কত কিছু দেখার বাকী রয়ে গেছে- 'মেঘে মেঘে বেলা বয়ে যায়'। কখনও সুযোগ এলেও আমি হাঁই তুলে বলি, দেখি। আমার এই দেখাদেখি আর শেষ হয় না!
অবশ্য পুরনো স্থাপনা আমাকে খুব টানে, কেন? এটার বিস্তারিত বলতে গেলে মূল প্রসঙ্গ থেকে সরে যাব। আমি নিজেও থাকি প্রায় ১০০ বছর পুরনো এক বাড়িতে, ব্রিটিশদের বানানো একটা স্থাপনা, এই বাড়িতে কারা কারা যেন ভূত দেখেছেন, আমি দেখিনি। ভূতের প্রতি আমার কোন আগ্রহ নাই, মহিলা ভূত হলে আগ্রহ থাকত কিনা এই কুতর্কে এখন যাই না। [১]
তো, কোন দিন না এই ভূতেরবাড়ি ধসে পড়লে, পত্রিকায় আমার ছবি আসলে মরে গিয়েও কম অবাক হব না, একজন ব্লগারের অপমৃত্যু।
তাজমহলের সামনে যখন দাঁড়িয়েছিলাম তখন আমার সঙ্গের মানুষটা পারলে এককোপে আমার কল্লা নামিয়ে ফেলেন। তাজ দেখে কেন আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি না, কেন আমি এটার সামনে দাঁড়িয়ে ছবি উঠাচ্ছি না এই নিয়ে তাঁর আক্ষেপের শেষ ছিল না।
তিনি অনল বর্ষন করতে লাগলেন, এই পৃথিবীতে দু-ধরনের লোক আছে- একদল তাজ দেখেছে, অন্য দল দেখেনি। আমি নাকি বড়ো বিচিত্র একজন মানুষ, কোন দলেই আমাকে ফেলা যাচ্ছে না। দেখিনি এটাও বলা যাচ্ছে না আবার দেখেছি এটা বললেও চলছে না, তাজ দেখার প্রকৃত উচ্ছ্বাস কই, ফটাফট ছবি উঠানো কই!
তিনি বললেন, তুমি যে একজন মানসিক রোগি এটা কি তুমি জানো?
আমি ঘুরিয়ে উত্তর দিয়েছিলাম, একজনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, 'আর য়্যু কম্যুনিস্ট'? তার উত্তর ছিল, 'নো, আয়্যাম নরমাল'।
এখন তোমার কারণে আমি নিজেকে নরমারও বলতে পারছি না। কী আর করা, কপাল! দেখি ফিরে কোন একজন মনোচিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলব।
অনেকে এটা বলার কারণে আমাকে চাবকাবার জন্য চাবুক হাতে ঘুরে বেড়াবেন কিন্তু আমার কাছে আহসান মঞ্জিল, পানাম নগরী [২] দেখে যে অনুভূতি হয়েছিল, তাজ দেখে এর বাইরে কোন বাড়তি তাগাদা অনুভব করিনি।
পূর্বে এই ভাবনা কাজ করত, আহা, এই গ্রহে কত কিছুই না দেখার বাকী রয়ে গেছে- না দেখে মরে যাওয়ার কোন অর্থ হয় না। এখন অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেছে! এখন আর এই ভাবনাটা কাজ করে না। কেন, এটা মনোচিকিৎসক ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু আমি জানি না কেন যেন এঁরা রোগি হিসাবে আমাকে গুরুত্ব দিতে চান না। কাল রাতেও এমন একজনের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম, তিনি আরও উল্টা...।
মনোচিকিৎসকদের অবশ্য হুমায়ূন আহমেদের মত উঁচু মাপের লেখক বলেন পাগলের ডাক্তার! এইবারের শিলালিপিতে (২৮ মে, ২০১০) তিনি লিখেছেন:
"...সাইকিয়াট্রিস্ট এবং লেখিকা আনোয়ারা সৈয়দ হক আমি ডিজোপেন খাই শুনে আঁতকে উঠে বলছিলেন, এটা তো পাগলের ওষুধ। আপনি পাগলের ওষুধ খাচ্ছেন কেন?
আমি বিনয়ের সঙ্গেই বলেছি, আমি তো পাগলই।...?"
আমি স্তম্ভিত! এটা আমি বিশ্বাস করি না, করতে চাই না কোন বিবেকবান মানুষ খানিকটা অন্য রকম মানুষকে পাগল বলেন, ঘটা করে এটা লিখে আমাদেরকে আবার শেখান।
আমি এটাও বিশ্বাস করতে চাই না, একজন সাইকিয়াট্রিস্ট নিজেকে পাগলের ডাক্তার বলেন! বলে থাকলে তাঁর সনদ কেড়ে নেয়া উচিৎ। অনুমান করি, হুমায়ূন আহমেদ বানিয়ে বানিয়ে বলছেন। এই অভ্যাসটা তাঁর পুরনো।[৩]
যাগ গে, হুমায়ূন আহমেদ একজন দুঁদে লেখক, তিনি আষাঢ়ে গল্প 'আমার নিজের চোককে দেখলাম' বলে আমাদেরকে আষাঢ়ের বৃষ্টিতে গোসল করালে আমাদের না ভিজে উপায় কী! হুমায়ূন আহমেদ বলে কথা!
