অশ্লীলতার ঠিক সংজ্ঞাটা আমি জানি না [১]। আমার কাছে যেটা মনে হয় এর সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেক রকম। আমাদের দেশে টাট্টিখানা হালের ওয়শরুমের দরোজা নাই এটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। কোন জেনারেলকে যদি কেউ দেখে ফেলে উবু হয়ে জরুরী কাজটা সারছেন ওই জেনারেলের জেনারেলগিরি হয়তো যাবে না কিন্তু সৈনিক তাঁর কমান্ড কতটা গ্রহন করতে পারবেন এটা গবেষণার বিষয়। কে জানে, হয়তো ওই সৈনিক জরুরি মুহূর্তে গুলি ছোঁড়ার পূর্বে ওই দৃশ্য কল্পনা করে হাসতে হাসতে বুকের বাম পাশের বদলে গুলিটা গিয়ে বিঁধবে হয়ত টার্গেটের ফেলে যাওয়া জুতায়!
কিন্তু এই গ্রহেরই অনেক দেশে ওয়শরুম ওরফে টাট্টিখানায় দরোজার বালাই নাই। যার খুশি কাজকাম সারছে, এই নিয়ে বাড়তি কারও কোন কৌতূহলও নাই। কে জেনারেল, কে ফকির উঁকি মেরে এটা দেখতেও এদের বড়ো আলস্য।
এখন এটা কার দৃষ্টিতে শ্লীল, কোনটা অশ্লীল এই কুতর্ক চলতে থাকুক; অন্য প্রসঙ্গে যাই।
পাজেরো শব্দটা এখন আমার কাছে একটা অশ্লীল শব্দ মনে হয়। আমাদের দেশে মটরসাইকেল বলতেই আমরা যেমন হন্ডা বুঝি তেমনি যাদের পশ্চাদদেশ নরোম তাদের কাছে গাড়ি মানেই পাজেরো। এরা অবশ্য গাড়ি বলেন না বলেন জীপ- জীপ যে একটা ব্রান্ড এই নিয়ে এদের সঙ্গে কস্তাকস্তিতে যাই না। নব্য ধনী থেকে শুরু করে আমাদের দেশের গামলা (টাইপিং মিসটেক এখানে পড়তে হবে আমলা) কেউ বাদ থাকেন না। পাজেরো ব্যতীত এঁরা হাঁটতেই পারেন না (এখানেও খানিকটা ভুল হলো, হাঁটতেই পারেন না এটা না হয়ে হবে, পা ফাঁক করতে পারেন না)।
এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ। প্রথম আলোর (১৩ আগস্ট ২০১০) সঙ্গে নৌপরিবহণমন্ত্রীর পিএস সোহরাব হোসেন চমৎকার একটা কথা বলেছেন, "মন্ত্রীর পিএসরা গাড়ি ব্যবহার করেন, রাস্তায় হেঁটে বেড়ান না। এর আগে যারা ছিলেন তারাও এই গাড়ি (পাজেরো) ব্যবহার করেছেন। ...শুধু যে আমি এতো দামি গাড়ি ব্যবহার করছি, তা নয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের পিএস-এপিএস সবাই দামি গাড়ি ব্যবহার করছেন।"
কেবল তিনি পাজেরো (একেকটার দাম ৫০ লক্ষ টাকা। কোন শালা বলে, আমরা দরিদ্র দেশ। হাতের নাগালে পেলে থাপড়াইয়া কানপট্টি ফাটিয়ে ফেলতাম) ব্যবহারই করছেন না পারিবারিক গাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন। ছুটির দিনেও বেদম হাঁকাচ্ছেন। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বন্দরের আরও চারজন, এঁরাও পাজেরো হাঁকাচ্ছেন অথচ এগুলো একটাও এঁদের জন্য কেনা হয়নি এবং এদের প্রত্যেকের জন্যই গাড়ি বরাদ্দ ছিল।
যাদের জন্য এই পাজেরো কেনা হয়েছে তাঁরা কাজ চালাচ্ছেন ভাড়া গাড়িতে। এদের মধ্যে একটা গাড়ি কেনা হয়েছিল ভ্রাম্যমান আদালতের প্রয়োজনে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে আরও চমৎকার কথা বলেন, "এটা বন্দরের রেওয়াজ...।"
আচ্ছা, সোহরাব হোসেন কি অন্যায় কিছু বলেছেন? আমি তা মনে করি না। এঁরা এটা শিখেছেন আমরা মানে জনগণের কাছ থেকে। জনগণ মানেই হচ্ছেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি। পিএস সোহরাব হোসেন কি বলেছেন? "...এর আগে যিনি ছিলেন..."। ভুল বলেছেন?
এটা তিনি শিখেছেন আমাদের রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে। যেমন আমাদের রাজনীতিবিদগণ যেমনটা বলেন, এর আগে যিনি করেছিলেন। পূর্বের লোকজনদের শিক্ষা দেন [২], একে একে স্থাপনাগুলোর নাম পরিবর্তন করতে থাকেন। আবার তাঁকে শিক্ষা দেবেন আরেকজন এসে। এদের এই খেলাটা বুঝি অন্যরা শিখবেন না? সহজ হিসাব, তমুক এটা করেছে বলে অমুকও এটা করবে, এখানে ন্যায় অন্যায়ের প্রশ্ন আসছে কেন?
চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ভুলটা কি বললেন, শুনি? রেওয়াজ কি চালু থাকতে নেই? এমন কত রেওয়াজই তো চালু আছে। শেখ হাসিনাকে একজন এক কোটি টাকা দামের গাড়ি উপহার দিয়ে দেন, খালেদা জিয়াকে আস্ত একটা বাড়ি! আহা, এরকম উপহার নেয়ার রেওয়াজ চালু আছে তো। এঁরা হচ্ছেন এই দেশের চালিকাশক্তি, গোটা দেশ ঘুরপাক খাচ্ছে এঁদেরকে ঘিরে। এদের দেখে দেখে সোহরাব হোসেন-নজরুল ইসলামরা শিখবেন, তাঁদের দেখাদেখি অন্যরা। অন্যদের দেখে শিখব আমরা। এটা চলতেই থাকবে। শেখার কোন শেষ নেই!
সহায়ক লিংক:
১. অশ্লীলতার সংজ্ঞা: http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_22.html
২. রেওয়াজ: http://www.ali-mahmed.com/2010/08/blog-post_11.html
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Friday, August 13, 2010
শেখার কোন শেষ নেই
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment