বিশু ফোনের ওপাশ থেকে গলা ফাটাচ্ছে, ‘হ্যালো-হ্যালো।’
কল্লোল এপাশ থেকে বলল, ‘ষাড়ের মত চেঁচাচ্ছিস কেন, আস্তে বল। আরেকটা কাজ করতে পারিস, ফোনটা বিচ্ছিন্ন করে কথা বল!’
‘বাছাল, এতক্ষণ ধরে চেষ্টা করছি, রিং যাচ্ছে কেউ উঠাচ্ছে না, ঘটনা কি! জামি আছে নাকি তোর ওখানে?’
‘ইয়েস-ইয়েস।’
‘তোকে বলেছে কিছু?’
‘ইয়েস-ইয়েস, বলেছে তুই নাকি কী হাতির ডিম দেখাবি। অই-অই, অইত, তুই আবার কী দেখাবি, কুমড়া দেখেও বলিস 'উই-ই মা'।’
‘কল্লোল মার্ডার হয়ে যাবি, জাষ্ট মার্ডার।’
‘হুপ।’
‘তোর সঙ্গে কথা বলতে চাই না, জামিকে ফোন দে।’
কল্লোল মাউথপীসে হাত চাপা দিয়ে জামিকে হাসতে হাসতে বলল, ‘বিশু তোর সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছে। বী কেয়ারফুল, আগুন হয়ে আছে কিন্তু।’
‘কি খবর শিশু মিঞা, টেলিফোন করাকরি কেন আবার, আমরা এই মাত্র তোর ওখানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরুচ্ছিলাম।’
‘জামি, হোয়াট ননসেন্স, তোরা কি ফাজলামির দোকান খুলেছিস। আর এই সব কী, নাম বিকৃত করিস! ’
‘কী বলছিস, বিকৃত করলাম কোথায়! তুই শিশু তাই শিশু বললাম, ভুল বলেছি।’
ওপাশ থেকে বিশুর দাঁত ঘষার শব্দ ভেসে এলো। জামি হাসি চেপে বলল, ‘বিশু, বাপ, এমন করে না। দাঁত এ অত্যাচার সইবে না, খুলে আসবে।’
‘জামি, ইউ রাস্কেল, টেলিফোন রাখছি।’
‘করিস কী-করিস কী, ইয়ে ফোন করলি কি জন্যে সেটা বল?’
‘এটা জানাতে, আমার সঙ্গে যে প্রোগ্রাম ছিল, বাতিল। জরুরী একটা কাজে এখুনি বেরিয়ে যাব।’
‘শালা, তুই কি ভাঁড়, থ্রি ষ্টুজেসের ওয়ান ষ্টুজ নাকি! আমাদের এভাবে খবর দিয়ে-।’
‘সরি, জরুরি কাজ না হলে-।’
‘তা জরুরি কাজটা কি?’
‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করব।’
‘কা-কার সঙ্গে! কিক-কি জন্য!’
‘আমাদের দেশের জাতীয় ঋণ-লেটেস্ট মাথাপিছু যে ঋণ আসে তা আমি জমা দিয়ে দিতে চাই। আমিই হব এ দেশে প্রথম 'জাতীয় ঋণমুক্ত ব্যক্তি'।’
জামি হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠতে পারছে না। সামলে নিয়ে বলল, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর কে, জানিস?
‘খোরশেদ আলম।’
‘তুই খোরশেদ আলমকে কেমন করে চিনিস?’
‘চিনি না, তবে নোটের গায়ে নাম ছাপানো দেখলাম।’
‘নোটটা কত সালে ছাপানো হয়েছে, তুই জানিস রে হাঁদারাম? একজন কী আজীবন গভর্ণর থাকে!’
‘আগে তো যাই, তারপর দেখা যাবে।’
জামি কাঁধ ঝাঁকাল, ‘কী আর করা, প্রোগ্রাম যখন হয়েই গেছে চল আমরাও যাই।’
বিশু বলল, ‘মাথা খারাপ, এত বড় লোকের কাছে যাচ্ছি তোদের নিয়ে যাই আর কি! যেখানে সেখানে একপাল মূর্খ নিয়ে ঘুরি।’
‘হ্যালো, হ্যালো বিশু।’
‘হ্যাঁ, বল শুনছি।’
‘বিশু, তোর মুখে করি হিসু।’
‘জামি, হারামজাদা আজই আমার হাতে খুন হয়ে যাবি, জাষ্ট মার্ডার।’
জামি এর উত্তর না দিয়ে ধড়াম করে রিসিভার নামিয়ে রাখল। রাগে গরগর করে বলল, ‘বানচোত, বলে কী খুন করে ফেলবে। একটা চড় দিলে ছটা দাঁত খুলে আসবে, প্যান্ট নষ্ট করে ফেলবে। হারামজাদার কী সাহস, বলে কি না একপাল মূর্খ নিয়ে ঘুরি।’
কল্লোল ওপাশের বক্তব্য আন্দাজ করে উঠতে পারছিল না, এবার সবগুলো দাঁত বেরিয়ে পড়ল, ‘জামি, তোকেও মৃত্যুদন্ড দিয়েছে?’
‘হুঁ, আজই নাকি আমার শেষদিন।’
‘এটা ওর দু-নম্বর মুদ্রাদোষ হয়ে গেছে। বাদ দে, এখন কি করবি?’
‘কি আর করবো, অসহ্য রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে, দিনটাই মাটি। বাসায় চলে যাব। দেখি একটা ম্যারাথন ঘুম দেয়া যায় কিনা। শোন, ভুলিস না, বিকেলেই কিন্তু যাব বিশুর ওখানে। হারামজাদাকে সাইজ করতে হবে।’
...
বিকেলে বিশুকে স্টুডিওতেই পাওয়া গেল। ছবি আঁকছে। জামি উঁচু স্বরে বলল, ‘হ্যালে টিস্যু, কী হচ্ছে?’
‘জামি, প্লিজ ডিস্টার্ব করিস না, ছবি আঁকছি। প্লিজ এখন যা, আমাকে ছেড়ে দে।’
‘ওয়েল টিস্যু, রিমেম্বার, গড ইজ অলমাইটি ইন স্কাই লাইন, অ্যান্ড মাইটি জামি ইন বাংলাদেশ। ছেড়ে দেব আবার কিরে লেদার হেড। কোন ছাড়াছাড়ি নাই।’
‘প্লিজ তোরা এখন যা, পরে আসিস। সামনে আমার একক প্রদর্শনী, একগাদা ছবির শেষ করতে হবে।’
‘তোর কাজ তুই কর, আমরা বসে বসে দেখি।’
‘খামোখা বসে থাকবি কেন, বিকেলটা নষ্ট না করে কোথাও থেকে ঘুরে আয়।’
‘বেশ, দে আমিও কিছু আঁকি।’
‘ছ্যাহ, একটা রেখা সোজা টানতে পারিস না, তুই ছবি আঁকবি, তু-ই!’
‘ইয়েস, তবে কি আঁকব এটা এখন বলব না। সময় হলে দেখবি। ব্যবস্থা করে দে নইলে তোর আঁকা ছবির উপর-।’
বিশু খুঁজে বাতিল রং ক্যানভাস জামির সামনে ছুঁড়ে ফেলে চা’র কথা বলতে ভেতরে গেল।
জামি কড়াৎ-কড়াৎ করে হাড় ফুটিয়ে কাজে লেগে গেল। সমস্ত রং মাখামাখি করে কোনটাই লাগাতে বাকি রাখল না। লম্বাটে কি যেন একটা আঁকছে। জিনিসটা কি কল্লোল ঠিক ধরতে পারছে না, ভয়ে ভয়ে জানতে চাইল, ‘স্যার, জিনিসটা কি?’
‘ডিপ শিট, ভোন্ট গ্রিন।’
ক্যানভাসের অবয়বটা ক্রমশ লম্বা হতে থাকল। কল্লোল নিঃশব্দে হাসল, ক্যানভাসে আটবে তো! বিশু চা নিয়ে ঢুকল, দুপদাপ পা ফেলে। তাচ্ছিল্য করে বলল, ‘শেষ হয়েছে?
‘হুঁ, এই দেখ।’
‘জিনিসটা কি?”
জামি চা’র কাপ টেনে নিয়ে বলল, ‘তোর সার্টিফিকেটটা কি আমারটার মতই জাল!’
‘কচকচানি বাদ দিয়ে বল এইটা কি আবর্জনা?’
‘কদু।’
‘ক্কি-কি!’
‘লাউ রে বেটা, লাউ।’
কল্লোল আয়েশ করে চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, ‘জামি নিচে লিখে দে, লাউ । অনেকে রকেট ভেবে বসতে পারে।’
চলে আসার সময় বিশু রক্তচক্ষু মেলে বলল, ‘তোর এই নোংরা মোজাটা ফেলে যাচ্ছিস কি ভেবে!’
‘মাই গড, তোকে বলিনি। প্রদর্শনীতে দিয়ে দিস, তোর নাম লিখে। তোলপাড় পড়ে যাবে। আনন্দের চোটে সবাই বিশুর মুখে, হা হা হা। ’
সহায়ক লিংক:
১. তিতলি তুমিও: http://tinyurl.com/3y93om8
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Monday, September 20, 2010
আমার আকাশটা নিয়ে নাও, বন্ধু
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
1 comment:
পড়ে খুব মজা পেলাম ।
Post a Comment