আমার নড়বড়ে বাসাটার ছোট্ট সিড়িতে বসে থাকার যে সুখ তা অন্যত্র কোথায়। মাথার উপর দিয়ে যখন অতি দ্রুত যান উড়ে যায় [৪] তখন আমার মাথায় এই ভাবনা খেলা করে, আচ্ছা, আস্ত একটা ভিমরুলের বাসা যোগাড় করার উপায় কি [৫]?
আমি বুকে হাত দিয়ে এটা বলতে পারব না, কখনো কখনো কি এমনটা মনে হয়নি, এই সব আমি কি করছি [০]? আমি আসলে কি হতে চেয়েছিলাম...[৬]। কেন আমার দ্রুত রূপান্তর হয় না [৭]?
এই গ্রহের চমৎকার সব দৃশ্য দেখার জন্য, বুদ্ধিমান মানুষরা প্রতিবন্ধকতা সৃস্টির উদ্দেশ্যে কতই না উপায় আবিষ্কার করে রেখেছে! বুদ্ধিমান মানুষরা সব সময় সফল হয় কী!
অন্য একটা পোস্টে ছবিটা দেয়ার সময় এতোটা খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে দেখা হয়নি [৮]। এখন এই ছবিটা দেখার পর মনে হচ্ছে, পৃথিবীর অন্য সব চমৎকার সব দৃশ্য না দেখে মরে গেলেও আজ থেকে আমার হাহাকার করার কিছু নাই।
ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান [৯], "রানী" নামের এই মেয়েটি নাকি হাসে না এমনটাই বলেছিল তার পরিবারের লোকজন। মিথ্যা-মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা! কী চমৎকার করেই না হাসে মেয়েটা! হাসিটার তুলনা কিসের সঙ্গে হয় আমি জানি না।
এর জন্য কোন পাসপোর্ট লাগে না, ভিসা লাগে না; কেউ রে রে করে তেড়ে আসবে না।
ভাল লেখক হয়তো-বা মনের মাধুরী মিশিয়ে লম্বা লম্বা কাহিনী লিখতে পারতেন। আমার কাছে কেবল মনে হচ্ছে, অন্য ভুবনের এমন কিছু চমৎকার দৃশ্য দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় বেঁচে থাকা যেতে পারে! মন্দ হয় না।
তাতে ২০০৯-এর মতোই [১০] চলে যাক না ২০১০...১১...১২...।
*স্বপ্ন: http://www.ali-mahmed.com/search/label/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%A8
সহায়ক লিংক:
০. একজন ব্যর্থ পুরুষ: http://www.ali-mahmed.com/2009/09/blog-post_12.html
১. ভূতের বাড়ি: http://www.ali-mahmed.com/2009/11/blog-post_24.html
২. ওড়নাসমগ্র: http://www.ali-mahmed.com/2010/02/blog-post_18.html
৩. হুমায়ূন স্যারের নাটক: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_2278.html
৪. মার অদেখা সন্তান: http://www.ali-mahmed.com/2010/02/blog-post_10.html
৫. খুনের দায় http://www.ali-mahmed.com/2009/11/blog-post_10.html
৬. পানাম নগর: http://www.ali-mahmed.com/2010/01/blog-post_10.html
৭. রূপান্তর: http://www.ali-mahmed.com/2009/11/blog-post_1172.html
৮. স্বপ্ন দুই: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_25.html
৯. ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post.html
১১. জিরো: http://www.ali-mahmed.com/2009/07/blog-post_28.html
১০. ২০০৯: সালতামামি: http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_31.html
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Sunday, May 30, 2010
নো পাসপোর্ট-নো ভিসা-নো ব্যারিআর
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
4 comments:
ভালো লাগলো...But আপনি কি বোঝাতে চাইছেন তা বুঝতে পারছি না। আমি সুন্দর সুন্দর কথা গুলো বুঝি না।
তবে আপনার লেখা আমার খারাপ লাগে না। বেশ ভালো লাগে।
JeweL ,
"আমি সুন্দর সুন্দর কথা গুলো বুঝি না।"
:)। আপনার এই কথাটাও সুন্দর। সত্যি বলছি।
আমার কিছু লেখা বিশেষ কিছু মানুষদের জন্য। আমার একটা স্বপ্নের কারখানা আছে। কিছু মানুষ আছেন যারা এই কারখানায় রসদ যোগান দেন।
এর বাইরে মোটা দাগে যদি বলি, এখানে যে মেয়েটির ছবি, এ হচ্ছে ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান- কথা বলতে পারে না, কানে শুনতে পায় না। কখনো হাসে না।
যেদিন আমি এর হাসি দেখলাম, আমার মনে হলো, এই গ্রহে এরচেয়ে চমৎকার দৃশ্য আর নাই!
যে দৃশ্য দেখার জন্য পাসপোর্ট লাগে না, ভিসা লাগে না, দৌড়ঝাপ করতে হয় না, বিশেষ কোন প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না...।
But, সবাই এটা দেখতে পারে না।
আমি এক বার দেখেছিলাম। এক্ টা পথ শিশুর গালে আলপনা আকিয়ে দিয়েছিলাম পহেলা বৈশাখে। that's a great feelings.....
Post a Comment