Search

Monday, December 21, 2009

অপার সৌন্দর্য এবং একপেট আবর্জনা!

বাড়ির কাছেই ছোট্ট একটা রেলের পুল। আগেও দেখেছি কিন্তু আজ দেখে হাঁ করে তাকিয়ে রইলাম। কী এক অপরূপ দৃশ্য- মনে হয় এটা এ গ্রহের কোন অংশ না, হলেও অপরিচিত কোন এক স্থানের, অন্য ভুবনের! কী বিপুল ফেনা! দেখো দিকি ঢং, এই ফেনার উপর আবার সূর্যের আলো পড়ে আলোর খেলা, ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। ইচ্ছা করে এই শ্বেত-শুভ্র ফেনায় গা ভাসিয়ে দেই। অন্তত পেঁজা-পেঁজা এই শুভ্র ফেনা গায়ে মেখে শুয়ে থাকি।

এই অপার সৌন্দর্যের পেছনের কথা জেনে গা শিউরে উঠে। প্রকৃতি এবং মানুষ অনেক কসরত করে শরিরের একপেট আবর্জনা ঢেকে রাখে। নইলে মিস ওয়ার্ল্ড এবং কদাকার জরিনার মধ্যে কোন ফারাক থাকত না।
এই বিপুল ফেনার উৎস হচ্ছে, ভারত থেকে যে পানি বাংলাদেশে নামছে ওই পানির সঙ্গে মেশা বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান,বর্জ্য। যা মানুষের জন্য ভয়াবহ রকম ক্ষতিকর।- ক্ষতিটা কি কি হচ্ছে এটাও আমাদের জানা নাই। আমাদের দেশে কেউ এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে বলে মনে হয় না, ঘামালেও লাভ কী- দাদা বলে কথা!

আমরা দাদাদের দয়ায় বেঁচে আছে। দাদারা তাদের বর্জ্য আমাদের এখানে পাঠিয়ে দেন, সেই বর্জ্য থেকে উৎপন্ন সৌন্দর্যে আমরা কবিতা লিখি।
দাদারা আমাদের এখান থেকে মাছ, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যান, কিন্তু তারা মেয়াদ উত্তীর্ণ সামগ্রী পাঠিয়ে দেন।
তারকাঁটার বেড়া গলে কিছুই এদিক-ওদিক হবার যো নাই ভুলক্রমে একটা গরু চরতে চরতে এদের সীমানায় চলে গেলে, গরুটাকে ফিরিয়ে আনতে যাওয়া মানুষটাকে পাখির মতো গুলি করে মারেন। কিন্তু স্রোতের মত ফেন্সিডিল আসতে কোন সমস্যা নাই। দাদাদের পাঠানো ফেন্সিডিল নামের কফের সিরাপ খেয়ে আমরা ঝিমাই, সাহিত্য রচনা করি। ঝিমুনি কমে এলে ক্ষুর চালাই, মার গলা থেকে হারটা ছিঁড়ে নিয়ে যাই।
দাদা বলে কথা...।

ছবিস্বত্ব: সংরক্ষিত

No comments: