আজকাল ভাবছি পত্রিকা পড়া বন্ধ করে দেব। আমার মস্তিষ্ক পত্রিকার সব খবর গ্রহন করার জন্য তৈরি হয়নি! যখন পড়ি, এতিম ছোট-ছোট ২৬টা বাচ্চা তাদের লালনকারী মহিলার কাছে অনবরত বকে যায়, 'মা আমাদের এই ইদে জামা দিবা না'? মহিলা এই বাচ্চাদের কাছ থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়ান। কী তীব্র এই বাচ্চাদের চোখ- কার সাধ্যি এই বাচ্চাদের চোখে চোখ রাখে?
যখন পড়ি, ইদের একটা জামার জন্য অভিমানি বালিকা আত্মহত্যা করেছে। নিমিষেই আমার গোটা ভুবনটা এলোমেলো হয়ে যায়। তখন নিজেকে বড়ো তুচ্ছ, দীন-হীন মনে হয়। আসলে নেংটি পরে ঘুরে বেড়ানো কোন কাজের কাজ না। নেংটি পরা মানুষ নিজেই একটা বোঝা, ও আর বোঝা টানবে কী! 'দারিদ্রতা মোরে মহান করে' এটা কোন শালা বলেছে, কোন শালা? একে হাতের নাগালে পেলে স্রেফ খুন করে ফেলতাম। ভাগ্যিস, আমার কাছে ব্রক্ষাস্ত্র নাই নইলে গোটা গ্রহটাকে উড়িয়ে দিতাম। পরে হয়তো মনখারাপ-করা শ্বাস ফেলতাম। লাভ কী, একবার ছুঁড়ে ব্রক্ষাস্ত্র তো আর ফিরিয়ে নেয়া যায় না!
সব কেমন জট পাকিয়ে যায়। অদেখা ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসে। সুতীব্র ইচ্ছা, সুদীর্ঘ একটা শীতনিদ্রার বড়ো প্রয়োজন। এই শীতনিদ্রা শেষ হতেই হবে এমন দিব্যি কে দিয়েছে?
ইদ-পুজা নামের উৎসবগুলোকে আমি আলগা চোখে দেখি। অজান্তেই মুখখানা ঢলঢলে-কমনীয় হয়ে উঠে। কেবল কী স্মৃতি কাতরতা, উঁহু? আমার কেবলই মনে হয়, এইসব উৎসব আছে বলেই এখনও আপ্রাণ চেষ্টা করেও মানুষ পুরোপুরি রোবট হতে পারছে না- তীব্র অনিচ্ছায়ও শেকড় ছেটে দিতে পারছে না। আমরা তো আর অন্য দেশের লোকজনের মত শেকড়হীন মানুষ না। আমরা যে নারকেল গাছ- শেকড় ছড়িয়ে গেছে অনেক দূর। শেকড়টা 'দেশের বাড়ি' নামের এক ছায়া-ছায়া ভুবনে; অজস্র স্মৃতি, মাটির সোঁদা গন্ধ। (ভাগ্যিস, এটা নিয়ে এখনও ব্যবসাটা জমে উঠেনি!) যেখানে অনাদরে অবহেলায় পড়ে থাকে স্বজন, দৌড়ে পিছিয়ে যাওয়া মানুষগুলো। ওখানে ফিরে যাওয়ার কী তীব্র আকুলতা! আহারে, যান্ত্রিক মানুষ, চাইলেই কী আর ফিরে যেতে পারে। একটা উছিসা তো প্রয়োজন। উৎসব-পার্বন সেই সুযোগটা করে দেয়। খানিকটা এ ভাবনা, সামনে বছর হয়তো আর ফিরতে পারব না। মন্দ কী- মন্দের ভালো।
কিন্তু কালে কালে বুদ্ধিমান মানুষ এটাকে কদর্যতায় পরিণত করেছে, এই দেশে তখন সবচেয়ে বেশি দু-নম্বুরি হয়। নির্বোধরা এদের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠে। রেস জেতা নিয়ে কথা, উটের পিঠে-গলায় শিশু ঝুলিয়ে দাও, শিশু মরল কী বাঁচল তাতে কী আসে যায়।
প্রায়শ বেসুমার টাকাওয়ালা হতে ইচ্ছা করে। কে জানে, তখন কী বদলে যেতাম? একটা মানুষ কতটা বদলায়? আমূল বদলে যায় কী? জানি না। তবুও স্বপ্নগুলো আমায় ছাড়িয়ে যায়। স্বপ্ন দেখতে তো দোষ নাই- আফসোস, আজকাল আমরা স্বপ্ন দেখাই ভুলে গেছি।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Wednesday, September 16, 2009
নেংটি পরা মানুষ আর নেংটি ইঁদুর, পার্থক্য কী!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
3 comments:
ভাই, আসলেই শীতনিদ্রার খুব প্রয়োজন............
***** শেকড়টা 'দেশের বাড়ি' নামের এক ছায়া-ছায়া ভুবনে; অজস্র স্মৃতি, মাটির সোঁদা গন্ধ। (ভাগ্যিস, এটা নিয়ে এখনও ব্যবসাটা জমে উঠেনি!) যেখানে অনাদরে অবহেলায় পড়ে থাকে স্বজন, দৌড়ে পিছিয়ে যাওয়া মানুষগুলো।******
কে বলল ব্যবসা শুরু হয়নি। গ্রামীণ ফোন শুরু করে দিয়েছে 'দেশের বাড়ি' ফেরা নিয়ে ব্যবসা।
(ভাগ্যিস, এটা নিয়ে এখনও ব্যবসাটা জমে উঠেনি!)এই লাইনটায় একটা হাইপার-লিংক ছিল http://www.ali-mahmed.com/2009/06/blog-post.html
আসলে আমি ওরকম একটা ব্যবসার কথা বোঝাতে চেয়েছিলাম।
আর আপনি গ্রামীণ ফোনের যে ব্যবসার প্রসঙ্গটা বললেন এমন তো হচ্ছেই যেটা আমি উল্লেখ করেছিলাম এই লাইনে:
"...কালে কালে বুদ্ধিমান মানুষ এটাকে কদর্যতায় পরিণত করেছে..."
হায়, এই দেশের জন্য এখন সবচেয়ে বেশি মায়া বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর। হালের সেল-ফোন কোম্পানিগুলোর। দেশের জন্য এদের কান্নায় কখন যে বন্যা হয়ে যায় এই নিয়ে আমি ভয়ে ভয়ে থাকি!
Post a Comment