে, ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা। অন্তত ঘুরিয়ে বলতে পারল না। রাব্বির মুখ এবার হাসি-হাসি, কোন জুতা দিয়ে পিটিয়েছি? চটি, না বুট জুতা, নাকি নাগরা?
ফাজলামো করবে না বলছি। খবরদার-খবরদার।
আচ্ছা যাও। তা কোথায় পিটিয়েছি?
অফিসে।
অফিসে সবার সামনে এই কান্ড করা কী সম্ভব?
সম্ভব-অসম্ভব নিয়ে তো কথা হচ্ছে না।
আজিব, কেউ দেখল না। ওই ফকিন্নির পোলা বলল আর হয়ে গেল, আজিব! হারামজাদা সবাইকে এটাই বুঝিয়েছে, বুঝলে।
তাইলে তোমার নামে থানায় জিডি করল কেন?
জিডির কপি আমার হাতে আছে। দেখাও কোথায় লেখা আছে একে জুতা দিয়ে পেটানো হয়েছে?
বেশ, লেখা নাই। কিন্তু অহেতুক তোমার নামে কেউ থানায় জিডি করবে কেন?
রাব্বির গলায় উষ্মা, আহ, বললাম না জিডির কপি আছে আমার কাছে। ওখানে লেখা আছে, বানচোত অভিযোগ করেছে, আমি নাকি তাকে প্রাণনাশের-জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছি। আরে বানচোত, কিভাবে তোকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছি এটা লিখবি না, গলায় চিপা দিয়েছি, নাকি ছাদ থেকে ফেলে দিতে গিয়েছি? এটা না বললে আইন বুঝবে কেমন করে!
লোপা বরাবরের মতই বিরক্ত হলো, রাব্বি, তোমাকে এটা বলে বলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি তোমার মুখে এই সব ভাষা শুনতে ভাল লাগে না। আমি জানতে চাইছিলাম উনি তোমার নামে জিডি করলেন কেন?
এইটা আমাকে না জিজ্ঞেস করে ওই বানচোতকে জিজ্ঞেস কর।
তুমি মুখ আবার খারাপ করছ কেন, আশ্চর্য!
মুখ খারাপ করব না তো কবিতা বলব? ‘বানচোত-বানচোত, করছো তুমি কী, এই দেখো না কত্তো সুন্দর কবিতা লিখেছি’।
মুখ খারাপ করবে না। খবরদার বলছি, খবরদার।
আচ্ছা যাও মুখ খারাপ করব না। ছাপার অক্ষরে বলি তাহলে, আসতে আজ্ঞা হউক, বসতে আজ্ঞা হউক। সৈয়দ সাহেবকে বসতে পিঁড়ি দিতে আজ্ঞা হউক।
তুমি কি আমার সঙ্গে রসিকতা করছ!
আরে না। শোন, মিথ্যা জিডি করে আমাকে ফাঁসাতে চেয়েছে। সত্য হলে তো এটা নিয়ে তদন্ত হত, থানা থেকে আমাকে ডাকত। উল্টো আমি আরও নিজ থেকে থানায় যোগাযোগ করেছি। ওদের বলেছি বিষয়টা তদন্ত করে দেখতে কিন্তু থানাওয়ালারা উল্টা বলছে, যে জিডি করেছে সে নিজে তদন্ত না চাইলে আমরা অযথা এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে চাই না।
এবার লোপা খানিকটা স্বস্তির শ্বাস ফেলল, যাক, শুনে খানিকটা ভাল লাগছে।
রাব্বি এবার খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে বলল, না, এতটা নিশ্চিন্ত হওয়ার কারণ নাই।
কেন?
আরে বান-।
আহ, রাব্বি!
সরি।
কি বলছিলে?
ও থানায় জিডি করার পাশাপাশি র্যাবকেও জানিয়েছে। র্যাব তাদের অফিসে আমাকে ডাকিয়েছে।
লোপা ভীত চোখে তাকিয়ে আছে।
রাব্বি বলল, আহ, অমন করছ কেন?
লোপা সত্যি কথাই বলল, ভয় লাগছে।
ভয়ের কী আছে।
তোমার ভয় করছে না?
না। আমি তো কোন অন্যায় করিনি। শুধু শুধু ভয় পাব কেন!
রাব্বি, র্যাবের নাম শুনেই আমার বুকটা কেমন করছে!
আরে না, এরাও তো আমাদের মত মানুষ। সত্যটা বুঝিয়ে বললে নিশ্চয়ই বুঝবে।
তারপরও।
তার আর কোন পর নাই।
কবে যাচ্ছ দেখা করতে?
কাল। ১২টায়।
বেরুবে কটায়?
হাতে সময় নিয়ে যাই। সময় ১২টায় যখন। অবশ্যই শার্প।
রাব্বি, তুমি কি সাথে একজন লইয়ারকে নিয়ে যাবে?
ধুর, হিন্দি সিনামা নাকি!
প্লিজ, অন্তত সাথে কাউকে নিয়ে যাও।
আরে না।
প্লিজ রাব্বি।
আহ-।
প্লিজ।
শোন, ডাকিয়েছে আমাকে, সাথে কাউকে নিয়ে গেলে এরা হয়তো অন্য রকম অর্থ করবে। আমার মনে তো কোন কু নাই, আমি কোন অন্যায় করিনি। একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে ওখানে যাই এটাই ভাল হবে।
লোপা চোখে এক অজানা আতংক নিয়ে তাকিয়ে রইল।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Tuesday, October 19, 2010
জীবনটাই যখন নিলামে: ৯
বিভাগ
জীবনটাই যখন নিলামে
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment