Search

Saturday, April 3, 2010

হুমায়ূন আহমেদ, আপনি ক্ষমতার অপব্যবহার করলেন

হুমায়ুন আহমেদ ইমদাদুল হক মিলনের একটা লেখার সূত্র ধরে লিখেছিলেন: হুমায়ূন আহমেদ ২৬ মার্চ, ২০১০-এ 'ফাউনটেনপেন'-এ লিখেছিলেন, "নিজের প্রশংসা নিজে করার সবচেয়ে খারাপ উদাহরণ ইমদাদুল হক মিলন। গত বইমেলা বিষয়ে তার একটা লেখা কালের কন্ঠের সাহিত্য পাতায় ছাপা হয়েছে। সে লিখেছে...তখন আমার একটা বই বাংলা একাডেমী বেস্ট সেলার ঘোষণা করেছে। প্রকাশক চাহিদামতো বই জোগান দিতে পারছে না। বইটির জন্য বইমেলার অনেক জায়গায় কাটাকাটি মারামারি হচ্ছে...।"

এই নিয়ে আমি নিজেও একটা পোস্ট দিয়েছিলাম: ইমদাদুল হক মিলন, একজন ঢোলবাজ
মিলনের ওই লেখাটা আমার কাছেও বিচ্ছিরি লেগেছিল। হুমায়ূন আহমেদ ফাইনটেনেপেনে এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লেখার পর আমার লেখাটা ছিল: "হুমায়ূন আহমেদ সাদাকে সাদা বলেলেন, তবে..."।

এইবার (০২.০৪.১০) হুমায়ূন আহমেদ কালের কন্ঠের ফাউনটেনপেন-এ লিখেছেন, ফাইনটেনপেন লেখাটা তিনি ধারাবাহিকভাবে লিখছেন। গত লেখায় নাকি কিছু অংশ ছাপতে কালের কন্ঠের স্মৃতি বিস্মরণ ঘটেছিল।
তাই এই বিষয়ে কালের কন্ঠ এবারের ফাউনটেনপেনে দুঃখ প্রকাশ করেছে: "গত পর্বের ফাউনটেনপেনে অসাবধানতাবশত তিনটি লাইন বাদ পড়েছিল। কালের কন্ঠের সাহিত্য পাতা মিলন দেখে। আমার ফাউনটেনপেন তার হাত দিয়েই যাবে। আজকের লেখাটা পড়ে তার মুখের ভাব কী রকম হবে কল্পনা করেই মজা পাচ্ছি। হা হা হা।"

মোদ্দা কথা, কালের কন্ঠ জানাচ্ছে,
গতবার অসাবধানতাবশত হুমায়ূন আহমেদের লেখার তিনটি লাইন বাদ পড়েছিল। এটা এইবার উল্লেখ করে পাঠককে জানানো হলো।
কবে থেকে কালের কন্ঠ লেখকদের প্রতি এতোটা দায়িত্বশীল হলো? কবে থেকে?
'কালের কন্ঠ' ছাপার সময় রাসেল পারভেজের অনুমতি ব্যতীত এই লেখাটা আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছিল! এতোটাই পরিবর্তন যে রাসেল পারভেজ ঠান্ডা শ্বাস ফেলে ভাবছিলেন, এই লেখাটা কী আমার?

আসলে কাহিনী এটা না। পাঠক-লেখকের প্রতি দায়িত্ব-ফায়িত্ব কিছু না, এখানে মূল বিষয় হচ্ছেন হুমায়ূন আহমেদ। হুমায়ূন আহমেদ ক্ষমতার ছড়ি উঠিয়েছেন, ব্যস সব ঠান্ডা- অজান্তেই এদের খানিকটা পেশাব বেরিয়ে গেছে!

অবশ্য হুমায়ূন আহমেদের জানা নাই ইমদাদুল হক মিলন কালের কন্ঠের '
শিলালিপি' পাতার দায়িত্বে না, তবে এটা সত্য মিলন কালের কন্ঠের যুগ্ন সম্পাদক।
কিন্তু হুমায়ূন জানেন এই লেখাটা মিলনের হাত দিয়ে যাবে এবং এও জানেন মিলনের ক্ষমতা নাই লেখাটা আটকে দেয়ার। তিনি একজন মানুষের অসহায়ত্ব নিয়ে একটা মজার খেলা খেলেছেন, অসম একটা খেলা! কাজটা হুমায়ূন আহমেদের ইচ্ছাকৃত। আমার কাছে মনে হচ্ছে এমন, ঠান্ডা মাথায় একজন মানুষকে খুব কাছ থেকে ছুঁরি মারা- মানুষটা কেবল চেয়ে চেয়ে দেখতে পারবে; তার কিছুই করার থাকবে না। হুমায়ূন আহমেদ একজন ভানবাজ মানুষ, তিনি তাঁর প্রবল ক্ষমতা সম্বন্ধে পুরোপুরি অবগত-সচেতন কিন্তু সর্বদা এমন ভান করেন এটা তিনি জানেন না।

এটা জানার জন্য রকেটবিজ্ঞানী প্রয়োজন নেই, আবেদ খানও হতে হয় না, যদি বলা হয় চুজ হুমায়ূন অর মিলন, বেছে নাও। চোখ বন্ধ করে কালের কন্ঠ হুমায়ূন আহমেদকে বেছে নেবে। এক সেকেন্ডও লাগবে না মিলনকে চাকরি থেকে বের করে দিতে।

আমি খানিকটা আঁচ করতে পারি মিলনের কষ্টটা। অনেকটা এমন, নিজের গলায় ছুরি চালাবার জন্য নিজেই শান দিচ্ছেন, ছুঁরিটা একজন চালাচ্ছে এটা কেবল চেয়ে চেয়ে দেখা। গরুর গোশত খাওয়া আর চোখের সামনে জবাইপর্ব দেখে খাওয়া দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে। এবং এই পর্যায়ে একজন মানুষকে নিয়ে যেতে প্রভূত ক্ষমতাবান হুমায়ূন বাধ্য করেছেন। তাঁর বিপুল ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।

4 comments:

Sayem Choudhury said...

হুমায়ুন আহমেদ আসলেই একজন ভানবাজ প্রকৃতির মানুষ সে ব্যাপারে আমার কোনই সন্দেহ নেই।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

তা আর বলতে :) @Sayem Choudhury

নিশম said...

ফালতু কথা বলার আর যায়গা পান না? হুমায়ুন আহ্মেদ স্পেদ কে স্পেদই বলেন। মন রক্ষার জন্য আপনাদের মতো কথা বানিয়ে বলেন না।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

"...হুমায়ুন আহ্মেদ স্পেদ কে স্পেদই বলেন...।"
আগে লিখতে শিখুন, তারপর ভাবতে। যখন ভাবা শিখে যাবেন তখন এটাও শিখে যাবেন, এই লেখায় আমি আসলে কি বলতে চেয়েছি? এটাও ভেবে ভেবে বের করে ফেলতে পারবেন, হুমায়ূন আহমেদ কি লিখেছিলেন, আমি কি লিখেছি- কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক। @Sadman Sowmik