ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ। চীফ কর্নেল মনজুরুর রহমান। এই কলেজের অসম্ভব প্রিয় একটি মুখ।
যুদ্ধের সময় ক্যাডেট কলেজ থেকে সবাই পালিয়ে যান কিন্তু কর্নেল রহমান কয়েকজনের সঙ্গে থেকে যান। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার পাশাপাশি তিল তিল করে গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যেতে তাঁর মন সায় দিচ্ছিল না।
পাক আর্মি ঘিরে ফেলে একদিন এই কলেজ। নেতৃত্ব দিচ্ছিল ১২ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন ইকবাল। সঙ্গে ঝিনাইদহের অল্প কয়েকজন স্থানীয় মানুষ। টমেটো নামের একজন মিথ্যা অভিযোগ করে, কর্নেল রহমান তার পরিবারের লোকজনকে মেরে ফেলেছেন।
পাক আর্মিরা একেক করে মারা শুরু করে।
পাক আর্মির ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কর্নেল রহমানের কথা কাটাকাটি হয়। কর্নেল রহমান বলেন, 'আমি একজন সামরিক অফিসার। আমাকে এভাবে মারা অন্যায়। আমার অপরাধের বিচার একমাত্র সামরিক আদালতেই হতে পারে। একজন আর্মি কর্নেল একজন ক্যাপ্টেনের কাছে যে আচরণ পেতে পারে- আমাকে সেটা দেয়া হচ্ছে না কেন'?
কর্নেল রহমানের কোন যুক্তিই এদেরকে প্রভাবিত করলো না। কর্নেল রহমান মৃত্যুর জন্য প্রস্তত হলেন। হাত থেকে খুলে দিলেন ঘড়ি, পকেট থেকে বের করে দিলেন কলেজের চাবি, যা ছিল তাঁর কাছে। একজন সিপাই তাঁর ঘড়ি উঠিয়ে নিজের হাতে দিয়ে দেখলো কেমন মানাচ্ছে তাকে আর হ্যা হ্যা করে হাসতে থাকলো।
কর্নেল রহমান প্রাণ ভিক্ষা চাইতে রাজী হলেন না। শুধু ৫ মিনিট সময় চাইলেন।
ধীর পায়ে এগিয়ে গেলেন নিজ হাতে লাগানো গোলাপ গাছটার দিকে। হাঁটু গেড়ে বসলেন। কি যেন বিড়বিড় করে বলছিলেন। দূর থেকে শুধু ঠোঁট নড়া দেখা গেল। তারপর হাত তুলে মোনাজাত করলেন। মোনাজাত শেষ করে বললেন, আয়্যাম রেডী, তাকিয়ে রইলেন ক্যাপ্টেনের চোখে চোখ রেখে।
ক্যাপ্টেন ইকবাল পরপর ৩টা গুলি করলো।
লুটিয়ে পড়লেন কর্নেল রহমান। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে প্রায় শোনা যায় না একটা স্বর শোনা গিয়েছিল, 'মা আয়েশা, তোকে দেখে যেতে পারলাম না'।
(সূত্র: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, অষ্টম খন্ড, পৃষ্টা: ৬০৫-৬০৮)
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Friday, June 29, 2007
৭১ এ হত্যা, চীফ কর্নেল রহমান
বিভাগ
১৯৭১: প্রসব বেদনা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
3 comments:
Dear Ali Mahmed Bhai,I am an ex-cadet from JCC.It felt great to re-read the legend of Col.Rahman in your Blog.I have visited his grave several times to pay my homage.Thank you for your wonderful blog
শহীদ কর্নেল রহমান আমার কলেজেরও অধ্যক্ষ ছিলেন। গত ২০০৭এ কলেজের প্রাক্তন ছাত্রদের পক্ষ থেকে "গুরু সম্মাননা" অনুস্ঠানে উনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন সরুপ উনার স্ত্রীর সাথে সম্মাননা তুলে দেয়া হয় যদিও একজন শহীদ হিসেবে আরো অনেক কিছুই উনার প্রাপ্য কিন্তু পান নাই।
Anonymous...I have visited his grave several times to pay my homage.
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আবার যখন আপনি তাঁর সমাধিস্থলে যাবেন, আমার পক্ষ থেকে তাঁকে শেষ-শ্রদ্ধাটুকু জানাবেন, প্লিজ।
Post a Comment