এক ছেলে এক স্কুলছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেছে। মেয়ের বাবা থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ওই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে। বড় সরল একটা ঘটনা। এ তো আকছার হচ্ছে, তেমন অভিনবত্ব নেই।
এই ঘটনাটার পত্রিকার খবর, "এক সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে এক স্কুলছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেছে"।
পত্রিকার খবরে অতিশয়োক্তি থাকবে এ আর বিচিত্র কী!
’শত শত মানুষের সামনে’ এই কথাটায় অতিশয়োক্তি থাকলেও এই ঘটনার সময় অসংখ্য মানুষ উপস্থিত ছিলেন, এটা সত্য।
এই সন্ত্রাসী নামের চ্যাংড়া ছেলেটাকে আমি চিনি। আমি নিজে রোগা-দুবলা মানুষ কিন্তু একে একটা চড় দিলে এর অজান্তেই খানিকটা পেশাব বেরিয়ে যাবে এতে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। পত্রিকার ভাষায়, ’অস্ত্রের মুখে’...। কি ধরনের অস্ত্র এটা উল্লেখ করা হয়নি। আমি নিশ্চিত বড় জোর ক্ষুর হবে। কারণ ইতিপূর্বে ছোটখাটো ছিনতাইয়ে একে ক্ষুর ব্যবহার করতে শুনেছি। অনুমান করি, এখানেও বড় জোর ক্ষুর ছিল।
এই নিয়ে গোটা এলাকা উত্তাল। পুলিশের জোর তৎপরতায় এ ধরা পড়েছে। লোকজন ঘটা করে থানায় গিয়ে কেউ থুতু দিয়ে আসছেন, কেউ কুবাক্য বলে আসছেন। মানববন্ধন হচ্ছে, ফাঁসির জোরালো দাবী উঠছে। সবই উল্লসিত হওয়ার মত ঘটনা!
কিন্তু যে-অসংখ্য মানুষ, যে-সব বীরবর, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশাটা দেখেছেন এদের বিষয়ে কেউ টুঁ শব্দও করছেন না, কেন? কেউ এ প্রশ্ন উত্থাপন করছেন না, ঘটনার সময় এরা কী করছিলেন, সন্ত্রাসী নামের এই ছেলেটা তার মিশন শেষ করে পালালো কেমন করে! কই, এমন তো হয়নি, জনতা তাকে ধাওয়া করেছে; সে এবং তার সঙ্গিরা বোমা ফাটাতে ফাটাতে পালিয়ে গেছে। বা একা ছেলেটাই ককটেল ছুঁড়তে ছুড়তে পালিয়ে গেল!
নিয়তির উপর আমি বড় রাগ, কেন আমি ওখানে ছিলাম না? আমি নিশ্চিত, থাকলে, এ ওখান থেকে পালাতে পারত না। আমি জানি, অনেকের অট্টহাসিতে মনিটরের পর্দা কেঁপে উঠছে। এরা পাগলের মত হাসতে হাসতে বলছেন, মিয়া, নিরাপদ দূরত্বে থেকে লম্বা লম্বা বাতচিত করা আর কী-বোর্ডে ঝড় তোলা সোজা কিন্তু ব্যাটলফিল্ডে থেকে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমার লেখালেখির কসম, লাঞ্ছিত করা দূরের কথা, পালাতেই পারত না। পরে আমার কি হতো এখনকার ভাবাভাবি থাকুক ওসময় অন্য কোন ভাবনাই আমার মাথায় খেলা করত না। জাস্ট একে রুখতে হবে, দ্যাটস অল। কি হতো বড় জোর? আমার শরীরে ক্ষুরের একটা পোঁচ, তো? প্রাণ এতো সস্তা না, বললাম আর দুম করে বেরিয়ে গেল। না-হয় এই সস্তা প্রাণটা গেলই কিন্তু আমার পরে অন্য কোথাও আরও দশজন রুখে দাঁড়াত।
ওখানে উপস্থিত বিচিহীন নপুংসক মানুষগুলো প্রকারান্তরে আমার বড়ো ক্ষতি করে দিলেন। যখন এ ঘটনা শুনি, এর পর থেকেই কেবল মনে হচ্ছে, এরা আমাকেও আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নপুংসক বানিয়ে দিয়েছেন; এ অধিকার এদের ছিল না। যেমনটা তীব্র ইচ্ছার বিরুদ্ধে এই কবিকে নপুংসক বানানো হয়েছিল। কবি আজীবন এই সীমাহীন বেদনা বুকে লালন করেছেন। কাছাকাছি বেদনাটা আমারও হচ্ছে। কষ্ট হচ্ছে, বড় কষ্ট...।
ছবিঋণ: যুগান্তর
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Tuesday, October 20, 2009
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment